পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন, রাষ্ট্রীয়-দলীয় লুটপাট, দুর্নীতি ও কায়েমী স্বার্থবাদ শ্রমিকদের ভাগ্যের পরিবর্তনে প্রধান বাধা। দুর্নীতি বন্ধ না করে গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির অপচেষ্টা দেশের সাধারণ মানুষকে শোষণের অংশ। তিনি বলেন, গ্যাসের মূল্য ১টাকাও বৃদ্ধি করা হলে জনগণ মেনে নেবে না। স্বাধীনতার ৪৮ বছর অতিক্রান্ত হলেও শ্রমিকদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। সরকারগুলো শ্রমিক সমস্যার বাস্তবমুখী সমাধান করছে না। যে কারণে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা, শিল্পবিরোধ, স্বাস্থ্য সমস্যা, বকেয়া মজুরি, বিনা নোটিশে ছাঁটাই, নারী শ্রমিকদের যৌন হয়রানিসহ সর্বত্র সমস্যা বিরাজমান। এসবের অন্যতম কারণ মালিক-শ্রমিক সুসম্পর্কের অভাব। ইসলামী শ্রমনীতির অভাবে শ্রমিকরা অধিকার থেকে বঞ্চিত। পীর সাহেব বলেন, শ্রমিকদের সর্বনিম্ন ১৬,০০০/- টাকা মজুরিসহ চাকরির নিশ্চয়তা দিতে হবে। শ্রমিকদের আস্থায় এনে সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশে শিল্প বিপ্লব সম্ভব।
গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত জাতীয় শ্রমিক কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আশরাফ আলী আকনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ খলিলুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত শ্রমিক কনভেনশনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ ও যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক হাফেজ মাও: এটিএম হেমায়েত উদ্দীন, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ¦ আব্দুর রহমানসহ, আলহাজ¦ জান্নাতুল ইসলাম, মুহাম্মদ হারুনুর রশিদ, ক্যাপ্টেন অব. ইব্রাহিম, হাফেজ মাওঃ ছিদ্দিকুর রহমান, মাওলানা মামুনুর রশীদ, ডা. আল আমীন এহসান, অধ্যাপক আব্দুল করীম প্রমূখ।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, শ্রমিকরা তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নামলে তাদের ওপর গুলি, হামলা-মামলা, ছাঁটাই ও বরখাস্ত করা হয়। রানা প্লাজার মত ঘটনায় তারা ক্ষতিপুরণও পায় না। বর্তমান শাসন ব্যবস্থায় আল্লাহর বন্ধু শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার ও মযর্‘াদা প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তাই শ্রমিকদের ন্যায্য মর্যাদা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশকে কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর ছায়াতলে শ্রমিকদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শক্ত দাবি তুলতে হবে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ডাকসু নির্বাচনকে বিতর্কিত করার মাধ্যমে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করেছে। সিইসি’র বক্তব্যের মাধ্যমে থলের বিড়াল বের হয়ে এসেছে। তিনি বলেন, সত্য বেশিদিন চাপা দিয়ে রাখা যায় না। জাতীয় সংসদে রাশেদ খান মেননের বক্তব্যে সংসদ কলঙ্কিত করেছে।
জাতীয় শ্রমিক কনভেনশনে গৃহীত ১৭ দফা প্রস্তাবনায় রয়েছে- সুখী সমৃদ্ধ কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অগ্রসৈনিক শ্রমিকগণকে সম্মানিত নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে তাদের প্রকৃত মর্যাদা ও ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে শ্রমিকদের আইডি কার্ড প্রদান করে রেশনিং ব্যবস্থা চালুসহ পরিবারের শিক্ষা, চিকিৎসা ও পরিবহন ব্যয় অর্ধেক করা। কৃষকের উৎপাদন ব্যয় পুষিয়ে নেয়ার স্বার্থে সার, সেচ এবং বীজ বিনামূল্যে প্রদান ও বিনা সুদে ঋণ প্রদান করা। বেকারত্বের অবসান ঘটিয়ে কর্মসংস্থানের জন্য নতুন নতুন কলকারখানা স্থাপন, বন্ধ কল-কারখানা চালু করা। কথায় কথায় শ্রমিক ছাঁটাই শ্রমিকদের উপর কঠিন জুলুম; যৌক্তিক কারণ ও ছাঁটাইয়ের শর্ত পূরণ ছাড়া শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ব্যাপক উৎপাদনের স্বার্থে ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করা। শ্রমিকদের উপর কোনো ধরণের শোষণ-নিপীড়ন, নির্যাতন বন্ধ করে তাদের অধিকার নিশ্চিত করা। পায়ে চালিত রিক্সা, ভ্যান ও ঠেলা গাড়ীর লাইসেন্স ফি মানবিক কারণে মওকুফ করা। সকল ধরণের ড্রাইভারদের লাইসেন্স ফি অর্ধেক করা। হকার্স পূণর্বাসন ছাড়া অমানবিক উচ্ছেদ বন্ধ ও ফুটপাতের এক তৃতীয়াংশ জায়গায় হকার বসার ব্যবস্থা করা। অটো ইজি বাইক বন্ধের পায়তারা বন্ধ ও অটো ইজি বাইক চলাচলের জন্য আলাদা লেন করা। সামুদ্রিক ট্রলারে মৎস শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে অস্ত্রের লাইসেন্স দেয়া। অগ্রিম আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিতে সমূদ্রে আবহাওয়ার পূর্বাভাস শক্তিশালী করা। ভ্রাম্যমান হকারদের যানবাহনে পণ্য বিক্রির সুযোগ অব্যাহত রাখা। হোটেল রেস্তোরা শ্রমিকদের স্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজের ও থাকার নিশ্চয়তা প্রদান এবং দুই ঈদে দুটি ফুল বোনাস প্রদান করা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।