পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা ফ্লাইওভার এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দখল করে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। মহাসড়ক দখল করে মসজিদ ও দেয়াল নির্মাণ করার পরেও তা উদ্ধারে ব্যর্থ হয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। তারা শুধু নোটিশ দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছে। মহাসড়ক দখল করে রাখায় ভুলতা ফ্লাইওভারের নিচের অংশে ৬০ ফুট প্রশস্ত রাস্তা ১৫ ফুট হয়ে গেছে। এতে করে ওই অংশে রাতদিন ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়ে শত শত যানবাহন আটকে পড়ছে। ভোগান্তি পোহাচ্ছে মানুষ।
শুধু তাই নয়, সরকারের মেগা প্রকল্প ভুলতা ফ্লাইওভার সংলগ্ন মহাসড়ক দখল করায় এ মেগা প্রকল্পের সুফল মিলবে না। ভুক্তভোগিদের মতে, ফ্লাইওভার চালুর পর উপরে যানজট না হলেও নিচের অংশের যানজট এক পর্যায়ে ফ্লাইওভারের অন্য মাথায় গিয়ে ঠেকবে। তাতে সাড়ে ৩শ’ কোটি টাকার এ ফ্লাইওভার কোনো কাজেই আসবে না।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সড়ক ও জনপথের ৭ শতাংশ জমি দখল করেছে একটি প্রতিষ্ঠান মসজিদ নির্মাণ করেছে। মহাসড়কের এ জমি উদ্ধারে একাধিকবার চেষ্টা করেও রহস্যজনক কারণে ব্যর্থ হয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। আর সড়ক দখল করে মসজিদ ও প্রতিষ্ঠানের পাকা বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ করায় ৬০ ফুট প্রশস্ত সড়ক ১৫ ফুট হয়ে গেছে। একটার বেশি গাড়ি ওই অংশে প্রবেশ করে না। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কযোগে সিলেটের দিকে যেতে সাওঘাট এলাকার ওই অংশে গিয়ে যানবাহনগুলোর সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। হঠাৎ করে মহাসড়ক সরু হয়ে যাওয়ায় এ অংশে প্রতিনিয়ত ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ভোগান্তি পোহাচ্ছে মানুষ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ৩৫৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৪ লেন বিশিষ্ট তিন তলা ভুলতা ফ্লাইওভারের কোলঘেঁষে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সাওঘাট এলাকায় জাপান-বাংলাদেশ গ্রুপের নামের একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়। ওই প্রতিষ্ঠানটি সওজের প্রায় ৭ শতাংশ জমি দখল করে সেখানে একটি বহুতল মসজিদ ও পাকা দেয়াল নির্মাণ করেছে। দেশের প্রধান একটি মহাসড়কের জমিতে কিভাবে একটি বহুতল মসজিদ নির্মাণ করা হলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অনেক আগেই। সওজের একজন কর্মকর্তা জানান, ভুলতা ফ্লাইওভারের কাজ শুরুর পর সওজের বেদখলে থাকা ওই ৭ শতাংশ জমি প্রতিষ্ঠানটিকে ছেড়ে দিতে বলা হয়। কিন্তু তারা জমিটুকু ছাড়েনি। বরং নতুন করে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ফ্লাইওভারের পুর্ব পার্শ্বের নিচের সড়কটি প্রায় ৬০ ফুট প্রশস্ত হলেও পশ্চিম পার্শ্বের সিলেটমুখী সড়কটি এখন মাত্র ১৫ ফুট প্রশস্ত। ঢাকা থেকে সিলেটমুখী যানবাহনগুলো চলাচল করতে গিয়ে ওই ১৫ ফুট প্রশস্থ স্থানে গিয়ে আটকে যাচ্ছে। সংকুচিত ওই অংশে ধীর গতিতে একটা একটা করে যানবাহন পার হতে গিয়ে পেছনের দিকে শত শত যানবাহন আটকে যাচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। সেই যানজট এক পর্যায়ে ভয়াবহ আকার ধারন করে। যার প্রভাব গিয়ে পড়ছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর অংশে।
এ প্রসঙ্গে বাস চালক এমরান হোসেন বলেন, সরকার মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে মেগা প্রকল্প করেছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা ফ্লাইওভারের মতো মেগা প্রকল্প করার পরেও সাওঘাট এলাকায় এসে যানজটে পড়তে হয়। ১৫ ফুট প্রশস্থ সড়ক দিয়ে বড় বড় যানবাহন চলাচলে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এ অংশটুকু প্রশস্ত করলে যানজট আর থাকবেনা।
ট্রাক চালক আলমগীর হোসেন বলেন, এতো বড় একটা মেগা প্রকল্পও এভাবে বাধা দিল কারা? সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যারা রয়েছেন,তারা কি এ সমস্যাগুলো দেখেন না ? মহাসড়ক দখল করে কেনো মসজিদ নির্মাণ করতে হবে? স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, আসলে মহাসড়কের জায়গা দখল করতেই মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছ্ েমসজিদ সহজে ভাঙ্গা যাবে না-এই যুক্তি মাথায় রেখেই এ কাজ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের উচিত সাড়ে ৩শ’ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প তথা প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তি লাঘবে ওই মসজিদ ভেঙ্গে মহাসড়ক প্রশস্ত করা।
এ ব্যপারে জানার জন্য জাপান বাংলাদেশ গ্রæপের সাওঘাট এলাকায় অবস্থিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ভুলতা ফ্লাইওভার প্রকল্প পরিচালক রিয়াজ হোসেন বলেন, আমরা কয়েকবার সওজের জমি উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি সত্য। কিন্তু যেকোনো মুল্যে ওই জায়গা উদ্ধার করে সড়কটি প্রশস্ত করা হবে।
এদিকে, আজ শনিবার (১৭ মার্চ) ভুলতা ফ্লাইওভার উড়াল সেতুর কাঞ্চন-মদন সড়কের একটি লেন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন। সরকারের মেগা প্রকল্প উদ্বোধন করলেও ওই ৭ শতাংশ সওজের জমি উদ্ধার না করায় সড়কের কাজ অসমাপ্ত থেকে যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী এবং স্থানীয় এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক) বলেন, সওজের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সওজের জমি দখলমুক্ত করে মহাসড়কের সাওঘাট অংশটুকু প্রশস্ত করার ব্যবস্থা করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এ ধরনের মেগা প্রকল্প বাধাগ্রস্ত হতে পারেনা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।