পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঋতু বৈচিত্রে অভিভুত হয়ে লিখেছেন, ‘ও মা ফাগুনে তো আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে’। ঠাকুরগাঁওয়ের অবস্থা ঠিক একই রকম হলুদের চাদরে ঢাকা। সে সঙ্গে মিষ্টি এক গন্ধ বাতাসে ভাসছে। চারদিকে অবাধে বিচরণ মৌমাছিদের যেন তাদেরই রাজত্ব। মধু সংগ্রহ করছে মৌমাছি। লাভবান হচ্ছে মধু ব্যবসায়ী আর এর মূল উৎস আমের মুকুল। বিভিন্ন ধরনের আমের ফলন ঠাকুরগাঁওয়ে হয়ে থাকলেও এর মধ্যে সূর্যপুরী অন্যতম।
সূর্যপুরীর সুনাম রয়েছে ঠাকুরগাঁও ছাড়িয়ে পুরো দেশজুড়ে। চমৎকার স্বাদ আর সুমিষ্ট এবং ছোট আঠির আম একবার যার জিভের স্পর্শ পেয়েছে তাকে অবশ্যই আরেকবার এর স্বাদ পেতে ইচ্ছা করবে। বর্তমানে আম বাগানগুলো ঘুরে দেখা যায় ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন এলাকায় ৯০ ভাগ গাছে মুকুল মাথা উচুঁ করে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৬০ ভাগই সূর্যপুরী। আর আম বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত আম চাষীরা।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার পাড়–য়া গ্রামের আব্দুস সামাদ পান্নার কাছে সূর্যপুরী আম বাগান সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি হাসতে হাসতে বলেন, সে অনেক কথা। আমাদের বাগান অনেক প্রাচীন। কমপক্ষে ৬ বিঘা জমিতে ৬০টির মত সূর্যপুরী আমগাছ রয়েছে। এই আম অনেক সু-স্বাদু। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তাহলে আগের চেয়ে বেশী লাভ হবে বলে আশা করি।
একই উপজেলার মোরলহাট গ্রামের বাগানের মালিক আলহাজ¦ সালাউদ্দীন বলেন, ৪ বিঘার আম বাগানে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা আয় হয়। যদিও আমের মুকুল দেখেই গাছ বিক্রি হয়ে যায় তবুও চেষ্টা করেন নিজেই গাছগুলো থেকে আম বাজারজাত করতে।
সূর্যপুরী আম নিয়ে কথা। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হরিণমারী সিমান্তে মুন্ডুমুলা গ্রামের ২ বিঘা জমিতে দাঁড়িয়ে থাকা আম গাছটির কথা না বললেই নয়। কৃষি বিশেজ্ঞদের মতে এশিয়ার সবচেয়ে বড় আমগাছ এটি। এই আম গাছ দেখতে দূরদূরান্ত থেকে লোকজনের সমাগম প্রায় প্রতিদিনই দেখা যায়। উত্তরাধিকার সূত্রে আম গাছের মালিক ইসলাম উদ্দীন।
গত বুধবার ৪ নম্বর বড়গাঁও ইউনিয়নের মোলানীপুর গ্রামে বেকার যুবক মইনুলের আম বাগানে গিয়ে দেখা গেল তিনি বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত। ২ বিঘা জমিতে আম গাছের সংখ্যা প্রায় এক হাজার। যে হারে মুকুল এসেছে এবং আবহাওয়া ঠিক থাকলে ফলন ভালো হবে। তারপরও মইনুলের মত অনেকেই চিন্তিত। এর কারণ হচ্ছে গত বছর সূর্যপুরী আমের প্রতি কেজি মূল্য ছিল ৫ থেকে ৬ টাকা। যদি গত বছরের অবস্থা বিরাজ করে তাহলে সূর্যপুরী আম চাষে আগ্রহীরা নতুন করে এই জাতের আমগাছ লাগানো থেকে পিছু হটতে পারেন।
সূর্যপুরী আম গাছের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি উপ-পরিচালক আক্তার হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, সূর্যপুরী আমের অরিজিন হলো ঠাকুরগাঁও। কিন্তু সঠিক ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণের অভাবে এই আম চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে চাষীরা। ঠাকুরগাঁওয়ে যদি প্রক্রিয়াজাত সেন্টার করা যায় তাহলে আগ্রহ আবার আসতে পারে সবার মাঝে। নতুবা দুঃখজনক হলেও সত্য সূর্যপুরীর স্বাদ আর হয়ত পাবেন না দূরদূরান্তের লোকজন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।