পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজধানীতে চলমান আন্দোলন ও বিশেষ ট্রাফিক সপ্তাহ চলার মধ্যেই সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটে চলেছে। গতকাল ভোরে রাজধানীর মিরপুর থানাধীন কল্যাণপুরে একটি বেপরোয়া তেলবাহী লরির ধাক্কায় প্রাণ যায় এক মাদরাসা শিক্ষকের। নিহত ওই শিক্ষকের নাম আব্দুর রাজ্জাক (৫২)। গতকাল ভোর সোয়া ৪টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এদিকে, গত বুধবার রাতে পৃথক একটি সড়ক দুর্ঘটনায় বেপরোয়া একটি কাভার্ড ভ্যানের চাপায় অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি (৪০) নিহত হয়। দু’জনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সোহারওয়ার্দী ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ।
নগরবাসীর ভাষ্য, পুলিশ সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর চেয়ে মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে মামলা ও জরিমানা করতে বেশি ব্যস্ত। যার কারণে বিশৃঙ্খল সড়ক বিশৃঙ্খলই থেকে যাচ্ছে। মোটরসাইকেল চালকরা বলেন, মামলা ও জরিমানার টাকার একটি অংশ ভাগ হিসেবে পাওয়ায় পুলিশ শৃঙ্খলা ফেরানোর মামলায় আগ্রহী বেশি। এছাড়া ট্রাাফিকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মাঠে দায়িত্বরত ট্রাফিকদের স্থানভেদে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যার মামলা করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। যদিও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বারবার অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে আসছেন।
মিরপুর থানার এসআই মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, গতকাল ভোর সোয়া ৪টার দিকে কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাস্তা পার হচ্ছিলেন রাজ্জাক। এ সময়একটি তেলবাহী লরি তাকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। নিহতের বাড়ি মেহেরপুর সদর উপজেলায়। তিনি স্থানীয় একটি মাদরাসার শিক্ষক ছিলেন। তার সঙ্গে থাকা কাগজপত্র ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করা গেছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, দুর্ঘটনার পর ঘাতক লরিটি পালিয়ে গেছে। চালকসহ লরিটিকে আটকের চেষ্টা করছে পুলিশ। এছাড়া নিহত শিক্ষকের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, রাজধানীর পল্টনে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় অজ্ঞাত পরিচয় (৪০) এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর কাভার্ডভ্যানসহ চালককে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পল্টন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহেদুজ্জামান বলেন, রাস্ত পৌনেব ১০টার দিকে রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি কাভার্ড ভ্যান তাকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। ঘটনার পর স্থানীয়রা কাভার্ড ভ্যান চালককে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করে। এছাড়া নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। পুলিশ জানায়, নিহত ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি। তিনি পল্টনসহ আশপাশের এলাকায় ভাসমান অবস্থায় থাকতেন এবং কাগজ কুড়াতেন বলে স্থানীয়রা পুলিশকে জানিয়েছে।
এদিকে, দেশে চলমান ছাত্র আন্দোলন ও রাজধানী জুরে পরিচালিত ট্রাফিক সপ্তাহের মধ্যে সড়কের প্রাণহানির ঘটনায় জনমনে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। নগরবাসীর ভাষ্য, পুলিশ কেবলমাত্র মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়ির পেছনে ছুটছে। তারা সামান্য ত্রæটিতে এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে বড় বড় মামলা ঠুকে দিচ্ছে। অথচ রাজধানী জুরে চলমান ফিটনেসবিহীন লক্কর-ঝক্কর বাস ও লাইসেন্স ছাড়া অদক্ষ চালকদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। গণ পরিবহনের বিরুদ্ধে যে সব অভিযান ও জরিমানা হচ্ছে তাও সংখ্যায় খুবই নগন্য। ট্রাফিক সপ্তাহ শুরু হওয়ার আগে পড়ে রাজধানীতে পরিচালিত ট্রাফিক পুলিশের অভিযানে মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে বেশি ব্যবস্থা নেওয়ার নজীর দেখা গেছে। অভিযানগুলোতে সব থেকে বেশি জরিমানা করা হয় মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী মোটরসাইকেল চালকরা বলেন, রাজধানীতে রাইড শেয়ারি সার্ভিস চালুর পর পুলিশ মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। সামান্য ত্রুটি পেলেই বড় ও বেশি জরিমানার মামলা ঠুকে দেয়। চালকদের ভাষ্য, উপর থেকে পুলিশের ওপরে মামলা করার চাপ থাকায় এবং আদায়কৃত জরিমানার টাকার ভাগ পাওয়ায় পুলিশ মামলা করতে বেশি আগ্রহ।
গুলিস্তানে মোটরসাইকেল চালক রহমত বলেন, পুলিশ টাকার লোভে শুধু মোটরসাইকেলের পেছনে ছুটছে। যার কারণে সড়কে শৃঙ্খলার পরিবর্তে জনগণের আরও ভোগান্তি হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, গণ পরিবহন মালিক ও চালকরা মাসিক ভিত্তিতে পুলিশকে চাঁদা দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় না। তাদের সব আক্রোশ শুধু মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে প্রত্যেক ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারীকে শাস্তির আওতায় আনা হলে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত বাস্তবায়ন সম্ভব বলে নগরবাসী মনে করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।