Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সব ধরনের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করুন

পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

সব ধরনের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেক মামলা সময়মতো নিষ্পত্তি হয় না। আপনারা যারা মামলাগুলো পরিচালনা করেন সেখানে অনেক ঘাটতি থাকে। এসব মামলার ওপর এমনভাবে নজরদারি করা উচিত, যেন সঠিকভাবে দ্রুত নিষ্পত্তি হয়। সে লক্ষ্যে আপনাদের বোধহয় বিশেষ একটা উদ্যোগ নেয়া উচিত এবং এ ক্ষেত্রে আপনাদের একটা টিমই থাকা উচিত। পুলিশ সপ্তাহ-২০১৯ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দেয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। এ সময় পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের বক্তব্যে আরো ৫০ হাজার পুলিশ নিয়োগ, মাদক মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিকরণে আলাদা ট্রাইব্যুনাল, মাদক সংশোধনাগারের সংখ্যা বৃদ্ধি, মাদকবিরোধী অভিযানের জন্য বিশেষ ইউনিট প্রতিষ্ঠা, কূটনৈতিক মিশনগুলোতে পুলিশ কর্মকর্তা নিয়োগের দাবি জানান।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, অনেক সময় দেখা যায়, এফআইআর করে ফেলে রাখা হয়েছে। সেগুলোকে চার্জশিট দেয়া, অভিযোগ করা, সাক্ষী নিয়ে আসার কাজগুলো অনেক সময় ঠিকমতো করা হয় না। আর কোর্টে গেলেও সেটি বছরের পর বছর আটকে থাকে। সেখানে আবার আইনজীবী লাগে অথবা সরকার পক্ষ থেকেও লোক লাগে। এই বিষয়গুলোর জন্য আমার মনে হয়, একটা আলাদা ব্যবস্থা নেয়া দরকার। কিভাবে মামলাগুলো যথাযথভাবে চলবে এবং সময়মতো মামলাগুলো সম্পন্ন হবে, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।
জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস বাংলাদেশের একার সমস্যা নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের একটা স্ট্র্যাটেজি থাকতে হবে। কিভাবে কোথায় কখন কোন জায়গা থেকে আমাদের ওপরে হামলা করতে পারে, এ রকম সম্ভাবনা আছে কি না? গোয়েন্দা নজরদারিও যেমন বাড়াতে হবে, পাশাপাশি এ ধরনের একটা স্ট্র্যাটেজি নিয়েই সব সময় আমাদের আরো ট্রেনিং এবং প্রস্তুত থাকা দরকার। শেখ হাসিনা বলেন, এরই মধ্যে সাইবার নিয়ন্ত্রণ ক্রাইমের আইনও করে দিয়েছি। যেটা নিয়ে বেশ হইচই, অনেকে সেটার বিরুদ্ধে কথা বলে, কিন্তু বাস্তবতা হলো, এ আইনটি একান্তভাবে করা হয়েছে মানুষের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য। যারা নিরীহ সাধারণ জনগোষ্ঠী, তাদের যে মানবাধিকার রয়েছে, সেটি সংরক্ষিত করার জন্যই এ আইনটি আমরা করেছি। এটি মানুষের অধিকার রক্ষা, মানুষের জীবনমান বাঁচানোর জন্যই করা। তাই পুলিশ বাহিনীকে এসব তদন্ত করে সঙ্গে সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত, গ্রেফতার এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। এ ছাড়া, সারা দেশে বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রতিটি এলাকায় বিশেষায়িত পুলিশ ইউনিট করে দেয়া হয়েছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে তাৎক্ষণিক দ্রুত অ্যাকশনে যাওয়ার সক্ষমতা অর্জনসহ এর ওপর বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ বেশি প্রয়োজনের ওপরও গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমি এটুকু বলব, আমাদের পুলিশ বাহিনী অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সব অবস্থা মোকাবেলা করেছে। জঙ্গিবাদ দমন থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রে আপনারা যে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন, সেজন্য আমি আপনাদেরকে সাধুবাদ ও ধন্যবাদ জানাই।
পুলিশকে জনবান্ধব হতে হবে
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানুষের শান্তি রক্ষায় পুলিশকে জনবান্ধব হয়ে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মানুষের ভেতর আস্থা ও বিশ্বাস সৃষ্টি করার কথাও বলেন। তিনি বলেন, পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের বলব, পুলিশকে হতে হবে জনবান্ধব পুলিশ, যেটা জাতির পিতা নির্দেশ দিয়ে গেছেন। স্বাধীনতার পর তিনি (বঙ্গবন্ধু) কিন্তু এ কথাই বলে গেছেন যে, এখন আর ঔপনিবেশিক শক্তি নয়, সেই ব্রিটিশ আমলও নয়, পাকিস্তান আমলও নয়, এটা বাংলাদেশ। আর এই দেশের গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে আছে এই পুলিশেরই বাবা-মা, ভাই-বোন সবাই। মানুষ যদি শান্তিতে থাকে, নিরাপদে থাকে; নিজের পরিবারও নিরাপদে থাকবে, শান্তিতে থাকবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হলে নিজের পরিবারেরই উন্নতি হবে। প্রত্যেক পুলিশ সদস্যকে এ কথাটিই মেনে চলতে হবে এবং সেভাবেই দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। মানুষের ভেতর আস্থা-বিশ্বাস সৃষ্টি করতে হবে। মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। আপনাদের বেতন-ভাতা বাড়িয়েছি। যা যা দাবি করেছেন সবই মেনে নিয়েছি। সব সময় লক্ষ রাখতে হবে, দুর্নীতি একটা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আর মাদক একটা পরিবার নয়, একটা দেশকেই ধ্বংস করে। এ ধরনের কাজ যেন আর না হয় বাংলাদেশে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মোখলেছুর রহমান, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম ও ডিএমপির ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার।



 

Show all comments
  • Auranzeb Khan ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৪:২০ এএম says : 0
    আইন করে সময় নি ধারণ করলে পুলিশ দ্রুত কাজের অগ্রসর হবে।বড় পদের কম' কতাদের দুইবছর পর বদলাতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Alam ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৪:২০ এএম says : 1
    বিএনপি জামায়াতকে তড়িঘড়ি আটকানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে না তো
    Total Reply(0) Reply
  • Robiul Islam ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৪:২১ এএম says : 0
    মনে হচ্ছে ১০০০ নতুন জেল লাগবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Nosir Hossain ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৪:২২ এএম says : 0
    আলহামদুলিলাহ হে আল্লাহ রহমত কর @ আমিন
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Kowaj Ali khan ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৫:১৫ এএম says : 1
    এখনকার চুরির মামলা কবে হইতেছে ? আর এত সব খোন আর এত সব গুম। মগের মুল্লুক। এই খবর রাখেন? ভারত বাংলাদেশের নীরীহ মানূষ হত্যা করে।.................
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৮:৪৭ এএম says : 0
    পুলিশ কূটনৈতিক মিশন গুলোতে কর্মকর্তা নিয়োগের দাবী জানিয়েছেন!!!! এটা পড়ে আমি কল্পনাতীত আশ্চার্য হয়েছি কারন আন্তর্জাতিক দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমেই প্রতিটি দেশের কূটনৈতিক দপ্তর থাকে। সেখানে পুলিশের কোন আধিপত্য থাকেনা কাজেই তারা তাদের কোন মনমানি সেখানে করতে পারেনা। নিন্দুকেরা বলছে ‘পুলিশ এবারের নির্বাচনে সরকারের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদের বানিজ্য বৃদ্ধির জন্যে এবং অযথা ভাবে যাতে বিদেশী নাগরিকদেরকে নাজেহাল করে তাদের মনমানি করতে পারে তারজন্যে পুলিশ এই অনুমতি চাচ্ছে। এটা কতবড় সাহসের কাজ সেটা বিশদ ভাবে বুঝার জন্যে গবেষনার বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে।‘ নিন্দুকেরা আরো বলে, ‘এমনিতে পুলিশ ইতিমধ্যে দেশের রাজা হয়েগেছে জনগণকে তাদের খেয়াল খুশিমত ব্যাবহার করছে (পূর্বের দিনের জমিদারদের যেভাবে প্রজাদের সাথে ব্যাবহার করতো আমরা বইতে সেইসব অত্যাচারের ঘটনা পড়েছি)। কিন্তু কূটনৈতিক মিশনের কারনে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এখনো পুলিশ পূর্ণ রাজা হতে পারেনি তাই বিদেশে তাদের রাজপুত্র বা পৌষ্যদেরকে ইচ্ছা মত পাঠাতে পারছেনা।‘ নিন্দুকেরা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলে ‘এবার পুলিশ সরকারের আইন অপশক্তিকে প্রতিহত করার কাজ সঠিক ভাবে করে বর্তমান সরকারি দলের নৈকট্য লাভ করেছে এখন দেশের পূর্ন রাজা হতে যেটু বাকী ছিল সেটা পুরোনের জন্যে এখন পুলিশ কূটনৈতিক মিশনের উপর হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নিচ্ছে।‘ এসব কথা আজকাল প্রচুর আলোচিত হচ্ছে তাই আমি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলতে চাই আমরা মুক্তিযোদ্ধার পুলিশকে দেশের রাজা বানানোর জন্যে ’৭১ জীবন দিয়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করিনি এটা অবশ্যই নেত্রী হাসিনাকে স্মরণ রাখতে হবে। কাজেই পুলিশ যাতে সাধারন মানুষের সাথে রাজার মত করে ব্যাবহার না করে সেইভাবেই পুলিশকে পরিচালিত করতে হবে নেত্রী হাসিনাকে। ...... তাই আমার অনুরোধ আপনার কাছে (নেত্রী হাসিন) আপনি একজন মুক্তিযোদ্ধার নালিশের উপর নজর দিন এবং পুলিশ যাতে বিদেশী পাসপোর্টধারীদের সাথে সঠিক ব্যাবহার করে। আল্লাহ্‌ আমাকে সহ সবাইকে আল্লাহ্‌র হেকমত জানার, বুঝার ও সেইভাবে কাজ করার ক্ষমতা প্রদান করুন। আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ