Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রতিটি স্কুলে ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া হচ্ছে

লেখাপড়ায় শিশুদের চাপ না দেয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সার্বজনীন এবং বহুমুখী উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের প্রতিটি স্কুলে ধর্মীয় শিক্ষা এবং সাংস্কৃতিক চর্চায় সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। সরকার এজন্য প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম করে দিচ্ছে। পর্যায়ক্রমে শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশের জন্য এই মিনি স্টেডিয়াম ইউনিয়ন পর্যায়েও করে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হবে। এভাবেই শিক্ষাকে আমরা সার্বজনীন ও বহুমুখী করে দিচ্ছি।
গতকাল বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৯-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। লেখাপড়া নিয়ে অতিরিক্ত চাপে শিশুদের মধ্যে যেন ভীতি তৈরি না হয় সেজন্য শিক্ষক ও অভিভাবকদের নজর দেয়ার অনুরোধ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শিশুদের শিক্ষার জন্য অতিরিক্ত চাপ দেয়া উচিত না। তারা যেন খেলতে খেলতে, হাসতে হাসতে সুন্দরভাবে নিজের মতো করে নিয়ে পড়তে পারে সেই ব্যবস্থাটাই করা উচিত। কোমলমতি শিশুদের লেখাপড়ার কঠোর শৃঙ্খলে আবদ্ধ করাকে তিনি ‘এক ধরনের মানসিক অত্যাচার’ বলে অভিহিত করে বলেন, শিশুরা প্রথমে স্কুলে যাবে এবং হাসি খেলার মধ্য দিয়েই লেখাপড়া করবে। তারা তো আগে থেকেই পড়ে আসবে না, পড়ালেখা শিখতেই তো সে স্কুলে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী শিশুদের পাঠদান সম্পর্কে নিজস্ব অভিব্যক্তি সকলের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে গিয়ে বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশেই ৭ বছরের আগে শিশুদের স্কুলে পাঠায় না। কিন্তু আমাদের দেশে অনেক ছোটবেলা থেকেই বাচ্চারা স্কুলে যায়। কিন্তু তারা যেন হাসতে খেলতে মজা করতে করতে পড়াশোনাটাকে নিজের মতো করে শুরু করতে পরে। শিশুদের অনবরত ‘পড়’, ‘পড়’, ‘পড়’ বলা বা ধমক দেয়া বা আরো বেশি চাপ দিলে শিক্ষার ওপর তাদের অগ্রহ কমে যাবে; একটা ভীতির সৃষ্টি হবে। শিক্ষার প্রতি সেই ভীতিটা যেন সৃষ্টি না হয়, সেজন্য আমি আমাদের শিক্ষক এবং অভিভাবকদের অনুরোধ করব। অনেক সময় আমরা দেখি প্রতিযোগিতা শিশুদের মধ্যে না হলেও বাবা-মায়ের মধ্যে একটু বেশি হয়ে যায়। এটাকেও আমি একটি অসুস্থ প্রতিযোগিতা বলে মনে করি। তিনি বলেন, সকল শিক্ষার্থীর সমান মেধাবী হবে না এবং সকলেই সবকিছু একরকম করায়াত্ত করতে পারবে না। তবে, যার যেটি যেভাবে সহজাতভাবে আসবে তাকে সেটি গ্রহণ করার সুযোগ দেয়া উচিত। যেন শিক্ষাটাকে সে আপন করে শিখতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার শিক্ষকদের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে, বেতন ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছে এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিয়েছে যাতে তারা ভালোভাবে শিক্ষা দিতে পারে। এ সময় ইংরেজি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করে এজন্য কোমলমতিদের বেশি চাপ প্রয়োগ না করারও পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, শিশু শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাবে শিখতে, তারা তো আগে থেকেই পড়ে আসবে না। যে সকল এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে সেখানে স্কুলে যাবার বয়স হয়েছে এমন শিশুদের সেসকল স্কুলে ভর্তি করে নিতে হবে।
শিক্ষার ক্ষেত্রে অর্থ ব্যয়ে সরকারের কোনো কার্পণ্য নেই উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সকল শিশুর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০১৮-২০২৩ মেয়াদের জন্য ৩৮ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকার চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু, ঝড়েপড়া রোধকল্পে বিভিন্ন স্থানে বিনামূল্যে স্কুলের পোশাকসহ সকল শিক্ষা উপকরণ প্রদান, শিক্ষা ভাতা ও ক্ষেত্র বিশেষে পরীক্ষার ফি প্রদান করাসহ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য তাদের নিজেদের ভাষায় শিক্ষা প্রদানের উদ্যোগ এবং অন্ধদের জন্য ব্রেইল বই এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের জন্যও বই প্রদান ও হেয়ারিং এইড প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এ সময় সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ এবং বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, এর ফলে আমরা দেখতে পাচ্ছি আমাদের ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে বিভিন্ন বয়সভিত্তিক ফুটবল প্রতিভা বের হয়ে আসছে। তারা বিদেশ থেকে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। এ সময় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম আল হোসেন স্বাগত বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ‘প্রাথমিক শিক্ষা পদক’ বিতরণ করেন এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকান্ডের ওপর একটি ভিডিও চিত্রও প্রদর্শিত হয়।



 

Show all comments
  • খালেদ আহমদ ১৪ মার্চ, ২০১৯, ১২:৩৩ এএম says : 0
    ইসলামী শিক্ষাই আমাদেরকে সমাজের অন্ধকার থেকে আলোর পথ নিয়ে যেতে পারে, আল্লাহর নির্দেশিত পথে চালাতে পারে।
    Total Reply(0) Reply
  • মো. জাফর ইকবাল ভূঁইয়া ১৪ মার্চ, ২০১৯, ১২:৪২ এএম says : 0
    দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সার্বজনীন এবং বহুমুখী করার পাশাপাশি শিক্ষার মান সুনিশ্চিত করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • সাহেদ শফি ১৪ মার্চ, ২০১৯, ১২:৪৩ এএম says : 0
    প্রতিটি স্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বা নৈতিক শিক্ষার প্রতি আরও বেশি জোর দিতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • নাফিজ খান রেজা ১৪ মার্চ, ২০১৯, ১২:৪৬ এএম says : 0
    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে অকে দিক নির্দেশনামুলক কথা বলেছেন। শিক্ষক থেকে শুরু করে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলের উচিত এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে কাজ করা।
    Total Reply(0) Reply
  • রাইয়ান ইয়ামিন আইমান ১৪ মার্চ, ২০১৯, ১২:৪৮ এএম says : 0
    শিক্ষাক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো প্রশ্নপত্র ফাঁস। এটা পুরোপুরি বন্ধ না করতে পারলে কোন পদক্ষেপই কাজে আসবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • লোকমান ১৪ মার্চ, ২০১৯, ১২:৪৯ এএম says : 0
    অত্যান্ত সুন্দর ও দিকনির্দেশনামুলক বক্তব্যের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অসংখ্য মোবারকবাদ জানাচ্ছি
    Total Reply(0) Reply
  • এইচ আর রাসেল ১৪ মার্চ, ২০১৯, ১২:৪৯ এএম says : 0
    আপনার নেতৃত্বে শিক্ষাসহ সকল সেক্টরে দেশ এগিয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Kowaj Ali khan ১৪ মার্চ, ২০১৯, ৮:৩৯ এএম says : 0
    আল্লাহ তা'আলার অভিশাপ মিত্যাবাদীদের উপর। দেশ এখন মিত্যাবাদীদের কবলে তাই নিত্যাবাদীরা যাহাই বলিবে। কথা কি ভালো হইবে? দেশে যাহা অশ্লীলতা কি যে গজব হইবে আল্লাহ তা'আলা ভালো জানেন। আল্লাহ তা'আলা দয়া জরিয়া গজব দিয়া ধংস করো সকল মিত্যাবাদী ভোট চুর, চুন্নি, গুম খোনের নায়ক নায়িকা। ইনশাআল্লাহ।
    Total Reply(0) Reply
  • Nannu chowhan ১৪ মার্চ, ২০১৯, ৮:৪২ এএম says : 0
    Khoub valo kotha,kintu eakdike bola hochse dhormio shikkhar kotha,onnodike kisu kolanggar shikkhok satrider hijab jor purbok khole nichse ebong eaishob shikkhokder biruddhe keno kono bebosta neoa hochsena?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ