Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

অঙ্গীকার ভাঙলে গণশত্রুতে পরিণত হবে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৭ এএম

যারাই অঙ্গীকার ভাঙবে তারাই গণশত্রæতে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, রাজনীতিতে ছলনা ও অঙ্গীকার ভঙ্গের জন্য এরা মানুষের কাছে গণশত্রæতে পরিণত হবে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্তের বিপরীতে গিয়ে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদের সংসদে শপথ নেওয়ার বিষয়ে তিনি একথা বলেন।
আদালতের নির্দেশ ও মন্ত্রীর প্রতিশ্রæতি এখনও কার্যকর হয়নি অভিযোগ করে রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে বর্তমান ম্যান্ডেটবিহীন সরকার। সুচিকিৎসার অভাবে তাঁর অসুস্থতা ভয়ংকর পর্যায়ে উপনীত হলেও তাঁকে ফেলে রাখা হয়েছে গুমোট স্যাঁতসেতে পরিত্যক্ত কারাগারে। এর ওপর প্রতিনিয়ত সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী নেতারা সমস্ত শিষ্টাচার, সুরুচিকে অবজ্ঞা করে দেশনেত্রীর অসুস্থতা নিয়ে কটূক্তি ও ব্যঙ্গ করে যাচ্ছেন। এটি কেবল মনুষ্যত্বহীন বিবেকবর্জিত মানুষদের দ্বারাই সম্ভব।
তিনি বলেন, আমাদের দলের সিনিয়র নেতারা গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করে দেশনেত্রীর পছন্দ মতো বিশেষায়িত হাসপাতালে সুচিকিৎসার জন্য দ্রæত ভর্তি করার আহŸান জানিয়েছেন। অত্যন্ত পরিতাপ নিয়ে বলছি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছিলেন-কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে শিগগিরই বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করে সুচিকৎসা করা হবে। তার আগের দিন নি¤œ আদালত হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বেগম খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তারপর তিনদিন চলে গেছে কিন্তু কোন উদ্যোগ নেই।
আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের সাথে খালেদা জিয়াকে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমরা নেত্রীকে নিয়ে প্রতি মুহুর্ত পার করছি উদ্বেগ-উৎকন্ঠা আর অজানা আশংকায়। এখানেই জিঘাংসার শেষ নয়, গত এক মাস ধরে তাঁর আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। সর্বশেষ গত ১০ ফেব্রæয়ারি দেশনেত্রীর সঙ্গে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎ করতে দেয়া হয়। এরপর গত ২৪ ফেব্রæয়ারি এবং গত ৩ মার্চ দুই বার তাঁর আত্মীয়-স্বজন এবং পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাতের জন্য আবেদন করলেও অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। দলের মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতারা গত দুই মাসে বহু চেষ্টা করেও বেগম জিয়ার সাথে সাক্ষাতের অনুমতি পাচ্ছেন না। কারাগার কর্তৃপক্ষ বারবার একই কথা বলছেন-‘হাই লেভেল থেকে অনুমতি না পেলে আমাদের কিছু করার নেই।
বিএসএমএমইউ-তে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার সুযোগ নেই তা প্রমাণিত হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপি’র পক্ষ থেকে বারবার বলে আসছি-বিএসএমএমইউ (পিজি)-তে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা ব্যবস্থার সুযোগ নেই। আমাদের দাবি কতখানি সত্য ছিল তা সুস্পষ্টভাবে প্রমানিত হলো। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গুরুতর অসুস্থ হয়ে বিএসএমএমইউ-তে ভর্তি হলে তাঁকে চিকিৎসা দিতে ল্যাব এইড থেকে ধার করে চিকিৎসা যন্ত্র নিয়ে আসতে হয়েছে। আরও উন্নত চিকিৎসা দিতে তাঁকে নেয়া হয়েছে সিঙ্গাপুরে। আমরা তো খালেদা জিয়াকে দেশেই বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার দাবি করে আসছি। অথচ সেই দাবি প্রতিহিংসার কারণে বারবার উপেক্ষিত হচ্ছে।
ভোটের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে রাখার কথা এখন স্বীকার করা হচ্ছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, গতকাল বুধবার সুনামগঞ্জে নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেছেন, আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই কোনো নির্বাচনে পূর্ব রাতে ভোট বাক্সে ব্যালট ভরে দেওয়া আর বরদাস্ত করা হবে না। তার মানে- একাদশ সংসদ নির্বাচনের পূর্ব রাতে ভোট বাক্সে ব্যালট ভরে দেয়া হয়েছিল, সেটা তিনি সরাসরি স্বীকার করলেন। এদিকে মহাজোটের শরিক নেতা বলেছেন-এবার রাতের বেলা নয়, দিনের বেলাতেই ভোট ডাকাতি হবে। এমনকি বিনা ভোটের নির্বাচনের হিড়িক শুরু হয়ে গেছে। এখন নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি সরকারের শরিকরাও পর্যায়ক্রমে আগের রাতে ভোট ডাকাতির কথা অকপটে স্বীকার করছেন।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শামসুজ্জামান দুদু, নাজমুল হক নান্নু, প্রফেসর সাহিদা রফিক, এবিএম মোশাররফ হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ প্রমূখ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ