Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

খেলাপিদের বিরুদ্ধে শক্ত আইন ও সামাজিক বয়কট চান ব্যাংকাররা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

অনিয়ম অব্যবস্থাপনা ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বিতরণ করা ঋণ আর আদায় হচ্ছে না। ফলে বেড়েই চলছে খেলাপি ঋণ। এতে করে পুরো ব্যাংকিং খাত এখন নড়বড়ে অবস্থা। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমনকি সরকারও। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল বুধবার খেলাপি ঋণ কমাতে একটি পরামর্শক সভার আয়োজন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে সভায় বাংলাদেশ আইন কমিশনের চেয়ারম্যান সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বিএম খায়রুল হকসহ কমিশনের সব সদস্য ও তফশিলি ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় থাকা একাধিক কর্মকর্তা জানান, সভায় এমডিরা খেলাপি ঋণ বাড়ার বাস্তব দিকগুলো তুলে ধরেন। কেন ঋণ আদায় করা যাচ্ছে না সেটিও তারা জানান। খেলাপি ঋণ কমাতে কঠোর আইন করার পাশাপাশি বিদ্যমান আইন সংস্কারের পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের সামাজিক বয়কট চান। আলোচনায় দেশে খেলাপি ঋণ কমাতে চাইলে শক্ত পদক্ষেপের বিকল্প নেই বলে সবাই মত দেন। তবে সবই নির্ভর করবে সরকারের মনোভাব ও সিদ্ধান্তের ওপরে। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া কঠোর ভাবে কোন পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে না আলোচনায় উঠে আসে।
সভায় ব্যাংকের এমডিরা খেলাপি ঋণ আদায় করতে হলে সামাজিক চাপ তৈরি করার সুপারিশ করেন। তারা বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশে এমন চর্চা রয়েছে। ঋণ খেলাপিরা ব্যাংকের দায় পরিশোধ করবেন না, কিন্তু বিলাসি জীবন যাপন করবেন সেটি যাতে না হয়। তাদের পাসপোর্ট নবায়ন আটকে দেওয়া যেতে পারে। দেশের বাইরে যাতে ভ্রমনে যেতে না পারেন। এমনকি দেশের ভেতরে প্লেন টিকিট যাতে কিনতে না পারেন।
আলোচনা হয়, ঋণ খেলাপিদের সন্তানদের ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ আটকে দেওয়া যেতে পারে। তাছাড়া এসব ব্যক্তি যাতে গাড়ি কিনতে না পারেন, বাড়ি কিনতে না পারেন সেটি কিভাবে করা যায় ভাবার সময় এসেছে। জানা যায়, বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষেও বেশ কিছু সুপারিশ ওঠে এসেছে। ঋণ পুনঃতফশিলিকরণসহ মন্দ ঋণ বেচাকেনার পদ্ধতি চালুর বিষয়টি আলোচনায় নিয়ে আসা হয়।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আজকে আমরা খেলাপি ঋণ নিয়ে সভাটি হয়েছে। এখানে খেলাপি ঋণ কিভাবে কমানো যায় সেটি ওঠে এসেছে। আলোচনা শুরু হলো। আলোচনা চলবে। তিনি বলেন, খেলাপি ঋণ কমাতে বিদ্যমান আইনগুলো যদি সংস্কার ও যুগপোযোগী করার দরকার পরে সেটি করা হবে। আমরা নিজেরাও পর্যবেক্ষণ করছি এবং ব্যাংকার আজ জানিয়েছে, ব্যাংক কোম্পানি আইন, অর্থ ঋণ আদালত আইন ও দেউলিয়া আইনের কিছু বিষয় সংস্কার দরকার। কারণ অনেকেই ব্যাংকের দায় পরিশোধ না করে আদালতে চলে যাচ্ছেন। সেখান থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসছেন।
মুখপাত্র আরোও বলেন, এখানে কোন পক্ষ যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেটি বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। ব্যবসায়িরা যাতে হয়রানি না হন। তবে ইচ্ছেকৃত খেলাপিদের ধরা হবে। ইচ্ছেকৃত খেলাপি কিভাবে সনাক্ত করা হবে প্রশ্নে এই কর্মকর্তা জানান, ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করেন না কিন্তু বিলাসি জীবন যাপন করছেন এরাই ইচ্ছেকৃত খেলাপি। ব্যবসা করেন ভালো কিন্ত ঋণ পরিশোধ করেন না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ