Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাতাসে ঝড়ের দোলা

হোসেন মাহমুদ | প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

আজ ১০ মার্চ। এ ভূখন্ডের সুনীল আকাশে ঘনিয়ে উঠছিল কালো মেঘ, বাতাসে ঝড়ের দোলা। পলিমাটির দেশের মানুষের হৃদয়ে হৃদয়ে ধ্বনিত হচ্ছিল মুক্তির মহামন্ত্র। নগর-শহর-বন্দর সর্বত্রই জনতার কন্ঠে এক আওয়াজ ধ্বনিত হচ্ছিল- ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর বাংলাদেশ স্বাধীন কর।’
স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। উৎসাহী ছাত্ররা যে যেখানে পারছিল সেখানেই লাঠি হাতে সম্ভাব্য যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। মিছিল-মিটিং ছিল নিত্যদিনের চিত্র। এদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক বিবৃতিতে সুস্পষ্ট ভাষায় বলেন, বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছা-অনিচ্ছাই আজ শেষ কথা।
এদিন পূর্ব পাকিস্তান থেকে প্রকাশিত দৈনিক পাকিস্তান (পরে দৈনিক বাংলা) নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়ে সম্পাদকীয় প্রকাশ করে। তৎকালীন পরিস্থিতিতে এটা ছিল বিরাট সাহসের ব্যাপার। পত্রিকা কালবিলম্ব না করে জনগণের দাবি মেনে নেয়ার জন্যও সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়। এদিকে শেখ মুজিব পূর্ব পাকিস্তানের প্রকৃত অবস্থা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার জন্য বিদেশি সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল। প্রতিদিনই ঘটছিল নানা ঘটনা। নবম দিনের মত চলছিল অসহযোগ ও হরতাল। এদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১০ মার্চ সংবাদপত্রে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বাংলাদেশের ইচ্ছাই চূড়ান্ত। সচিবালয়, সরকারি-আধা সরকারি প্রতিষ্ঠান, আদালত, রেলওয়ে ও বন্দরসহ সবাই আমাদের নির্দেশ মেনে চলছে’।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বিশ্ববাসী ও পশ্চিম পাকিস্তানের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন কোনো মানুষই পাকিস্তান সরকারের জুলুম, নির্যাতন ও সামরিক হস্তক্ষেপকে সমর্থন করেনি। তবুও তারা হঠকারী চক্রান্তে উন্মত্ত হয়ে সমরসজ্জা অব্যাহত রেখেছে। রংপুর ও রাজশাহীতে সান্ধ্য আইন চলছে। পুরো দেশে আজ তারা ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।’
মুক্তির নেশায় উদ্বেল বাঙালি ভয়-ভীতি তুচ্ছ করে ঝাঁপিয়ে পড়ে আন্দোলনে। নিরস্ত্র হয়েও পাকিস্তানের সুসজ্জিত সৈন্য বাহিনীর ওপর হামলা করা শুরু করে তারা। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান একাত্তরের আজকের দিনে এক সামরিক ফরমান জারি করেন।
ওই ফরমানে বলা হয়, বিক্ষুব্ধ জনতার উস্কানির মুখেও সেনাবাহিনী খুবই সংযত আচরণ করে চলেছে। সেনাবাহিনীর দৈনন্দিন খাদ্য সরবরাহেও বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সরকারের কাজকর্মে বাধা সৃষ্টি করা হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ফরমান জারির সঙ্গে সঙ্গে পুরো দেশেই তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়। জনমনে জ্বলে ওঠে বিক্ষোভের আগুন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বাধীনতা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ