পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের আটটি জাতীয় মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ৩ হাজার ৮১৩ কিলোমিটার। এসব মহাসড়কে ত্রুটিপূর্ণ নকশায় অসংখ্য ফিডার রোড যুক্ত হয়েছে। সোজা হয়ে ওঠা এসব সড়ককে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। দেরিতে হলেও বিষয়টি অনুধাবন করা শুরু করেছে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা। মহাসড়কের সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণভাবে যুক্ত হওয়া এসব ফিডার রোড থেকে মুক্তির উপায় খুঁজতে শুরু করেছেন তারা। বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রামীণ সড়কগুলো মহাসড়কের সঙ্গে ‘টি’ বা ‘ওয়াই’ ডিজাইনে যুক্ত করা হয়ে থাকে। এতে কোনো যানবাহন যখন ফিডার রোড থেকে মহাসড়কে উঠবে, তখন সেটির সঙ্গে মহাসড়কে চলা যানবাহনের সংঘর্ষ বেঁধে যাওয়ার একটা শঙ্কা থাকে। সাধারণত দেখা যায়, ফিডার রোড আর মহাসড়কের সংযোগস্থলে হাট-বাজার গড়ে ওঠে। এসব হাট-বাজার দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে দেয়। এজন্য তাৎক্ষণিক সমাধান হিসেবে সংযোগ পয়েন্টগুলোয় গতিরোধক দিয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানোর একটা ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তবে এটা স্থায়ী সমাধান নয়।
দেশের ব্যস্ততম মহাসড়ক ঢাকা-আরিচা। দ্রুতগামী যানের চাপে সড়কটি হেঁটে পার হওয়াই কঠিন। এসবের মধ্যেই বিভিন্ন ফিডার রোড থেকে মহাসড়কে প্রবেশ করে যানবাহন। কোনোটির গতিপথ বামে, কোনোটির ডানে। একটু এদিক-সেদিক হলেই সংঘর্ষ বেঁধে যাওয়ার প্রচন্ড ঝুঁকি মহাসড়কের দ্রুতগামী যানবাহনের সঙ্গে।
ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কটি গেছে ফেনীর লেমুয়া বাজারের ওপর দিয়ে। সিলোনিয়া নদীর তীরে গড়ে ওঠা এ বাজারের পাশেই তিনটি ছোট সড়ক (ফিডার রোড), যেগুলো মিলেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। একেবারে সোজাসুজি মিলিয়ে দেয়ায় এসব রোড থেকে ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়কে উঠছে যানবাহন। লেমুয়া বাজার এলাকাটি দুর্ঘটনাপ্রবণ। প্রায়ই এখানে দুর্ঘটনা ঘটে। অনেকগুলো কারণের মধ্যে সোজা হয়ে মহাসড়কে প্রবেশ করা ফিডার রোডগুলোকে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী মনে করছেন সড়ক বিশেষজ্ঞরা।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাধীন সড়কগুলোর নকশাসহ আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো দেখভাল করে কেন্দ্রীয় সড়ক গবেষণাগার। গবেষণাগার সূত্রে জানা গেছে, মহাসড়কে কোনো ফিডার রোড যুক্ত করতে হলে সেটিতে অবশ্যই একটা মার্জিন লেন রাখার নিয়ম রয়েছে। এই মার্জিন লেনটির দৈর্ঘ্য হবে ৪০-৫০ মিটার। প্রয়োজনে আরো কম-বেশি হতে পারে। এই মার্জিন লেনকে ‘স্ট্রিপ রোড বলা হয়।
তবে বাংলাদেশে সড়ক-মহাসড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনো নিয়ম মানা হয় না। বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন কোনো ফিডার রোড মেজর রোডে এসে মিলবে- সেই মিলনস্থলের নকশা কেমন হবে তা থিউরিতে থাকলেও বাস্তবে মানা হয় না। এজন্য সরকারকে একটা স্ট্যান্ডার্ড তৈরি করে দিতে হবে। এটা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর করতে পারে, আবার এলজিইডিও পারে। এ সম্পর্কিত মন্ত্রণালয়গুলোও সুস্পষ্ট নীতিমালা করে দিতে পারে যে মহাসড়কে ফিডার রোড সংযুক্ত করতে হলে সংযোগস্থলের নকশা কেমন হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জাতীয় মহাসড়ক অনেক উঁচু করে বানানো হয়, যেন সেটি বন্যায় ডুবে না যায়। ফিডার রোডগুলোর অবস্থান সে তুলনায় অনেক নিচে। এগুলো যখন মহাসড়কের সঙ্গে মিলিয়ে দেয়া হয়, তখন হঠাৎ উঁচু করে দেয়া হয়। এতে ফিডার রোড থেকে মহাসড়কে ওঠার সময় যানবাহনে বাড়তি গতি তুলতে হয়, যা যেকোনো সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ডেকে আনতে পারে।
এদিকে মহাসড়কে ঝুঁকিপূর্ণ ফিডার রোডের বিকল্প নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এজন্য নতুন করে যেসব চার লেনের মহাসড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে, সেগুলোতে ধীরগতির যানবাহনের জন্য রাখা হচ্ছে আলাদা লেন। এই আলাদা লেনকেই সবচেয়ে ভালো সমাধান মনে করছেন মহাসড়ক বিভাগ। স¤প্রতি মহাসড়ক বিভাগে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার উপায় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বৈঠক সূত্র জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশের সব মহাসড়ক পর্যায়ক্রমে ছয় লেনে উন্নীত করা হবে। এর মধ্যে দুই পাশে দুটি লেন থাকবে ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য। ফিডার রোডগুলো প্রথমে ধীরগতির লেনের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। মূল সড়কে কোনো ধীরগতির যানবাহন উঠতে পারবে না। অন্য রোড থেকে আসা যানবাহনও প্রথমে এই লেনে উঠবে। তারপর প্রয়োজনে সেগুলো কিছু দূর এগিয়ে মূল মহাসড়কে উঠতে পারবে। এজন্য কিছু নির্ধারিত পয়েন্ট থাকবে। এই পয়েন্টগুলো দিয়ে ফিডার রোড বা অন্য রোড থেকে আসা বড় যানবাহন মহাসড়কে উঠতে পারবে।
সূত্র জানায়, এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বিআরটিএতে অনুষ্ঠিত জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভায়ও মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ফিডার রোড নিয়ে আলোচনা হয়। ওই সভায় ফিডার রোডগুলোকে সোজাসুজি নয়, কিছু বাঁকিয়ে (কার্ভ) মহাসড়কে যুক্ত করার পক্ষে মত দিয়েছেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রকৌশলীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।