Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এখন কোন বয়সের মানুষ বৃদ্ধ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

বৃদ্ধ লোকেরা আরো বৃদ্ধ হচ্ছে। অন্যদিকে মানুষের আয়ু বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটেছে। এ সত্যের প্রেক্ষিতে মানুষের জীবন ও কাজের অন্দর মহল বিষয়ে কিছু কৌত‚হল জাগানো তথ্য তুলে ধরা হয়েছে এক পরিসংখ্যানে। 

স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির এক খ্যাতনামা অধ্যাপক জন শোভেন-এর এক গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, যদি আগামী বছরের মধ্যে আপনার মৃত্যুর সম্ভাবনা ১ শতাংশ বা তার কম হয়ে থাকে তাহলে আপনি মধ্য বয়সী বলে গণ্য হবেন। ১৯২০-এর দশকে মধ্য বয়সের গড় আয়ু ৪৪ থেকে বেড়ে আজ ৬০-এ পৌঁছেছে।
শোভেন বলেন, যদি আগামী বছর আপনার মৃত্যুর সম্ভাবনা ২ শতাংশ বা তার বেশী হয়, তাহলে আপনি বৃদ্ধ বলে গণ্য হবেন। উপরের চার্ট প্রদর্শন করে যে মানুষের বৃদ্ধ হওয়ার বয়স সীমা ১৯২০-এর দশকে ৫৫ থেকে আজ ৭০-এ পৌঁছেছে। সর্বশেষ আগামী বছরের মধ্যে যদি আপনার মৃত্যুর সম্ভাবনা ৪ শতাংশ বা বেশী হয়ে থাকে তাহলে আপনি খুব বৃদ্ধ অথবা বৃদ্ধ বলে গণ্য হবেন। উপরের চার্ট প্রদর্শন করে যে মানুষের বয়সসীমা ১৯২০-এর দশকে ৬৫ বছর থেকে আজ ৭৬-এ পৌঁছেছে।
উল্লেখ্য, ১৯২০-এর দশকে বৃদ্ধ বয়সের সীমা ৫৫-কে আজকের দিনে মধ্যবয়স বলে গণ্য করা হচ্ছে এবং ১৯২০-এর দশকে অত্যন্ত বৃদ্ধ বলে গণ্য ৬৫ বছর বয়সসীমা আজকের দিনে বড় জোর বৃদ্ধ বলে গণ্য হয়। শোভেন বলেন, স্বাস্থ্যের উন্নতি ও জীবনীশক্তি বৃদ্ধির ফলে মৃত্যুহার কমেছে।
তিনি বলেন, মহিলাদের ক্ষেত্রে আজকের দিনে মধ্য বয়সের সীমা ৬৫ যা ১৯২০-এর দশকে ছিল ৪০-এর শেষ ঘরে। আজকের দিনে বৃদ্ধাদের বয়সসীমা বৃদ্ধি পেয়ে ৭৩-এর কাছাকাছি বয়সে বৃদ্ধা গণ্য করা হয় যা ১৯২০-এর দশকে ছিল ৫০-এর শেষ ঘরে। আর খুব বৃদ্ধা গণ্য করা হয় বয়স ৮০-এর ঘরে পৌঁছলে, ১৯২০-এর দশকে ৬৭ বছরের দিকে খুব বৃদ্ধা বলে গণ্য করা হত।
গত কয়েক শতক ধরে আমরা যে দীর্ঘজীবনের বিপ্লব দেখছি, এ হচ্ছে তারই সৌভাগ্যজনক ফল। এর কারণ হচ্ছে পরিষ্কার পানি, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, বর্জ্য অপসারণ, বিদ্যুৎ, রেফ্রিজারেটর, টিকাদান কর্মসূচি এবং স্বাস্থ্য চর্চার অব্যাহত উন্নয়ন। বহু জনসংখ্যাবিদই বলছেন যে আগামী দশকগুলোতেও মানুষের আয়ু বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। তবে আমরা আয়ু বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যকর জীবন নিয়ে উল্লসিত হলেও বয়োবৃদ্ধ সমাজের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জের ক্ষেত্রে আমাদের হাত গুটিয়ে রেখেছি।
উপরের পরিসংখ্যান আমাদের বলে যে বয়স্ক মানুষদের কোনো না কোনোভাবে তাদের শেষের দিকের বছরগুলোতে কাজ করা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। কিন্তু সমাজ হিসেবে কয়েক দশক আগেই আমরা সুষ্ঠু অবসর গ্রহণের জন্য একটি সাংস্কৃতিক প্রত্যাশা তৈরি করেছি। যে সময় বহু মানুষই তাদের ৬০ ও ৭০-এর ঘরে বয়স পৌঁছলে কাজ করতে অক্ষম হয়ে পড়তেন এবং বৃদ্ধ বা অত্যন্ত বৃদ্ধ বলে গণ্য হতেন।
আমাদের এখন এ ধারণা সম্পর্কে পুনরায় চিন্তা করার সময় এসেছে। আমাদের অবসর জীবনের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হচেছ আরো ব্যয় বৃদ্ধি। এ জন্য আমাদের সঞ্চয়ের মাত্রা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন যা সম্ভব নয়। সে সাথে তা সামাজিক নিরাপত্তা ও পেনশন ব্যবস্থার উপরও বিরাট চাপ ফেলবে।
শোভেন-এর মতে, ৪০ বছরের চাকরি জীবনের পর ৩০ বছর বছর অবসরের তহবিল যোগানো ব্যয়বহুল। এটা আগের প্রজন্মের চেয়ে আরো বেশীদিন কাজ করা বহু লোকের জন্য আর্থিক প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে। আমরা যেহেতু ৬০ বা ৭০-এর ঘরে পৌঁছা লোকদের আর বৃদ্ধ বলে গণ্য করছি না তাই তাদের কাজ বন্ধ করে দেয়াও যুক্তিসঙ্গত নয়। কারণ তারা এখনো বেতন পাবার যোগ্য ও সমাজে অবদান রাখছেন। বৃদ্ধ বয়সী মানুষেরা তাদের শেষদিনগুলোতে সামাজিক ও স্বাস্থ্য সুবিধা পেতে পারেন।
দীর্ঘজীনপ্রাপ্ত মানুষদের সম্পৃক্ত করা নিয়ে সমাজ তাৎপর্যপূর্ণ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। যখন বহু বয়স্ক মানুষই আগের চেয়ে অনেকটাই তরুণ। সেক্ষেত্রে আপনি কী সেই ‘গুড ওল্ড ডেজ’-এ ফিরে যাবেন নাকি এ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করবেন? সূত্র : সিবিএস নিউজ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ