পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাস্তায় সাদা একটা গাড়ি। দুই পাশে লেখা ‘জ্ঞানবাহন’। গাড়িতে বাজছে গান (থিম সং) ‘বাংলা আমার মা’। রাস্তার দু’পাশে আগ্রহী মানুষের ভিড়। গ্রামের মেঠো পথ, বাজার ও সড়ক মোড়ে মানুষের জটলায় থামছে গাড়ি। আগ্রহীরা জানছেন নানান কর্মমুখী শিক্ষা এবং আধুনিক প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য।
গত রোববার চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে জ্ঞানবাহনকে ঘিরে দেখা গেছে সাধারণ মানুষের উচ্ছ্বাস। এটি সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। প্রত্যন্ত গ্রামে কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিশু শিক্ষার পাশাপাশি কৃষকের সাফল্য আদান-প্রদানের লক্ষ্যে জ্ঞানবাহন চালু হবে সারাদেশে।
এ বিশেষ বাহনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ই-লার্নিং বিশেষজ্ঞ ও জ্ঞানবাহনের উদ্ভাবক চট্টগ্রামের সন্তান মার্কিন প্রবাসী অধ্যাপক ড. বদরুল হুদা খান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ভ্রমণের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ শিক্ষাদানের উদ্দেশেই এই উদ্ভাবন। এই গাড়ির ভেতর ফ্রি ইন্টারনেট সংযোগ ও একটি টেলিভিশন আছে। যেখানে ভ্রমণরত যাত্রীদের বিভিন্ন শিক্ষামূলক ভিডিও প্রদর্শন করা হবে, যা প্রথাগত শিক্ষা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। গ্রামের নারীরা কীভাবে ফলমূল চাষ ও খাবার বিক্রি করে স্বাবলম্বী হতে পারেন, কৃষকরা কীভাবে কীটনাশক ও জৈবসার জমিতে ব্যবহার করবেন, তা দেখানো হবে।
এই বাহন সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে অসংখ্য শিক্ষিত বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হবে। তিনি বলেন, জ্ঞানবাহনের যে চালক তিনি হবেন জ্ঞানবাহক। তিনি এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে বাহনটি নিয়ে যাবেন। সাথে থাকবেন বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান আছে এমন একজন জ্ঞানবন্ধু। যাত্রীদের বিভিন্ন বিষয়ে জানানো হবে এই জ্ঞানবন্ধুর কাজ। এই জ্ঞানবাহক এবং জ্ঞানবন্ধুর আর্থিক আয় হবে যাত্রীদের ভাড়া থেকে।
এই বাহনটি চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে এর সেবা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে তুলছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, এই বাহনের প্রতি মানুষের ব্যাপক আগ্রহ। দুপুরের কিছুটা আগে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম গোমদন্ডী বাজারে থামে এই বাহনটি। এ সময় চারদিক থেকে জড়ো হয় অনেক মানুষ। তাদের এই বাহন সম্পর্কে নানা তথ্য জানান উদ্ভাবক ড. বদরুল হুদা খান।
স্থানীয় একটি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আবু সাঈদ বলেন, এই বাহন সম্পর্কে জানতে পেরে আমি অনেক খুশি। তিনি মনে করেন এটা দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে পারলে সাধারণ মানুষের উপকার হবে। দুপুর দেড়টায় ওই উপজেলার শাকপুরা বাজারে যায় জ্ঞানবাহন। এসময় এ বাহন সম্পর্কে জানতে চান স্থানীয় মাদরাসার তিন শিক্ষক।
জ্ঞানবাহনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) তারিন মহিউদ্দিন আজিম বলেন, দেশব্যাপী এটি চালু হলে সপ্তাহে পাঁচ দিন যাত্রী পরিবহন করবে জ্ঞানবাহন। শিশুদের স্কুলে পৌঁছে দেবে এ বাহন। যাত্রাপথে শিক্ষামূলক ভিডিও দেখার পাশাপাশি গেইমও খেলতে পারবে শিশুরা। প্রতিটি জ্ঞানবাহনের একটি আঞ্চলিক এলাকা থাকবে। একটি জ্ঞানবাহন সাধারণত ১৫ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত চলতে পারবে। আগ্রহীরা এ ব্যাপারে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
উল্লেখ্য, জ্ঞানবাহন মূলত ড. বদরুল হুদা খানের চিন্তা থেকে এসেছে। এতে আর্থিক সহযোগিতা দিচ্ছেন তার আরও ১৬ জন প্রবাসী বন্ধু। জ্ঞানবাহন ইতোমধ্যে ভারতের কলকাতায় চালু হয়েছে। নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় খুব শিগগির চালু হবে বলে জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।