পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নিখোঁজ থাকার প্রায় ১৫ মাস পর নিজ বাড়িতে ফিরে এসেছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান। তবে তিনি কোথায় কি অবস্থায় ছিলেন এবং ফিরলেন কিভাবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কিছুই জানা সম্ভব হয়নি। তবে যারা ফিরে এসেছেন তাদের সঙ্গে কি ঘটেছিলো সে ব্যাপারে কেউই মুখ খোলেননি। নিখোঁজের পর দীর্ঘ সময় কোথায় ছিলেন এ বিষয়ে তাদের মুখে কুলুপ এটেছেন। আইন-শৃংখলা বাহিনীর কর্মকর্তা ও সংবাদকর্মীরা গেলেও কোন কথা বলতে রাজি হচ্ছেন না মারুফ জামানের পরিবারের সদস্যরা।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত ৩১০জন গুমের শিকার হয়েছেন৷ তাদের মধ্যে ৩৩ জন ফিরে এসেছেন। সর্বশেষ গত ১৫ মার্চ শুক্রবার রাত ১টার দিকে মারুফ জামান একা একাই তার ধানমন্ডির বাসায় ফিরে আসেন।
মারুফ জামান ফিরে আসার পর পরই তার মেয়ে শবনম জামান ফেসবুক পোস্টে বাবার ফিরে আসার খবর জানিয়েছেন। শবনম জামান তার পোস্টে বলেছেন, এই মুহূর্তে কিছু বলার মতো অবস্থায় নেই তার পরিবার। শবনম জামান ইংরেজিতে তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, সাড়ে ১৫ মাস বা ৪৬৭ দিন পর আমার বাবা ফিরে এসেছেন। এই সময়ে যারা আমাদের পাশে ছিলেন তাদের প্রতি আমি ও আমার ছোট বোন কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। এখন সবাইকে অনুরোধ করব, যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমরা গিয়েছি তা ভুলে থাকতে আমরা কিছুটা সময় নিজেদের মতো থাকতে চাই। এ বিষয়ে এখন আমাদের বিস্তারিত কিছু বলার নেই।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, কেউ নিখোঁজ হওয়া কারো কাম্য নয়। যারাই নিখোঁজ হচ্ছেন তাদের সকলের বিষয়েই আমরা সরকারের কাছে উদ্ধারের আবেদন জানিয়েছি। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন ফিরেও এসেছেন। যারা ফিরে এসেছেন আমরা তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছি, কিন্তু কেউ কথা বলতে রাজি হন না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেন ফিরে আসা ব্যক্তি কথা বলেন না, সে বিষয়ে মন্তব্য করা কঠিন। তবে ফিরে আসা ব্যক্তি কথা বললে নিখোঁজের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা সহজ হতো। আমি আশা করবো নিখোঁজ সকলেই ফিলে আসুক।
ধানমন্ডি থানার ওসি আব্দুল লতিফ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সাবেক রাষ্ট্রদূত ফিরে আসার খবর পেয়ে আমি নিজেই তার বাসায় যাই। কিন্তু তার মেয়ে শবনম জামান আমাকে জানান, মারুফ জামান অসুস্থ, তিনি এখন কারো সাথে দেখা ও কথা বলবেন না। তাই তিনি কিভাবে ফিরেছেন, কোথা থেকে এসেছেন, কে দিয়ে গেছেন- কোন কিছুই জানা সম্ভব হয়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি আরো বলেন, কোন অভিযোগ করা না হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহনের সুযোগ নেই।
মানবাধিকার-কর্মী সুলতানা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে ফিরে আসা প্রত্যেকের অভিজ্ঞতাগুলো সামনে আনা জরুরি। যেসব আশঙ্কা ও হুমকির কারণে এই মানুষগুলো মুখ খুলতে ভয় পান সেই ভয় দূূর করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর আরও জোরালো ভূমিকা নেয়া প্রয়োজন।
পুলিশ জানায়, ধানমন্ডির ৯/এ সড়কের ৮৯ নম্বর বাসায় থাকেন মারুফ জামান। তার দুই মেয়ে। বড় মেয়ে বেলজিয়ামে থাকেন। আর ছোট মেয়ে সামিহা জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেছেন। ঢাকাতেই থাকেন। সামিহা জামান ২০১৭ সালের নভেম্বরের শুরুর দিকে বেলজিয়ামে বড় বোনের বাসায় বেড়াতে যান। একই বছরের ৪ ডিসেম্বর দেশে ফেরেন। ওইদিন বিকাল ৫টার দিকে মেয়েকে আনতেই শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন মারুফ জামান। সামিহা বাবার ফোন বন্ধ পেয়ে একাই বাসায় ফিরে আসেন। রাত ১০টার দিকে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন মারুফ জামান নিখোঁজ হয়েছেন। ওইদিন সন্ধ্যায় মারুফ জামান বাসার টিঅ্যান্ডটি নম্বরে কল করে বলেন- তিনজন লোক যাবে, তাদের কাছে বাসায় থাকা ল্যাপটপ দিয়ে দিতে হবে। পরে রাত ৮টা ৫ মিনিটে তিনজন লোক বাসায় গিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে ১০ মিনিট পর বের হয়ে যান। তাদের মুখ ঢাকা ছিল।
এ ঘটনায় তার মেয়ে সামিহা জামান ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি নম্বর-২১৩) করেন। পরে ওইদিন রাত ৮টার দিকে খিলক্ষেত থানা পুলিশ ৩০০ ফুট রাস্তা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় মারুফ জামানের গাড়ি উদ্ধার করেন। গাড়িটি অক্ষত অবস্থায় ছিল। গাড়িটি বর্তমানে ধানমন্ডি থানায় রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।