Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

একটি উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি বাংলাদেশ

সংসদে অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল (লোটাস কামাল) বলেছেন, বাংলাদেশ একটি উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি। বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশ ‘নেক্সট ইলেভেন (এন-১১)’ দেশের অন্তর্ভূক্ত। বিশ্বে পোশাক রফতানিকারক দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। দেশে কৃষিক্ষেত্রে যান্ত্রিক পদ্ধতির ব্যবহার আগেই শুরু হয়েছে।
শিল্প এবং সেবা খাত ক্রমান্বয়ে সম্প্রসারিত হচ্ছে। আমাদের মানব সম্পদ দেশের ভেতরে এবং বাইরে থেকে অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রেখে চলেছে। তিনি বলেন, একটি দক্ষ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ পুঁজিবাজার যেকোনো দেশের শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গতকাল মঙ্গলবার সংসদে অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদনে একথা জানান। এর আগে তিনি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদন, ২০১৬-১৭ সংসদে উপস্থাপন করেন। প্রতিবেদনে লোটাস কামাল জানান, বাংলাদেশ বিশ্ব অর্থনীতিতে এন-১১ দেশের অন্তর্ভূক্ত হলেও এ দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর ব্যাপক সুযোগ এখনও অব্যবহৃত রয়ে গেছে। কারণ বর্তমানে বাজার মূলধন ও জিডিপির অনুপাত মাত্র ১৯.৪৩ শতাংশ যা অনেক উন্নত দেশে শতভাগেরও বেশি। প্রতিবেদনে মন্ত্রী কতিপয় এশিয়া প্যাসেফিক দেশের বাজার মূলধনের তুলনায় জিডিপির অনুপাতের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে বলেন, দেশের আর্থিক ব্যবস্থার প্রধান দু’টি শাখা হচ্ছে মুদ্রাবাজার ও পুঁজিবাজার। কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পুঁজিবাজারের ভূমিকা ব্যাপক। সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন সকল স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পুঁজিবাজারের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জন্য যেমন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তৈরী হয়েছে, তেমনি পুঁজিবাজার শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিকাশে দীর্ঘ মেয়াদে পুঁজির সরবরাহ নিশ্চিত করছে। এতে জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও সামাজিক উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে।
সংসদে উপস্থাপিত প্রতিবেদনটিতে অর্থমন্ত্রী জানান, বর্তমানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জেন মোট শেয়ার হোল্ডার সংখ্যা ২৫০, যাদের মধ্যে ২৪১টি স্টেকহোল্ডার কমিশন থেকে সিকিউরিটিজ লেনদেনের জন্য নিবন্ধন সনদ পেয়েছে। তিনি জানান, ২০১৭ সালের ৩০ জুন তারিখ পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত সিকিউরিটির সংখ্যা ৫৬৩টি, যার বিপরীতে ইস্যুকৃত মূলধন ১১৬৫৫১.০৮ কোটি টাকা।

এডিবির কাছে আরও সহায়তা চাইলেন অর্থমন্ত্রী
দ্বৈতকর প্রত্যাহারের প্রস্তাব ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের

এডিবির কাছে আরও সহায়তা চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি জানান, নতুন সরকারের উন্নয়ন ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে অতীতের মতো বিভিন্ন প্রকল্পে এখনও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তা চাওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার শেরেবাংলা নগরের অর্থমন্ত্রীর দফতরে এডিবি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, যেসব প্রকল্পে আমরা তাদের সহযোগিতা পাচ্ছিলাম, এগুলো চলমান থাকবে। পাশাপাশি নতুন এলাকায়ও আমরা তাদের সহযোগিতা পাব। আমরা সেগুলো আলাপ করেছি।
সাক্ষাৎ শেষে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ বলেন, আমরা এক সঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবো। বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা খুব ভাল। এ অবস্থা ধরে রাখতে এডিবি সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি। তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ে এসেছেন। আশা করি, অনেক দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নে আমরা তার সহযোগিতা পাব। আমরা বৃহৎ অর্থনৈতিক বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা করেছি। বাংলাদেশ খুবই ভালো করছে। আমরা আরও নিবিড়ভাবে কাজ করতে চাই।
অন্যদিকে অর্থমন্ত্রীর কাছে দ্বৈতকর প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন। গতকাল রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কার্যালয়ে তার সঙ্গে দেখা করে এই প্রস্তাব দেন সংগঠনটির নেতারা। সেইসঙ্গে বীমা খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন দাবি দাওয়াও তুলে ধরেন তারা।
অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সংগঠনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। তিনি বলেন, মন্ত্রী বলেছেন সমস্যা সমাধানে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের সঙ্গে বসবেন। ভ্যাট, ট্যাক্স ইত্যাদি নানা সমস্যা রয়েছে। রিইন্স্যুরেন্স কমিশনের উপর দ্বৈত ভ্যাট রয়েছে। এটা ঠিক নয়।
এ সময় অর্থমন্ত্রীর কাছে নিজেদের বক্তব্য ও দাবি লিখিতভাবে তুলে দেন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। সেখানে যেসব দাবি জানানো হয়েছে সেগুলো হলো-বাধ্যতামূলক বীমা করণ, ব্যাংকের ঋণগ্রহীতাদের জীবনবীমা পলিসি বাধ্যতামূলক করা, জীবন বীমা পলিসি হোল্ডারদের মুনাফার উপর ৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্স কর্তন না করা এবং মাইক্রোফিন্যান্স ইনস্টিটিউট এর বীমা করার অধিকার রহিত করা ইত্যাদি
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০১৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী দেশের সকল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পলিসি হোল্ডারদের মুনাফার উপর ৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্স আরোপ করার ফলে দেশের সকল লাইফ ইন্স্যুরেন্স এর পলিসি হোল্ডারদের সংখ্যা কমে গেছে। গ্রাম-গঞ্জের ক্ষুদ্র পলিসি হোল্ডারদের ঝুঁকির বিষয় মুনাফার সম্পর্কে সুবিধার কথা বুঝিয়ে তারপর পলিসি বিক্রি করা হয়। ক্ষুদ্র পলিসি হোল্ডারদের মুনাফার উপর ৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্সেও যে বিধান চালু হয়েছে তা যদি উঠিয়ে নেওয়া না হয় তাহলে দেশে লাইফ ইন্স্যুরেন্স এর ব্যবস্য প্রতিনিয়ত কমতে থাকবে এবং কোম্পানিগুলোর পক্ষে টিকে থাকা কষ্ট হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অর্থমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ