পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে বাজছে অনক্যৈর সুর। দুটি ইস্যু নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরিক দল বিএনপির সাথে গণফোরামের মতভেদ এখন বেশ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এর একটি হলো নির্বাচিত এমপিদের শপথ নেয়া বা না নেয়ার বিষয়। দ্বিতীয়টি জামায়াতে ইসলামীকে সাথে রাখা না রাখার বিষয়।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরিক দল বিএনপি নির্বাচনের পর বেশ স্পষ্ট করে বলেছে, তারা এ ভোটডাকাতির নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই তাদের শপথ নেয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। অন্যদিকে গণফোরাম তাদের দলীয় ফোরামে শপথ নেয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে। এতে দলের অনেকে শপথ নেয়ার পক্ষে মতামত দেন। ফলে বিএনপি এবং গণফোরামের মধ্যে এ বিষয়ে মতানৈক্যের সৃষ্টি হয়।
যদিও এ বিষয়ে পরে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে জানানো হয় যে, ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত এমপিদের কেউই শপথ নেবেন না। ঐক্যফ্রন্টের শরিক পাঁচ দলের মধ্যে বিএনপিসহ বাকি চার দলের নেতারা মনে করেন, সমন্বিতভাবে একাদশ জাতীয় সংসদের ফলাফল প্রত্যাখ্যান এবং পুনঃনির্বাচনের দাবি তোলার পর সংসদে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্তে সন্দেহ সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান দল বিএনপির একাধিক নেতার কথায়, ভোটডাকাতির নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করার পর গণফোরামের সদস্যের শপথ নিলে তা হবে আত্মঘাতী। বিশেষ করে বিতর্কিত নির্বাচনের পর ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে সংসদে গেলে রাজনীতিকভাবেও হবে চরম পরাজয়। তারা মনে করেন, নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যানের পাশাপাশি নতুন নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে প্রতিরোধ গড়ে তোলাই হবে যৌক্তিক। কারণ এখনো দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী জেলে। ডজন ডজন মামলার আসামী হয়ে অনেকে ফেরারি। এ অবস্থায় দ্রুত দল গুছিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারলে নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়বে।
বিএনপি নেতারা আরো বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষ জানে এ নির্বাচন হয়েছে কারচুপির নির্বাচন। জনগণের ভোট ছিনতাই করে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ নৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছে। এ অবস্থায় সংসদে যোগ না দিলে তাদের বৈধতার সঙ্কট থেকেই যাবে। আর এতে করে ঐক্যফ্রন্টের আন্দোলনের যৌক্তিকতাও দেশবাসীর কাছে যেমন সুস্পষ্ট থাকবে। তেমনি তাদের সমর্থনও থাকবে।
অন্যদিকে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী নিয়ে ড. কামাল হোসেনের দেয়া বক্তব্যেও বিএনপির মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর ড. কামাল হোসেন বিদেশি সংবাদ মাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, জামায়াতকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করাটা তার ভুল হয়েছে। জামায়াতকে এভাবে মনোনয়ন দেয়া হবে এটা তিনি জানতেন না। তিনি আরো বলেন, এখন জামায়াতকে বাদ দিয়ে ঐক্য গড়ার কথা বলা যেতে পারে। ড. কামাল হোসেনের এ বক্তব্যের পর ক্ষমতাসীন দলের নেতারাও বেশ জোর দিয়ে বলছেন ‘ঐক্যফ্রন্টের ঐক্য আর থাকবে না’। ড. কামাল হোসেনের এ বক্তব্য নিয়ে বিএনপিতে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। আর দলীয় ক্ষোভের কারণে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক বিএনপি বর্জন করে। আর ওই বৈঠকে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি তাদের ‘জাতীয় সংলাপ’ কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়।
তবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা তাদের মধ্যে দ্বিধা-দ্ব›েদ্বর বিষয়টিকে পুরোপুরি অস্বীকার করছেন। এ বিষয়ে ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে কোনো অনৈক্য নেই। দেশে গণতন্ত্র এবং মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট হয়েছে। আমাদের সেই লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যফ্রন্ট থাকবে।
এ বিষয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সভাপতি আ স ম অবদুর রব বলেন, দেশের এক চরম সঙ্কটময় মুহূর্তে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জন্ম হয়েছে। গত ৩০ ডিসেম্বর এ সরকার ভোটডাকাতির মাধ্যমে যে প্রহসনের নির্বাচন করেছে, তাতে এ সঙ্কট আরো ঘনীভ‚ত হয়েছে। এ অবস্থায় আমাদের ঐক্য আরো দৃঢ় হবে। এ সরকার জাতীর সাথে যে প্রতারণা করেছে তা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে জবাব দেয়া হবে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম উদ্যোক্তা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সংসদে যাওয়ার বিষয়ে বলেন, এ বিষয়ে এখনি চূড়ান্ত কিছু বলা ঠিক হবে না। নির্বাচন কেমন হয়েছে, তা আমরা সবাই ভালো করে জানি এবং দেশবাসী এমনকি বিশ্ববাসীও জানে। বাস্তবতা এটাই যে, এই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। অনেক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও জনগণ তাদের ভোট দিতে পারেনি। আদতে নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। এ অবস্থায় সংসদে যাওয়া না যাওয়ার চেয়ে এই অনৈতিক ও অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করাটা জরুরি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সে লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছে। ঐক্যফ্রন্টের ঐক্য এখনো অটুট আছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।