Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

শনিবারের সন্দেশ হারাতে বসেছে গ্রামীণ ঐতিহ্য ধানের গোলা

মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল, কুমিল্লা থেকে | প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

‘গোলা ভরা ধান, গোয়াল ভরা গরু আর পুকুর ভরা মাছ’। প্রবাদ বাক্যের সেই গোলার এখন আর দেখা মেলে না। দেখা যায় না গোলা ভরা ধান। কুমিল্লার গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী হাতে তৈরি বাঁশের ধানের গোলা এক সময় আপামর মানুষের কাছে ব্যাপক চাহিদা থাকলেও কালের পরিবর্তনে তা বিলুপ্তির পথে।
আশির দশকের দিকে ওইসব ধানের গোলা সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে নতুন ধানের সময় ব্যবহার হতো। মানুষের জীবনে-মানের পরিবর্তনের ফলে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে তাদের পারিবারিক ব্যাবহার্য উপকরণে। ফলে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের ধানের গোলার জায়গা দখল করে নিয়েছে পাটের বস্তা।
এগুলো তৈরি ঝামেলামুক্ত ও সহজে বাজারে পাওয়া যায় বলে মানুষ বাঁশের গোলার পরিবর্তে এসব আধুনিক উপকরণ ব্যবহারে দিনদিন অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশের গোলার কদর। গ্রাম বাংলার বাঁশের গোলার চাহিদা কমে গেলেও কুমিল্লার বরুড়ায় এখনো পাওয়া যায় বাঁশের গোলা।
সংসারের চাহিদা মেটানোর জন্য পরের বাড়িতে দিনমজুর কাজে নারীদের ব্যস্ত থাকতে হলেও অবসর সময়ে যেটুকু সময় পায় সে সময়ে বাঁশের গোলা তৈরি কাজে ব্যস্ত থাকেন। হারিয়ে যাওয়া গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী বাঁশের গোলা তারা নিজস্ব সংস্কৃতিতে আঁকড়ে ধরে রেখেছে।
তারা জানায়, আগের মত আর বাঁশের গোলা বিক্রি হয় না। অথচ কুমিল্লা জেলাজুড়ে কৃষকের ঘরে ঘরে এক সময় গোলায় ধান রাখা হতো। এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না। বিলুপ্তির পথে গ্রামীণ ঐতিহ্যের স্মারক এই গোলা। গোলার প্রবেশপথ রাখা হয় অনেক উপরে, যাতে খুব সহজে কেউ গোলায় উঠে ধান পাড়তে না পারে।
সরজমিন দেখা গেছে, একেবারে সরিয়ে না ফেলে এলাকার কোনো কোনো কৃষক বাড়ির উঠানে রেখে দিয়েছেন গোলা। তবে অযত্ম আর অবহেলায় পড়ে থাকা গোলাগুলোতে ধান রাখেন না তারা। তাদেরই একজন বাতেন মিয়া বলেন, এখন আর গোলায় ধান রাখার প্রচলন বা কদর নেই। ড্রাম-বস্তায় ধান রাখি। যে ধান পাই, তা তো বিক্রি করে আর বছর খোরাকিতেই ফুরিয়ে যায়। গোলায় রাখব কি? তবুও এগুলো বাড়িতে রেখে দিয়েছি। এক সময় এগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। জ্বালানি ছাড়া আর কিছুই করা যাবে না এগুলো দিয়ে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ