পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকরা চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত না করলে তাদেরকে চাকরি থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কর্মস্থলে না থাকলে এবং সেবা না দিলে চিকিৎসক ও নার্সদের ওএসডি করে রাখতে বলেছেন তিনি। প্রয়োজনে তাদের চূড়ান্তভাবে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়ারও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। গতকাল রোববার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে এসে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব জেলায় সার্ভে করতে হবে, কেন হাসপাতালে ডাক্তার থাকেন না। যারা সেবা দেবেন না, তাদের ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করে রাখতে হবে। চিকিৎসকদের রাষ্ট্রীয় সম্মান দেয়া হয়েছে, তাদের অবশ্যই চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে চাকরি থেকে চলে যেতে হবে তাদের। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের বেসরকারি হাসপাতালে এসে যেন রোগী দেখতে না হয় সে জন্য সরকারি হাসপাতালগুলোতেই বিশেষ ধরনের সেবা চালুর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নার্সরা যদি সেবা দিতে না চান, তাহলে তাদেরও চাকরি ছেড়ে দিতে বলেছেন তিনি। পাশাপাশি বেসরকারি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কী ধরনের পড়াশোনা হচ্ছে, সে বিষয়ে তদারকি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের ডাক্তাররা সবসময় প্রাইভেট চিকিৎসা দিতেই পছন্দ করে। পৃথিবীর বহু দেশ আছে, সরকারি চাকরি যতদিন করে, ততদিন কিন্তু প্রাইভেট চাকরি করতে পারে না। এমনকি সিঙ্গাপুরেও যাবেন, এনইউএইচের ডাক্তাররা প্রাইভেট চিকিৎসা করতে গেলে ওই হাসপাতালের মধ্যেই আলাদা ব্যবস্থা আছে।
বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিঃবিভাগে এ ধরনের একটি ব্যবস্থা চালু থাকার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এটা কিন্তু আমরা অন্যান্য জেলা হাসপাতালেও করে দিতে পারি, যেন তাদের বাইরে না যেতে হয়। সন্ধ্যার পরে বা ছুটির সময় ওখানেই একটা প্রাইভেট প্র্যাকটিসের ব্যবস্থা বা আলাদা একটা উইং করে দেয়া যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাসপাতালে রোগী দেখার পরে প্রাইভেট হাসপাতালে গিয়ে কেউ রাত ১২টা, ১টা, ২টা পর্যন্তও নাকি অপারেশন করে। যে ডাক্তার রাতভর অপারেশন করবে, সে আবার সকাল ৮টার সময় এসে রোগী দেখবে কী করে? তার মেজাজ তো এমনিই খিটখিটে থাকবে। এটা যেন না হয় সেদিকে একটু দৃষ্টি দেয়া দরকার। অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মত স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্টদের বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসকদের সুবিধার জন্য উপজেলা পর্যায়ে ফ্ল্যাট নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে। ডাক্তারদের সেখানে বদলি করা হবে। তারা যদি কাজ না করে, সবগুলোকে ওএসডি করে রেখে দিতে হবে। তাদের দরকার নেই। নতুন ডাক্তার দিতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, নার্সদের ব্যাপারে, আমি তাদের সম্মান দিয়েছি ঠিক। কিন্তু রোগীর সেবাটা তাদের করতে হবে, এটা বাধ্যতামূলক। না করলে সে চাকরিতে থাকবে না, চলে যাবে। অনেক প্রাইভেট জায়গা আছে। কাজের অসুবিধা নেই। লোকেরও অসুবিধা নেই। আমরা ট্রেইনিং করিয়ে নিয়ে আসব।
সারাদেশে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ডাক্তার তৈরি করা এবং তাদের উচ্চ শিক্ষার প্রয়োজনে প্রতিটি বিভাগে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেয়া কথাও তিনি বলেন। মেডিক্যাল কলেজগুলো তৈরি হচ্ছে। অনেকগুলো সরকারি আছে, বেসরকারি আছে। বেসরকারিগুলোর দিকে আমাদের আরও নজর বাড়াতে হবে এবং চিকিৎসাসেবাটাও যাতে মানসম্মত হয় সে ব্যবস্থাটা করতে হবে।
ডাক্তারের সংখ্যা আমাদের অপর্যাপ্ত, কারণ আমাদের জনসংখ্যা যত বেশি, তার তুলনায় ডাক্তার আমাদের কম। সেজন্য ইতোমধ্যে মেডিক্যাল কলেজ করা হচ্ছে। সে ডাক্তারগুলো যেন সঠিকভাবে শিক্ষা নিয়ে হয়, বিশেষ করে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোর দিকে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। আবার দেশের প্রত্যেক জেলায় মেডিক্যাল কলেজের প্রয়োজন আছে কী না- সে প্রশ্নও রাখেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আসলে মেডিক্যাল কলেজ এত বেশি হয়ে যাচ্ছে, আর আমরা বাঙালি হুজুগে মাতি। যে জায়গায় যাই, সেখানেই একটা মেডিক্যাল কলেজ দরকার। আমাদের কোনো কোনো জেলায় চারটা উপজেলা। সেখানে একটা মেডিক্যাল কলেজ করে চলবে কী না সেটাও একটা প্রশ্ন আছে।
তিনি বলেন, ডাক্তারদের ইন্টার্নি সিস্টেম দুই বছরের করে দিয়েছিলাম। সেটা কার্যকর হয়েছে কী না জানি না, সেটা জানতে চাইব। এক বছর সে তার প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নি করে যাচ্ছে, আরেক বছর তাকে করতে হবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। উপজেলায় থেকে যেন চিকিৎসাসেবা দিতে পারে সে ব্যবস্থাও করে দেয়া হয়েছিল। জানি না সেটা কার্যকর আছে কী? সেটা করতে হবে। আমাদের এখানে ডাক্তার থাকে না, নার্স থাকে না- এটা অনবরত একটা নালিশ। এক্ষেত্রে আমি বলব, এখন ডিজিটাল সিস্টেম। আইডি কার্ডও করা আছে। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে উপস্থিতি-অনুপস্থিতির হিসাবটা নেয়া যায়। প্রত্যেকটা সরকারি হাসপাতালে মনে হয় এই ব্যবস্থাটা করে দেয়া উচিত। রোগীর পুরো বৃত্তান্ত একসঙ্গে পাওয়ার জন্য হেল্থ কার্ডও ডিজিটাল হওয়া উচিত। ডাক্তারদের নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি হাসপাতালে সিসি ক্যামেরা থাকা উচিত। মুমূর্ষু রোগী মারা গেলে ডাক্তারের ওপর চড়াও হওয়া- এই ধরনের মানসিকতা জনগণের পরিহার করা উচিত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জানি, অনেক বেসরকারি নামি-দামি হাসপাতাল আছে মুমূর্ষু রোগী নেয় না, যেতে হয় সরকারি হাসপাতালে। ডাক্তার নার্সদের বলব, যখনই একটা রোগী আছে, তার গুরুত্বটা বুঝে বা আত্মীয়-স্বজনের মানসিক উদ্বেগটা বুঝে সাথে সাথে যেন তারা চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়। ফেলে না রাখে। সেবামূলক একটা চিকিৎসার মানসিকতা এটা যেন চিকিৎসকদের মধ্যে থাকে। মেডিক্যাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়টিও শৃঙ্খলার মধ্যে আনার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, অনেক নামি-দামি হাসপাতালেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার স্বাস্থ্যকর কোনো ব্যবস্থা চালু হয়নি। এটা (বর্জ্য) নাকি সিটি করপোরেশনকে দিয়ে দেয়। সিটি কর্পোরেশন এটা নিয়ে কি করল তার কোনো হদিস পাওয়া যায় না। এটা হলো একটা বাস্তব অবস্থা।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চার নারী সেনা কর্মকর্তার সাক্ষাৎ
প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনীর আর্টিলারি ও ইঞ্জিনিয়ার্স ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া লে. কর্নেল পদমর্যাদার চার নারী সেনা কর্মকর্তা গতকাল রোববার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
ওই কর্মকর্তারা হলেন- লেফটেন্যান্ট কর্নেল সানজিদা হোসেন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সৈয়দা নাজিয়া রায়হান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফারহানা আফরীন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারাহ্ আমির। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নারীর ক্ষমতায়নের অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে ২০০০ সাল থেকে সেনাবাহিনীর দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে নিয়মিতভাবে নারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। ৪৭তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্স থেকে শুরু হওয়া এই নারী কর্মকর্তারা এরই মধ্যে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে পেশাগত দক্ষতা অর্জনে সফল হয়েছেন। তাদের এই সক্ষমতার অংশ হিসেবে চার নারী কর্মকর্তাকে মেজর থেকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর। সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ২৪ জানুয়ারি সেনাবাহিনীর সদর দফতরে পদোন্নতি পাওয়া এ চার নারী কর্মকর্তাকে লে. কর্নেল পদের র্যাংক ব্যাজ পরিয়ে দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।