পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা যদি দেশের উন্নয়ন চাই, তাহলে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতি নির্মূল করতে হবে। দেশ থেকে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতি নির্মূল করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ নির্দেশ দেন। শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বার এবং মোট চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন উপলক্ষে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি, মাদক এবং জঙ্গিবাদ উচ্ছেদ করে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যেতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় দুর্নীতি একটি কালো ব্যাধির মত ছেঁয়ে গেছে। কারণ, যে দেশে সামরিক সরকার ক্ষমতায় আসে তারা প্রথমে সমাজটাকে ধ্বংস করে দেয়। দুর্নীতিটাকেই তারা নীতি হিসেবে নেয় এবং দুর্নীতির সুযোগও সৃষ্টি করে দেয়। সারাদেশে বিভিন্ন কারণে অনেক মামলার জট রয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং একই সাথে তাবলিগ জামায়াতের দু’গ্রুপের মধ্যে দ্ব›দ্ব দ্রুত নিরসনে কাজ করার জন্য নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ঋণ খেলাপি থেকে দুর্নীতিবাজ যাদেরকে আমরা দেখি তাদের সৃষ্টি হয় ’৭৫-এর পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল তাদের কাছ থেকে। এ সব কালো ব্যাধি থেকে সমাজকে মুক্ত করার লক্ষ্যেই তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে এটি এখন সময়ের প্রয়োজন এবং তার জন্য যা যা করণীয় তার সরকার করে করবে। তিনি বলেন, একটি দেশকে যদি আমরা উন্নত করতে যাই তাহলে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং দুর্নীতির হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি মরণব্যাধির মতো ছেয়ে আছে। সমাজকে এ ব্যাধিমুক্ত করতে হবে। মাদক কারবারিদের খুঁজে বের করতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কর্মকর্তাদের বেতন বাড়ানো হয়েছে, করা হয়েছে আবাসনের ব্যবস্থা। তাই কোনো ধরনের দুর্নীতি সহ্য করা হবে না। যানজট নিরসনের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ট্রাফিক সমস্যা এখন বড় সমস্যা। দুর্ঘটনার জন্য চালকের পাশাপাশি, পথচারী ও নাগরিকরাও দায়ী। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও মানুষ কেন অস্বাভাবিক আচরণ করে, তা বুঝি না। যানজট নিরসনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যাতে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয়, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সার্বিক নিরাপত্তা বজায়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ রাখতে হবে। সার্বিকভাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ধরে রাখতে পুলিশকে আরও জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, দেশে জঙ্গিবাদ সৃষ্টিতে বিএনপি-জামায়াত সরকারের সহায়তা ছিল। এসময় জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সব কর্মকর্তাকে একযোগে কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, সচিব ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। এ সময় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন সংস্থা এবং দপ্তরের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। সমাজে অপরাধ প্রবণতার হার কমিয়ে আনার জন্য অপরাধ দমনের পাশাপাশি তাদের অপরাধ সংগঠনের কারণ খুঁজে বের করা এবং তার প্রতিকারের প্রতি দৃষ্টি দেয়ার জন্যও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের শাস্তি দিলেই যে অপরাধ দমন হয়ে যাবে তা নয় বরং তাদের সমাজে সুস্থ জীবন দিয়ে ফিরিয়ে আনতে পারাটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
এসময় জলদস্যু এবং বনদস্যুদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করানোর পর তাদের সমজে পুনর্বাসনেও তার সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, এদের পুনর্বাসন করা না গেলে তারা আবারো ওই পথে ফিরে যেতে পারে। তিনি দেশব্যাপী চলমান মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখার পাশাপাশি কারা দেশে মাদক নিয়ে আসছে, কারা ব্যবসা করছে এবং কারা সেবন করছে এদের সকলের বিরুদ্ধেই বহুমুখি ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা মাদক সেবন করে শুধু তাকেই নয়, যারা মাদক আনে, দেয় বা সাপ্লাই দেয়, তৈরি করে এদেরকেও ধরতে হবে। সেইসাথে যারা সুস্থভাবে সমাজে ফিরতে চাইবে তারে সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। মাদকাসক্তদের নিরাময়েরও উদ্যোগ নিতে হবে। শেখ হাসিনা এ সময় সরকারের পক্ষ থেকে মাদক নিরাময় কেন্দ্র স্থাপন এবং মাদকের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টির ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে একটি বিশাল মন্ত্রণালয় উল্লেখ করে অতীতে এর পর্যাপ্ত লোকবল না থাকার বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এজন্যই তার সরকার এই মন্ত্রণালয়কে দুটি ভাগে ভাগ করে দিয়েছে। তার সরকার এখানে কোস্ট গার্ড গঠন করেছে এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদেরকেও প্রেরণ করেছে। সেদিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। জাতিসংঘ মিশনে আমাদের পুরুষ পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি নারীরাও প্রশংসার সঙ্গে কাজ করছে, বলেন তিনি।
এ সময় দেশের কারাগারগুলোকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলায় তার সরকারের উদ্যোগসমূহ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী কারা অভ্যন্তরে কয়েদিদের জন্য সৃজনশীল জীবিকা সংস্থানে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তারা যেন কিছু পুঁজি নিয়ে যেতে পারে এবং পরবর্তী জীবনে তাদের যেন সেটা কাজে লাগে। সেজন্য কয়েদিদেরও নানা প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।