Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

জনগণ ভালো থাকলে কিছু মানুষ অসুস্থ হয়ে যায়

২১ ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখনো ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। বাংলাদেশের জনগণ ভালো থাকলে কিছু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। দেশে যদি কোনো মার্শাল ল’ জারি হয়, অসাংবিধানিক শক্তি ক্ষমতা দখল করে, তখন তারা খুব শান্তিতে থাকে। কারণ তারা ক্ষমতার বাতাস পায়। সে আশায় তারা জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে।
গতকাল শুক্রবার বিকালে ২১ ফেব্রæয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টার ৬৪ নম্বর ওয়াহেদ ম্যানশনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ৬৭ জন নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতার শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই ভাষা আন্দোলন শুরু হয়, যার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতায় তিনি নেতৃত্ব দেন। মাতৃভাষার জন্য রক্ত দেয়া জাতি বিশ্বের মধ্যে কেবল বাঙালিই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো জাতিকে দুর্বল করতে হলে শত্রæপক্ষ প্রথমে তাদের ভাষা এবং সংস্কৃতির ওপরে আঘাত হানে। পাকিস্তানিরাও তাই করার চেষ্টা করেছিল। আমাদের ওপর উর্দু ভাষা চাপিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালের দেশভাগের জন্য পূর্ব বাংলার মানুষের অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি। তখন পাকিস্তানের চেয়ে পূর্ব বাংলার জনসংখ্যা ছিল বেশি। অথচ দেশভাগের পর পরই পাকিস্তানের করাচিতে যখন সম্মেলন হয় তখন সে সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, উর্দু ভাষা হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। এ সিদ্ধান্তের পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও গর্জে উঠেছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে এই বাংলা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আমাদের সবথেকে গৌরবের, ভাষার জন্য রক্ত দেয়া। সেই মাতৃভাষার ওপর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ একটি ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে জাতিকে নিঃশেষ করে দেয়ার চেষ্টা হয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭৫ এর পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তারা বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি, সাহিত্য, এমনকি এ জাতির অস্তিত্বেই বিশ্বাস করতো না। সেজন্য তারা যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন কোনো উন্নতি-অগ্রযাত্রা হয়নি এদেশের। আর যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারলো, তখনই দেশ ও জনগণের ভাগ্যোন্নয়ন হয়েছে। সেজন্য কৃতজ্ঞতা জানাই জনগণের প্রতি। তিনি বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে যে অত্যাচার-হত্যাকাÐ চালিয়েছে, তা একাত্তর সালের হানাদারদের মতো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন ঠেকানোর নামে তাদের সে তাÐব, জঙ্গিবাদী আচরণ, আগুন দিয়ে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যাÑ সেই ভয়াবহ স্মৃতি সবার মনে আছে। তাদের জনগণ ভোট দেবে কেন? ৫০০ এর মতো মানুষ মারা গেছে। যারা মানুষ পুড়িয়েছে, তাদের জনগণ ভোট দেয়নি। যারা নির্বাচনের মনোনয়ন নিলামে উঠিয়েছে, একটি দেশের হাইকমিশন থেকে মনোনয়ন নিতে হয়েছে যাদের, তাদের জনগণ ভোট দেয়নি। সবথেকে বড় কথা হলো, তারা যুদ্ধাপরাধীদের মনোনয়ন দিয়েছে। এদেশের মানুষ যুদ্ধাপরাধীদের ভোট দেবে না দেয়নি।
টানা তিনবারের মতো আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে সরকার গঠনের সুযোগ দেয়ায় জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা এদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় রূপান্তর করবো। শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছে। তাদের ভোটের মর্যাদা আমাদের রাখতে হবে। আমরা বাংলার মানুষকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধা থেকে মুক্তি দিতে কাজ শুরু করেছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দারিদ্র্য ও ক্ষুধা মুক্ত স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এজন্য ডেল্টা প্লান ২১০০ আমরা প্রণয়ন করেছি এবং এ লক্ষ্যে আমরা কাজ করেছি। মার্চ মাসে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জযন্তী ধুমধাম করে পালন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কালের কণ্ঠের সম্পাদক এমদাদুল হক মিলন, আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক, আবদুর রহমান, মহানগর নেতা একেএম রহমতুল্লাহ, স্থানীয় এমপি সাদেক খান ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপিকা মেরিনা জাহান কবিতা।

 



 

Show all comments
  • Mohammad RaZu ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫২ এএম says : 1
    আমার প্রশ্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেই জনগণ গুলো কারা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ যুবলীগ, যারা সাধারণ মানুষের ঘুম হারাম করে দেয়, যারা সাধারণ মানুষদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রাখে, যারা সাধারণ মানুষের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নেয়, ব্যক্তি স্বাধীনতা , কথা বলার স্বাধীনতা , যারা ভোটার অধিকার প্রয়োগ করার থেকে বঞ্চিত করে রাখে, যেখানে ভয় দেখিয়ে বলা হয় যদি ভিন্নমত পোষণ করো তাহলে তোমাকে হত্যা করা হবে জনগণ বলতে কি তারা , আপনি আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী কিন্তু আপনার প্রতি এক বিন্দু শ্রদ্ধা আসে না এক বিন্দু ভালোবাসাও মনে জাগে না কারণ আপনার মাঝে সততা সত্যতা মানবতা বলতে কিছুই নেই, আপনি নিজের প্রশংসা নিজেই করে যান আপনার সাফল্যের কথা আপনি নিজেই বলে যান, যেখানে আমরা আপনাকে অন্য চোখে দেখে, দেশ ডিজিটাল হওয়া মানে এই নয় যে মানুষ ডিজিটাল হয়ে গেছে আপনার জন্য একটি পরামর্শ রইলো দেশটাকে ডিজিটাল না করে মনটাকে ডিজিটাল করুন দেশটাকে পরিবর্তন না করে আগে নিজের মনটাকে পরিবর্তন করুন মানুষের সততা নিয়ে কথা না বলে আগে নিজের সততা কে ঠিক করুন মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন না করে আগে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করুন আগে নিজেকে জানুন ,আপনি কে ,আপনার মাঝে কতটুকু সততা আছে তারপর আপনার আশেপাশের মানুষগুলো কে জানার চেষ্টা করুন
    Total Reply(0) Reply
  • Abdul Kader ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫৩ এএম says : 1
    তাহলে সেই কিছু মানুষ কি আপনারা? আপনার কথা অনুযায়ি, আপনারাই সেই মানুষ সেই দল কারন আপনারা কখনই জনগনের ভাল চাননি, আপনারা চেয়েছেন শুধু ক্ষমতা,। তবে আজ সত্যি কথাটা আপনার মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেল........
    Total Reply(0) Reply
  • Ahmed Joynal ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫৩ এএম says : 1
    জনগণের ভোট ... করে আবার বড় বড় কথা বলেন লজ্জা লাগে না
    Total Reply(0) Reply
  • Shahidul Islam ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫৩ এএম says : 1
    Shame on you
    Total Reply(0) Reply
  • Neel Kosto ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫৩ এএম says : 0
    দেশের পুলিশ আর আওয়ামীলীগ একমাত্র জনগণ বাকি সব রোহিঙ্গা।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Rumel Ahmed ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫৪ এএম says : 1
    গোটা বাংলাদেশের মানুষ পুড়ে যদি মারা যাওয়া যায় এবং আমি নিজেও যদি মারা যাই কোন আফসোস থাকবে না, কারণ আমি জেনেছি আমি পুড়ে মরার জন্য বাংলাদেশে বাস করি, আমি রোড এক্সিডেন্ট এ মরার জন্য বাস করি ,আমি সন্ত্রাসীর গুলিতে মরার জন্য এ দেশে বাস করি আমি এদেশের দাবি আদায় করতে গিয়ে মরার জন্য বাস করি ,আমি এ দেশের বর্ডারে বিএসএফের গুলি খাওয়ার জন্য বাস করি, এদেশ শুধু আপনাকে মেরে ফেলতে পারবে বিনিময় কিছু দিতে পারবে না।।
    Total Reply(0) Reply
  • Nazrul Nazri ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫৪ এএম says : 1
    দিন দিন বাংলাদেশের মানুষ বিবেকহীন হয়ে যাচ্ছে তারা জানুয়ার এর মত আচার আচরন শুরু করেছেন
    Total Reply(0) Reply
  • Md Rezaul ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫৪ এএম says : 1
    হাসি নাকি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী..তাই স্বাস্থ্য ভাল রাখতে প্রধানমন্রীর কথা শুনুন প্রান খুলে হাসুন... আর স্বাস্থ্য ভাল রাখুন..!
    Total Reply(0) Reply
  • Nafis Nihal ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫৫ এএম says : 1
    জনগন ভোট দিতে চাইলে কিছু মানুষ তাহাজ্জুল নামাজ পড়ে ভোট দেওয়া শুরু করে।
    Total Reply(0) Reply
  • Nannu chowhan ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৮:৪৬ এএম says : 1
    Jonogon valo nei,valo ase shodhu aowamilig o tar onggo shongghoton golir lokjon,tara ja ichsa tai korte pare ayner urdhe othe....
    Total Reply(0) Reply
  • Habib Rahman ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৯:২০ এএম says : 1
    I never seen like prime minister Shaikh Hasina around world that she can do anything about her power. she continuously ill treating her won peoples. and oppressing opponent party except awamligue.. it is not a good sign for ruling party.
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৯:৫৯ পিএম says : 0
    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এখনও ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। বাংলাদেশের জনগণ ভালো থাকলে কিছু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। দেশে যদি কোনো মার্শাল ল’ জারি হয়, অসাংবিধানিক শক্তি ক্ষমতা দখল করে, তখন তাঁরা খুব শান্তিতে থাকে। কারণ তাঁরা ক্ষমতার বাতাস পায়। সে আশায় তাঁরা জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে।‘ তিনি আরও বলেছেন বিশ্বে কেবল বাঙালিই ভাষার জন্যে রক্ত দেয়া জাতি। আমি নেত্রীর এই কথার উপর নেত্রীকে আবারো বলতে চাই এখন আমাদের একমাত্র দাবী হবে আমরা বাঙালী জাতি এবং ’৭১ সালে আমরা বাংলা ভাষা ও বাঙালী জাতীয়তার উপর ভিত্তি করেই যুদ্ধ করেছিলাম কাজেই আমাদের সেই যুদ্ধকে আল্লাহ্‌ কবুল করেছেন মানে এই ভাষা আর জাতী সংবিধানে আসা দরকার ছিল ’৭২ সালে কিন্তু কামাল মিয়া সেটা করেনি। এখন আল্লাহ্‌র সেই সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়িত করার দায়িত্ব আপনার উপর। আমি লক্ষ করেছি আপনি এদিকেই আসছেন তাই আমি আপনাকে অগ্রীম ধন্যবাদ এই ইনকিলাব পত্রিকার মাধ্যমে দিলাম। আল্লাহ্‌ আপনাকে ক্ষমতা দিন আপনি আল্লাহ্‌র ’৭১ এর সিদ্ধান্তকে সংবিধানে রূপ দিন। আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ