Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

এখনো প্রেরণা জোগায় ৭ মার্চের ভাষণ : প্রধানমন্ত্রী

ঢাকায় রাসায়নিকের গুদাম নয়, শো-রুম থাকবে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৯ এএম

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণের আবেদন কখনো ফুরাবে না। এ ভাষণ যুগ যুগ ধরে থাকবে, এ ভাষণ এখনো আমাদের প্রেরণা জোগায়। এজন্যই এটি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাষণ। পাকিস্তানি বাহিনী পছন্দ করতো না বলে জিয়াউর রহমান এই ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিল। যারা একসময় এটাকে নিষিদ্ধ করেছে, ধীরে ধীরে তারা আস্তাকুড়েই যাবে।
গতকাল বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের ৭ মার্চের আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্ত্রী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বলে জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে দিকনির্দেশনামূলক ভাষণের মাধ্যমে অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করে, একটি জাতিকে যুদ্ধে এনে বিজয় করতে পেরেছিলেন যা ইতিহাসে একটি বিরল ঘটনা। তিনি জানান, পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের গণ-অভ্যুত্থানের রিপোর্ট সংগ্রহ করেছি, এটা ১৪ খÐে বের হবে। এ থেকে আপনারা সবই জানবেন। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস জানার জন্য এ বই যথেষ্ট হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭ মার্চের ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির অধিকারের কথা তুলে ধরেছিলেন। ত্যাগ স্বীকারের মহান প্রেরণা পাওয়া যায় তার এই ভাষণে। যে কারণে তার নেতৃত্বে সমগ্র জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুদ্ধের ময়দানে নামে। মুক্তিকামী সব মানুষের জন্য প্রেরণা ছিল ৭ মার্চের এই ভাষণ। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ যুগের পর যুগ চলছে, চলবে। তার ঐতিহাসিক ভাষণ এখনও মানুষের মধ্যে অনুপ্রেরণা জোগায়। এজন্যই এটি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাষণ। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বিজয়ের পর মাত্র সাড়ে ৩ বছর বঙ্গবন্ধু সময় পেয়েছিলেন। এরপর আমাদের জীবনে অমানিশার অন্ধকার। এমনকি এই ৭ মার্চের ভাষণও সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। পাক হানাদারদের পছন্দ ছিল না বলেই ’৭৫ পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিলেন জিয়াউর রহমান। পরবর্তীতে মিলিটারি ডিক্টেটররা একই পদাঙ্ক অনুসরন করে। যারা বঙ্গবন্ধুর ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিলেন তারা ধীরে ধীরে আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। ষড়যন্ত্রকারীরা, খুনিরা আমাদের দাবায়ে রাখতে পারে নাই, পারবে না।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করতে দেয়নি তখনকার পাকিস্তান সরকার। আজ সেই ভাষণ অমূল্য বিশ্বসম্পদ ও ঐতিহ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করে, তা সংরক্ষণ করার এবং বিশ্বকে জানানোর দায়িত্ব নিয়েছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেসকো)।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, সত্যকে কেউ অস্বীকার করে মুছে ফেলতে পারে না। জাতির পিতা যে কথা বলে গিয়েছিলেন, আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। ষড়যন্ত্রকারীরা, খুনিরা এখনও আমাদের দাবায়ে রাখতে পারে নাই, পারবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অসহযোগ আন্দোলনটাও যদি দেখেন, পৃথিবীর কেউ এমন অসহযোগ আন্দোলন করতে পারেনি। এমনকি ইয়াহিয়া খান বাংলাদেশে আসলে বাঙালি বাবুর্চিও রান্না করেনি। ৩২ নম্বর থেকে ফোন আসার পর রান্না করেন। কাজেই আপনারা বুঝতে পারেন জাতির পিতার নেতৃত্বে বাঙালি কতটা ঐক্যবদ্ধ ছিলো।
শেখ হাসিনা বলেন, ৭ মার্চের ভাষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন আমার মা। ওই দিন সকাল থেকে অনেক নেতা অনেক পরামর্শ দিয়েছেন। অনেকে চিরকুট রেখে গেছেন। দুপুরে খাবারের পর মা আব্বাকে বললেন, আপনাকে একটু রেস্ট নিতে হবে। তখন আব্বাকে বেডরুমে নিয়ে গেলেন। ১৫ মিনিট রেস্ট নেন। সেসময় মা আব্বাকে বলেছিলেন, অনেকে কথা বলেছে। আজকে তুমি তোমার মন যা বলবে, তাই বলবা। কারণ তোমার এই ভাষণের ওপর বাঙালির ভাগ্য নির্ধারণ হবে। তুমি যা ভালো মনে করবে বলবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য দেন।
ঢাকায় রাসায়নিক গুদাম নয়, শো-রুম
এদিকে গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নবনির্বাচিত মেয়র, ডিএনসিসি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুরান ঢাকা ও রাজধানীর অন্যান্য আবাসিক এলাকায় দাহ্য পদার্থের গুদাম অপসারণে সরকার কঠোর অবস্থানে। দাহ্য পণ্যের ব্যবসায়ীরা ঢাকায় শোরুম রাখতে এবং পণ্য বিক্রি করতে পারেন। কিন্তু তাদের গুদামের জন্য একটি সম্পূর্ণ পৃথক জায়গার ব্যবস্থা করবো যেখানে দাহ্য পদার্থ নিরাপদ থাকবে। তিনি বলেন, আমরা ব্যবসায়ীদের জন্য একটি পৃথক জায়গা খুঁজছি। আমরা তাদের ব্যবসা নষ্ট করতে চাই না। কিন্তু আবাসিক এলাকায় কোনো রাসায়নিক গুদাম থাকার অনুমতি পাবে না।
এর আগে ৭ মার্চ উপলক্ষে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে কিছুক্ষণ নীরবে দাড়িয়ে থেকে ঐতিহাসিক ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় আওয়ামী লীগ শীর্ষ নেতারা ছিলেন।
এরপর ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ, কৃষক লীগসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এসময় শ্রদ্ধা নিবেদন করে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ