পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আজ ১৭ মার্চ। এদিন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মধ্যে দ্বিতীয় দিনের আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু আলোচনা ব্যর্থ হয়। তিনি তার সাদা গাড়িতে কালো ও দলীয় পতাকা উড়িয়ে এবং উইন্ডস্ক্রিনে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা ও নৌকার প্রতীক সেঁটে প্রেসিডেন্ট হাউসে যান। আগের দিনের প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এমনকি তারা সমঝোতার কাছাকাছি উপনীত হয়েছেন, এমন কোনো আভাসও মেলেনি। তাই সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ, ওদিকে পশ্চিম পাকিস্তানের বহু মানুষ এবং বিশে^র বেশ কিছু দেশ এদিনের বৈঠকের ফলাফলের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল।
এ বৈঠক কোনো কাজে আসবে না। তার পরিণতিতে পূর্ব পাকিস্তানে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে, হত্যা, ধর্ষণ, ধ্বংসের মধ্য দিয়ে দোযখের দরজা খুলে যাবে। টুকরো হয়ে যাবে পাকিস্তান। এ রকম আশঙ্কা তখন পর্যন্ত দানা বাঁধেনি। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও বঙ্গবন্ধু প্রথম দিন অর্থাৎ ১৬ মার্চ একান্ত বৈঠক করেছিলেন।
আজ দ্বিতীয় দিনে তাদের সাথে উপদেষ্টারা যোগ দেন। শেখ মুজিবের পক্ষে আওয়ামী লীগের প্রাদেশিক কমিটির সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, দলের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ ও বঙ্গবন্ধুর আইন ও সংবিধান উপদেষ্টা ড. কামাল হোসেন। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার পক্ষে তার আইন উপদেষ্টা বিচারপতি এ আর কর্নেলিয়াস, লে. জেনারেল পীরজাদা ও কর্নেল হাসান অংশ নেন।
এই বৈঠকে দুই পাকিস্তানের জন্য পৃথকভাবে দুটি সংবিধান রচনা এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়। বঙ্গবন্ধু ও ইয়াহিয়ার সম্মতির প্রেক্ষিতে আজকের দিনে দুপক্ষের আইন বিশেষজ্ঞরা এক বৈঠকে মিলিত হন। দু’দিনের বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্ট হাউসে রাতেই ইয়াহিয়া-টিক্কা খানের মধ্যে স্বল্প সময়ের জন্য গোপন বৈঠক হয়।
আলোচনার বিষয় প্রসঙ্গে ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বঙ্গবন্ধু অবিলম্বে সামরিক আইন প্রত্যাহার করে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে ছাত্র-জনতা প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে। এ ব্যর্থ আলোচনার পর মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এক বিবৃতিতে বলেন, বাংলার মানুষ কোনো আপস বা সমঝোতা মেনে নেবে না। তিনি বলেন, আগামী ২৫ মার্চের মধ্যে স্বাধিকারের দাবি মেনে না নিলে এক দফার আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতা আদায় করা হবে।
এদিন ঢাকার রাজপথে ছাত্র-জনতার বহু মিছিল বের হয়। মিছিলে মিছিলে রাজপথ মুখরিত হয়ে ওঠে। মিছিলকারীরা স্বাধীনতা আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার শপথ গ্রহণ করে। স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ছাত্র-ছাত্রীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় কুচকাওয়াজ ও রাইফেল প্রশিক্ষণ শুরু করে। কোথাও কোথাও ডামি রাইফেল নিয়ে কুচকাওয়াজ হয়। ঢাকার বাইরেও ছাত্র-জনতা বাঁশের লাঠি নিয়ে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত বাঙালি সৈনিক ও পুলিশ সদস্যরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।