পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের জামপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের কৃষকের তিন ফসলি জমির মাটি জোরপূর্বক কেটে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী মহল ও প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে গঠিত একটি সিন্ডিকেট কিছু কৃষি জমি ক্রয় করে অন্যান্য কৃষি জমির মাটি জোরপূর্বক কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করছে বলে জানা যায়।
এলাকার অনেকের অভিযোগ, প্রতিদিনই ফসলি জমির মাটি ভেকু দিয়ে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ ফুট গর্ত করে কেটে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে পাশের জমির মাটি এমনিতেই ভেঙে গর্তে পড়ে যাচ্ছে। তাই পার্শ্ববর্তী জমির মালিকদের বাধ্য হয়েই জমির মাটি বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে করে ধীরে ধীরে পাশ্ববর্তী জমিও অনাবাদি হয়ে পড়ছে। অপরিকল্পিতভাবে মাটি কাটার ফলে মাছ চাষও করা যাচ্ছেনা এসব জমিতে। ফসলি জমি রক্ষায় কৃষকরা মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন সুফল পাচ্ছেন না। এভাবে ফসলি জমির মাটি বিক্রি করে কয়েক বছরে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী। এতে ফসলি জমি পরিণত হচ্ছে ডোবা ও অপরিকল্পিত পুকুরে।
জামপুর ইউনিয়নের পেরাব, কাহেনা, সিংলাব, পেচাইন, পাকুন্দা ও রাউৎগাঁও মৌজার বিস্তৃর্ণ এলাকার প্রায় দুই হাজার বিঘা ফসলি কৃষি জমি থেকে ইতিমধ্যে ৩০০ বিঘার মাটি দুর্বৃত্তরা কেটে নিয়ে গেছে। ওই এলাকার ফসলি জমির মাটি কাটা শেষ হয়ে যাওয়ায় পর বস্তল, সেকেরহাট, মহজমপুর উত্তরকাজিপাড়া ও তালতলা এলাকায় কৃষি জমির মাটি কাটছে তারা।
জানা যায়, ২০-২৫ জনের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট ফসলি কৃষি জমির মাটি জোরপূর্বক কেটে নিয়ে ইটভাটায় বিক্রি করে দিচ্ছে। স্থানীয় জমির মালিক ও কৃষকদের অভিযোগ, মাটি এতটাই গভীর করে কেটে নিয়ে যায় যে কেউ দেখলে পুকুর না বলে উপায় থাকবে না। তাদের মতে প্রতিটি জমি ভেকু দিয়ে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ ফুট গর্ত করে কেটে নিচ্ছে মাটি সন্ত্রাসীরা। ফলে পাশের জমির মাটি এমনিতেই ওই গর্তে পড়ে যায় এবং তা বিনা টাকায় ও বিনা অনুমতিতে নিয়ে যায় তারা। ফলে অনেক জমির মালিককেই বাধ্য হয়েই মাটি বিক্রি করতে হচ্ছে। কৃষক তাইজুল ইসলাম ও ফাউজুল মিয়া জানান, একাধিকবার বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দিয়েও প্রশাসনের কাছ থেকে কোন সহযোগিতা পাইনি। আমাদের আবাদি কৃষি জমির মাটি এভাবে কেটে নিয়ে গেলে এলাকায় ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের সৃষ্টি হবে। এদিকে জামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হামিম শিকদার শিপলু তার বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মাটি কাটার সাথে তিনি জড়িত নন। কৃষকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট দাম দিয়ে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে।
সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, মাটি সন্ত্রাসীরা আওয়ামী লীগের সদস্য না। তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করছে। সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশেক পারভেজ জানান, মাটি কাটার বিষয়টি পরিবেশ ও কৃষির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এভাবে মাটি কাটলে সোনারগাঁয়ের খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। কৃষি জমির টপ সয়েল কেটে ফেললে মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যায়। উর্বরতা ফিরে আসতে ৩০ বছর সময়ও লাগতে পারে। ২৫-৩০ ফুট গর্ত করে মাটি কাটার ফলে জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে। সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহিনুর ইসলাম বলেন, ফসলি জমির মাটি ইটভাটায় বিক্রি করতে দেওয়া হবে না। সরেজমিনে গিয়ে প্রমাণ পেলে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।