পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
৪৯২টি উপজেলায় ট্যাক্স অফিস হবে
রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কর হার কমানোর দাবি ব্যবসায়ীদের
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ব্যবসার পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার আন্তরিক। তিনি বলেন, আমার দরকার রাজস্ব আর আপনাদের দরকার ব্যবসায়িক পরিবেশ। আমাকে রাজস্ব দিন, পরিবেশ আমি নিশ্চিত করবো। একই সঙ্গে চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আহরণ টার্গেট দুই লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা। এটা অর্জন করতে হবে। তবে কাউকে কষ্ট দিয়ে ট্যাক্স আহরণ করা হবে না। সবার সঙ্গে উইন উইন অবস্থানে রাজস্ব আদায় করা হবে। সরকারের চাহিদা বেড়েছে। দেশের উন্নয়নে আমাদের রাজস্ব আহরণ বাড়াতে হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক ঋণে সুদের হার কমানো হবে, এটা না করলে ব্যবসা কঠিন হয়ে যাবে। একই সঙ্গে পুঁজিবাজারে তিন ধাপে ট্যাক্স কাটা হয়। এভাবে কয়েক ধাপে না কেটে একবারে কাটা হবে ট্যাক্স। এছাড়া পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সবকিছু করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্য সংগঠন ও ব্যবসা-বাণিজ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভ‚ঁইয়াসহ বিভিন্ন বাণিজ্য ও ব্যবসায়িক সংগঠনের প্রতিনিধিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা রাজস্ব বোর্ডের ওপরে ট্যাক্স টার্গেট বসিয়ে দেবো না। তারা কি পরিমাণে কর আদায় করবে, সেটা আমাদের জানাবে। ৪৯২টি উপজেলায় ট্যাক্সের অফিস হবে। রাজস্ব আদায় বাড়াতে জনবল বৃদ্ধিসহ আধুনিকায়ন করা হবে এনবিআরকে। ট্যাক্স হার না বাড়িয়ে নেট বাড়ানো হবে। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ সম্পর্কে আমি যা বলছি, তা-ই বাস্তবায়ন হবে। বলার পরে খেলাপি ঋণ বাড়েনি। এটা ডেইলি বেসিসে হয় না। খেলাপি ঋণ কমানো হবে। এটা না করলে ব্যাংকিং খাত দুর্বল হয়ে পড়বে।
দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে বেসরকারি খাতের বিকল্প নাই। দেশের উন্নয়নে বেসরকারি খাতের অবদান ৮০ থেকে ৮২ শতাংশ। সবার কথা শুনবো। আশা করি আপনারা কেউ খালি হাতে যাবেন না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি খাতের কিছু চ্যালেঞ্জ আছে সেগুলো আমরা শক্ত হাতে মোকাবেলা করতে চাই। আমরা সবাই সরকারের অংশ। সবার সহযোগিতায় দেশ সামনে এগিয়ে যাবে। এই গুরুত্বপূর্ণ খাত ধরেই সামনে এগিয়ে যেতে চাই ।
মুস্তফা কামাল বলেন, বেসরকারি খাত দেশের উন্নয়নে বড় একটি খাত। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এখাতের দায়িত্ব সালমান এফ রহমানের (প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা) হাতে দিয়েছেন। আপনারা সবাই সালমান এফ রহমানকে সহযোগিতা করবেন। বেসরকারি খাতকে এগিয়ে নিতে হবে। আপনাদের সবার মতামত আমি শুনবো। আপনাদের কথা আপনারা কেউ খালি হাতে এখান থেকে যাবেন না। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা সবাই সরকারের অংশ। দেশের জন্য কাজ করবো। দেশের সমসমায়িক চাহিদা মেটাতে নতুন নতুন চিন্তা ধারা নিয়ে কাজ করবো।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, গত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের অকল্পনীয় উন্নয়ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘এখন আমাদের পরবর্তী লেভেলে যেতে হবে।’ তবে পরবর্তী লেভেলে যাওয়াটা আমাদের জন্য কঠিন হবে। দেশের উন্নয়নে বেসরকারি খাত মূল চালিকা শক্তি। একই সঙ্গে আমরা কিন্তু সবাই পার্ট অব দ্য পার্লামেন্ট (সংসদের অংশ)। আপনাদের নিয়েই আমরা এগোতে চাই। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বেসরকারি সেক্টর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বেসরকারি খাতের ওপর নির্ভর করে আমরা এগোতে চাই।
এদিকে চলতি অর্থবছরে সরকার রাজস্ব আদায়ে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, সেটার জন্য অনুকূল পরিবেশ চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এজন্য তারা কর হার কমানোর দাবি জানিয়েছেন।
বৈঠক শেষে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, হয়রানি মুক্ত বিনিয়োগ পরিবেশ আমরা চাই। সরকার চায় বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে দুই লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব লক্ষ্য পূরণ। এই দুইয়ের মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে এক যোগে কাজ করতে চাই। আমরা আশ্বাসের উপর বিশ্বাস রাখতে চাই। সমস্যাগুলো সমাধানে করণীয় নির্ধারণ করবেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। অনেক ক্ষেত্রে ডাবল ট্যাক্স, দুই তিনবার ট্যাক্সও দিতে হয়। এক্ষেত্রে মন্ত্রী বলেছেন, ট্যাক্স কমিয়ে এনে করনেট বাড়িয়েও লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব।
‘আমাদের এসডিজি অর্জন করতে হবে, মধ্যম আয়ের দেশ হতে হবে, সেখানে ৮২ শতাংশ অবদান বেসরকারি খাতের। বিদ্যুৎ খাতের ৫৬ শতাংশ অবদান বেসরকারি খাতের। সো এভরি হোয়ার, ইট ইজ অ্যা প্রাইভেট সেক্টর ল্যান ইকোনমি অর্জন ছাড়া কোনো ব্যত্যয় আছে বলে আমি মনে করি না। এটা করতেই হবে, না করলে আমাদের দেশের যে সম্ভাবনা আছে, সেই কাঙ্খিত মাত্রায় আমরা উন্নয়ন ঘটাতে পারব না। যেটি প্রধানমন্ত্রী একান্তভাবে চান’, যোগ করেন এবিসিসিআই’র সভাপতি।
একক সুদ হার কার্যকর না হওয়ার বিষয়ে মহিউদ্দিন বলেন, এ ব্যাপারে আমি বলব- আস্থার কোনো বিষয় নাই। এখন সময় কার্যকরের। এটার ম্যাকানিজম কী হবে, সেটা ওনারা ভেবে দেখবেন। এবং অচিরেই করতে হবে। নাহলে বিনিয়োগের যে মোমেন্টাম আছে, সেটা বিঘিœত হবে।
উল্লেখ্য, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যবসা ও শিল্প-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে করণীয় নির্ধারণ করতে প্রথম পর্বের ধারাবাহিক আলোচনায় বসেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।