পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ ও উলামায়ে কেরাম বলেছেন, কুরআন ও সুন্নাহের শিক্ষাই প্রকৃত শিক্ষা। অথচ আমাদের ছেলেমেয়েদের নীতি নৈতিকতা ধ্বংসের জন্য বর্তমান হিন্দুত্ববাদ ও নাস্তিক্যবাদ পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করা হয়েছে। আর সেক্যুলার শিক্ষা আইন চালু করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহকে নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দুত্ববাদের সিলেবাস অনুসরণে বাধ্য করার চক্রান্ত হচ্ছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের এদেশে এ চক্রান্ত মেনে নেওয়া যায় না। এ ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে যা প্রয়োজন তাই করা হবে। আগামী প্রজন্মকে বিপদগামী হওয়া থেকে রক্ষা করতে সেক্যুলার শিক্ষানীতি ও প্রস্তাবিত শিক্ষা আইন বাতিল করে দেশের আলেম-উলামা ও ইসলামী স্কলারদের সমন্বয়ে একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করতে হবে। আমাদের নতুন প্রজন্মকে ধ্বংস করার সকল আয়োজন করা হবে আর ইসলামপ্রিয় তাওহিদী জনতা বসে থাকবে তা হবে না। আলেম-উলামা ও ইসলামী জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ চক্রান্ত প্রতিহত করবে।
গতকাল সকালে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আয়োজনে শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, আলেম-উলামাদের নিয়ে পুরানা পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সেক্যুলার শিক্ষানীতি, শিক্ষা আইন হিন্দুত্ববাদী সিলেবাস পর্যালোচনা শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তারা একথা বলেন।
দলের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইসমাইল নুরপুরীর সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদের সঞ্চালনায় গোলটেবিলে বৈঠকে আরো বক্তব্য রাখেন ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমির ড. মাওলানা ঈসা শাহেদী, জামিয়া মুহাম্মদিয়া মোহাম্মদপুর এর প্রিন্সিপাল মাওলানা আবুল কালাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আফজালুর রহমান, মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা রেজাউল করীম জালালী, ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমদ, মুসলিম লীগ মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, বাংলাদেশ আইম্মাহ পরিষদের সভাপতি মাওলানা মহিউদ্দীন রব্বানী, ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগর সভাপতি অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দীন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা কোরবান আলী, বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মাওলানা জিএম মেহেরুল্লাহ, প্রচার প্রকাশনা ও অফিস সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, বায়তুল আমান মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মাহমুদুর রহমান, বনানী জামিআ মুহাম্মদিয়ার ভাইস প্রিন্সিপাল মুফতি ওয়াজেদ আলী, মুফতি জুনাঈদ আহমদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ সম্পাদক মাওলানা মাহবুবুল হক, নির্বাহী সদস্য হাফেজ শহীদুর রহমান, ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মূসা, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক ডা. এস.এম সাখাওয়াত হোসাইন, ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ হারুনুর রশীদ, সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আব্দুর রহিম সাঈদ, যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় নেতা মুফতি মুহসিনুল হাসান প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা ইসমাইল নূরপুরী বলেছেন, প্রস্তাবিত শিক্ষা আইনের ১১ নং ধারার ২ নং উপধারায় বলা হয়েছে ‘নিবন্ধন ব্যতীত কোনো অবস্থাতেই কোনো বেসরকারি বিদ্যালয় বা মাদরাসা স্থাপন করা যাবে না।’ সেক্যুলার শিক্ষানীতি ও বির্তকিত শিক্ষা আইন হিন্দুত্ববাদী ও নাস্তিক্যবাদী পাঠ্যসূচি বাধ্যতামূলক করায় একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিলেই দেশের হাজার হাজার কওমী মাদরাসা বন্ধ করা হবে।
মাওলানা নেজামী বলেন, এদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান হলেও শিক্ষা আইন করা হচ্ছে নাস্তিক ও হিন্দুদের ফর্মুলায়। পৃথিবীর কোথায়ও এর নজির নেই। বর্তমান সিলেবাস শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইন কার্যকর হলে মাদরাসাগুলো সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। সুতরাং আগামী প্রজন্মের ঈমান ও চরিত্র রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ড. ঈসা শাহেদী বলেন, একটি দেশ ও জাতিকে ধ্বংস করার জন্যই এ শিক্ষানীতি ও আইন গ্রহণ করা হয়েছে। ইংরেজী প্রতিষ্ঠানে ও. এ. লেভেল তাদের নিয়ম মতে চলতে পারে, তাহলে মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থাও সতন্ত্রভাবে চলতে হবে।
মাওলানা ইউনুছ আহমদ বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভারতের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজন করার পর শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সিলেবাস সংশোধন করে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধর্মহীন, নাস্তিক ও হিন্দুত্ববাদের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সরকারের প্রশ্রয়ে হিন্দু ও নাস্তিক্যবাদী গোষ্ঠী সিলেবাস প্রণয়নের মাধ্যমে এদেশে হিন্দুত্ববাদ ও নাস্তিক্যবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ছাত্র ও যুব সমাজের ঈমান ও আমলের হেফাজত করতে না পারলে তাদের মুসলমানিত্ব থাকবে না। তাই বর্তমান শিক্ষা আইন বাতিলের দাবিতে রাজপথে কঠিন প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
মাওলানা মাহফুজুল হক বলেছেন, সিলেবাসে যেসব অবাঞ্ছিত বিষয় সংযুক্ত করা হয়েছে, তা ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে অপ্রয়োজনীয়। সেক্যুলার শিক্ষা ব্যবস্থা বাদ দিয়ে ৯২% মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে শিক্ষার সকল স্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। কাজী আবুল খায়ের বলেছেন, জাতিকে ধ্বংস করার জন্য দীর্ঘ পরিকল্পনা নিয়ে সরকার এগুচ্ছে। সেক্যুলার নীতি দেশের ৯৫ ভাগ মুসলমানের জন্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।