Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রেরণার বাতিঘরের ৯১তম জন্মদিন আজ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

বিশিষ্ট ভাষা সৈনিক প্রফেসর আবদুল গফুরের ৯১তম জন্মদিন আজ। ১৯২৯ সালের এই দিনে তিনি বৃহত্তর ফরিদপুর (বর্তমান রাজবাড়ি) জেলার পাংশা থানার দাদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম হাজী হাবিল উদ্দিন মুন্সী এবং মাতা মরহুমা শুকুরুন্নেসা খাতুন। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী আবদুল গফুর তার সুদীর্ঘ বর্ণাঢ্য জীবনে নিজেকে একাধারে শিক্ষক, সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক ও সংগঠক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদানকারী এই সৈনিক পরবর্তীতে স্বায়ত্তশাসন আন্দোলনেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৪৭ সালে সাংবাদিকতা শুরু করা প্রফেসর আবদুল গফুর একমাত্র ব্যক্তি যিনি এখনো এই পেশার সাথে যুক্ত রয়েছেন এবং তার লেখনীর মাধ্যমে সর্বদা দেশকে দিয়ে যাচ্ছেন সঠিক পথের দিশা। বর্তমানে তিনি দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় ফিচার সম্পাদক হিসেবে রাখছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
মেধাবী ছাত্র আবদুল গফুরের শিক্ষা জীবনের শুরু হয় পিতার প্রতিষ্ঠিত গ্রামের মক্তবে। ১৯৪৫ সালে ফরিদপুর মইজুদ্দিন হাই মাদরাসা থেকে বাংলা ও আসামের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৪৭ সালে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (বর্তমান সরকারি কবি নজরুল কলেজ) থেকে ঢাকা বোর্ডে নবম স্থান লাভ করে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। ওই বছরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে অনার্সে ভর্তি হন। ছাত্র জীবনে তিনি তমদ্দুন মজলিসের সক্রিয় কর্মী হিসেবে জড়িয়ে পড়েন ভাষা আন্দোলন ও স্বায়ত্তশাসন আন্দোলনে। মিছিল, মিটিং ও সেমিনারে বক্তব্য দিয়ে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে ভূমিকা পালন করেন।
১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ফাইনাল অনার্স পরীক্ষার মাত্র দু’মাস আগে ভাষা আন্দোলনসহ তমদ্দুন মজলিসের কাজে সার্বক্ষণিক কর্মী হিসেবে আত্মনিয়োগ করার কারণে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। ফলে দীর্ঘ ১১ বছর পর ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁকে সমাজকল্যাণে এমএ ডিগ্রি নিতে হয়।
আর ১৯৪৭ সালে ছাত্রাবস্থায় তিনি পাক্ষিক জিন্দেগী পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতা জীবন শুরু করেন। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তমদ্দুন মজলিস প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক সৈনিক’ এর সহকারী সম্পাদক ও সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ভাষা আন্দোলনে সাপ্তাহিক সৈনিক পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে তাঁর ছিল অনন্য সাধারণ ভ‚মিকা। ১৯৫৭ সালে দৈনিক মিল্লাত এবং ১৯৫৮ সালে দৈনিক নাজাত-এ সহকারী সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় দৈনিক আজাদ-এর বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর ইংরেজি ডেইলি পিপল (১৯৭২-১৯৭৫)-এ এবং দৈনিক দেশ (১৯৭৯-১৯৮০)-এ সহকারী সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। দৈনিক ইনকিলাবের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ফিচার সম্পাদক হিসেবে তিনি কর্মরত আছেন।
তাঁর কর্মজীবনেও রয়েছে অনেক বৈচিত্র্য। ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে (১৯৬৩-১৯৭০) ও ঢাকার আবুজর গিফারী কলেজে (১৯৭২-১৯৭৯) অধ্যাপনা করেছেন ১৭ বছর। স্বাধীনতার পূর্বে ও পরে সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। ১৯৫৯ থেকে ১৯৬০ পর্যন্ত সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-এর পূর্বসূরী দারুল উলুম (ইসলামিক একাডেমি)-এর সুপারিন্টেন্ডেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর একবছর পূর্ব পাকিস্তান সরকারের সমাজকল্যাণ বিভাগের অধীনে চট্টগ্রামে জেলা যুব কল্যাণ অফিসার হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮০ থেকে ৮৯ সাল পর্যন্ত ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রকাশনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এই বিশাল কর্মময় জীবনে তিনি বাংলা ও ইংরেজিতে অনেক বই লিখেছেন। তিনি ভাষা আন্দোলনের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন তমদ্দুন মজলিস ছাড়াও বাংলা একাডেমী, নজরুল একাডেমী, আবুজর গিফারী সোসাইটি প্রভৃতি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০০৫ সালে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করেন।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভাষা সৈনিক

১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২
২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ