পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1719235702](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আগামী বাজেটে ব্যাংকের ঋণের চক্রবৃদ্ধি সুদহার থাকছে না। তিনি বলেন, বিশ্বের কোথায় ব্যাংক ঋণের চক্রবৃদ্ধি সুদ নেই। সবাই সরল সুদ নেয়। আমরাও আগামী বাজেটের পর থেকে ব্যাংক ঋণের সরল সুদ হার বাস্তবায়ন করবো। গতকাল সোমবার রাজধানীর শেরে বাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক বিশেষায়িত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিচালক পরিষদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. ফজলে কবির, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
আগামী বাজেটে এ বিষয়ে পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, চক্র বৃদ্ধি হারে সুদের ফলে গ্রাহকদের নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বর্তমান ব্যাংক ঋণে তিন মাস, চার মাস ও ছয় মাসে সুদের হিসাব করা হয়। সুদের উপরে আবারও সুদ বসানো হয়। এটা আগামী বাজেট থেকে তুলে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হবে। সুদের হিসাব আর চক্রবৃদ্ধি হারে হবে না, সরল হারে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা চক্রবৃদ্ধি সুদের হারের কারণে খেলাপি হয়েছেন তাদেরকে মাফ করে দেয়া হবে। সেগুলো আমরা কমিয়ে দেব। আগামী বাজেটের আগে থেকেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খেলাপি অসাধু ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে দুই পক্ষ দায়ী। যিনি অসাধু ব্যবসায়ী তিনি এবং তাকে যারা সাহায্য করেছেন তারা। এক্ষেত্রে উভয়ের বিচার করা হবে। আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, খেলাপিদের বিষয়ে দৃশ্যমান পদক্ষেপ আসবে। এ সময় দিতে হবে। হুট করেই সম্ভব নয়; আমি পদক্ষেপ নেব, সেজন্য কাজ করছি। যেখানে যেখানে আইনে ব্যত্যয় আছে, সেগুলো সংশোধন করে কাজে হাত দেব, যাতে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে কেউ বের হতে না পারে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা কাউকে কষ্ট দেব না। একটা প্রতিষ্ঠান তৈরি করা অনেক কষ্টের কাজ। প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা অনেক সহজ। আমরা চাই প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকভাবে চলুক। আর যারা অন্যায় করেছে, তারাও যদি এসে বলে, আমি অন্যায় করছি, টাকা শোধ দিয়ে দেব- তাহলে তাদেরকেও মাফ করে দেব। দেশের স্বার্থে এ কাজটি করা হবে।
ব্যাংকে ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে দাবি করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকের কিছুটা ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে। এগুলো পরিষ্কারে হাত দেয়া হবে। এই বিচ্যুতি নতুন করে হয়নি দীর্ঘদিনের। মানুষ যেন ব্যাংকমুখী হয় সেই আস্থা ফিরিয়ে আনতে আমরা কাজ করবো। ব্যাংকের আস্থার বিষয়টি এখন বড় প্রশ্ন। ব্যাংকে বিশেষ অডিটের ব্যবস্থা করা হবে। আমাদের ব্যালেন্স সিট কতো সেটা জানা যাবে।
ব্যাংকের গ্রাহক প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, যারা ব্যাংকের ভালো গ্রাহক তাদের সহায়তা করা হবে। যারা ব্যাংকের টাকা নিয়ে দিচ্ছে না তাদের ছাড় দেয়া হবে না। বিদ্যমান আইন প্রয়োগ করে তাদের নিকট থেকে টাকা আদায় করা হবে। খারাপ-অসাধু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোনো আপোষ নাই। আইনী প্রক্রিয়ায় টাকা আদায় করা হবে। খারাপ ব্যবসায়ীদের যে সব ব্যবসায়ী সহায়তা করেছে তাদেরও ছাড় দেয়া হবে না। তিনি বলেন, তবে কাউকে জেলে পাঠিয়ে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে কিছু করা হবে না। আমরা চাই না কেউ বিপদে পড়–ক। যদি সে ক্ষমা চেয়ে স্বাভাবিকভাবে টাকা ফেরত দেয়।
মুস্তফা কামাল বলেন, আমি একটা জায়গা হাত দেব। যেভাবে ব্যাংকের বোর্ডগুলো পরিচালিত ও গঠিত হচ্ছে, সেখানে সত্যিকারভাবে যারা ব্যাংকিং বোঝেন, তাদের হাতে দায়িত্ব তুলে দেয়ার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলব। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে এই কাজটি করা হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, চাকরি নাই কিছু নাই, ব্যাংকের পরিচালক বানিয়ে দিলেন-এসব আর হবে না। এখন সত্যিকারভাবে, যথাযথভাবে এদের সাক্ষাৎকার নিয়ে, যার যোগ্যতা আছে, কাজ করতে পারবে, ব্যাংকিং বোঝে, অ্যাকাউন্টিং বোঝে, আইন বোঝে, এর সঙ্গে প্রাসঙ্গিক সবকিছু বোঝে-তাদেরকে আমি ব্যাংকের পরিচালক বানাব। উপস্থিত ব্যাংক পরিচালনা পরিষদের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনারা আমাকে সকল বিষয়ে সুপারিশ করবেন, ব্যাংকের ব্যাপারে সুপারিশ করবেন না। এক্ষেত্রে কোন ছাড় নয়।
ব্যাংকিং খাত নিয়ে অনেক নেতিবাচক কথা বলা হচ্ছে তবে যতোটা বলা হচ্ছে ততোটা নয় উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক যদি খারাপই হবে, তাহলে কীভাবে আমরা প্রবৃদ্ধি অর্জন করছি? ব্যাংকের অবস্থা একেবারে খারাপ এটা সঠিক না। তিনি বলেন, দেশে ব্যাংক কয়টা, ৬২টা। ১৬০ বা ১৬৩ মিলিয়ন মানুষের জন্য এগুলো অনেক বেশি না। আমি আগেও বলেছি, এখনও বলব বেশি না। বিদেশের একটা ব্যাংকের ব্রাঞ্চে যে সম্পদ, তা আমাদের বেসরকারি খাতের সব ব্যাংকের সম্পদের সমান। সুতরাং নম্বর কতটা হলো সেটা দেখে যদি আতঙ্কিত হয়ে যাই, তাহলে সেটা হবে না। এগুলো ঠিকভাবে চালাতে হবে। চালাতে পারলে নাথিং লাইক দ্যাট (সব সমস্যার সমাধান)।
দেশের সব মানুষকে আবার ব্যাংকমুখী করার জন্য চেষ্টা করা হবে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা আগামীতে চেষ্টা করব, কিছু প্লেইন অঞ্চলে পিছিয়ে পড়া এলাকা, রংপুর বিভাগের একাধিক জেলায় ক্রপ ইন্সুরেন্স করার। একটা বা দুইটা হাওরে আমরা ক্রপ ইন্স্যুরেন্স করব। একটা শক্তিশালী অর্থনীতি যেভাবে আচরণ করে, সেভাবে আমরাও শুরু করব।
ব্যাংক খাতের প্রসংশা করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক খাত ভালো করছে এটা আমাদের স্বীকার করতে হবে। এই খাত ভালো না করলে প্রবৃদ্ধি অর্জনে এতো ভালো করতাম না। আমরা আশা করছি আগামীতে ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবো। আমাদের অনেক টাকা দরকার। শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে অনেক টাকা দরকার। মেগা প্রকল্পে এখনই টাকা ছাড় করার সময়। এগুলো করতে হলে ব্যাংক খাতের উন্নয়ন জরুরি। তাই এই খাতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী। বৈঠকে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং সব পরিচালককে উপস্থিত ছিলেন।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।