পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকার ঘোষিত মজুরি বাস্তবায়ন ও বেতন-বৈষম্য নিরসনের দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনের নেপথ্যে জড়িতদের খুঁজছে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। এরই মধ্যে জড়িতদের চিহ্নিত করতে মাঠে নেমেছে বিভিন্ন সংস্থার একাধিক টিম। তবে সাধারণ শ্রমিক ও শ্রমিক নেতারা অন্যায়ভাবে যেন হয়রানির শিকার না হয় সে দিকে সর্তক দৃষ্টি দেয়ার জন্য শীর্ষ পর্যায় থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের। এরই মধ্যে পোশাক শ্রমিকদের দাবির মুখে তাদের মজুরি গ্রেডে সমন্বয় করেছে সরকার। শ্রম মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মালিক-শ্রমিক ও প্রশাসনের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। সূত্র জানায়, সম্প্র্রতি সময়ে ঢাকা ও সাভারসহ বিভিন্ন এলাকায় বেতন বৈষম্য নিয়ে শ্রমিকরা যে আন্দোলন করেছেন, তার জন্য অনেক শ্রমিক এখনো হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অনেকেই মামলার ভয়ে রয়েছেন। অনেককেই কারখানা থেকে বের করে দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
গতকাল নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাভারের একাধিক পোশাক শ্রমিক টেলিফোনে দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আমরা বেতন ভাড়ানো এবং আমাদের অধিকারের জন্য আন্দোলন করেছি। অনেক কারখানা শ্রমিকের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে মামলা করা হয়েছে। অনেককে চাকরি থেকেও বের করে দেয়া হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তারা আরো বলেন, আমরা চাকরি করি বেতনের জন্য। আমাদের অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই। যারা অন্যায় করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক। তবে সাধারণ শ্রমিকদের যেন হয়রানি না করা হয় সে জন্য দাবি জানান তারা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, তৈরী পোশাক খাতে যেন কোনো অস্থিতিশীলতা দেখা না দেয়, তা কঠোরভাবে নজরদারি করা হচ্ছে। জেলা পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা রাজধানী ছাড়াও সাভার ও গাজীপুরসহ যেসব এলাকায় তৈরী পোশাক শিল্প রয়েছে, সেসব এলাকায় নজরদারি করছেন। শ্রমিকদের উসকে দেয়ার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করা এবং তৈরী পোশাক শিল্পের পরিবেশ স্থিতিশীল রাখতেই একাধিক সংস্থা সমন্বয় করে কাজ করছে বলে ওই সূত্র জানায়।
ওই সূত্র আরো জানায়, সম্প্রতি সময়ে বেতন-বৈষম্য নিরসনের দাবিতে তৈরী পোশাক শিল্পের শ্রমিক আন্দোলনের সময় অনেক সাধারণ শ্রমিক নানাভাবে নির্যাতনে শিকার হয়েছেন। অনেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলায় শিকার হয়েছেন এবং অনেকের নামে মামলাও করা হয়েছে। শ্রমিকরা যেন হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে জোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের।
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আব্দুল আল মামুন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ঢাকা, সাভার ও গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বর্তমানে তৈরী পোশাক শিল্প স্বাভাবিক থাকলেও জেলা পুলিশ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে সমন্বয় করে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। পোশাক শ্রমিকরা যাতে তাদের প্রাপ্য বেতন-ভাতা পান সে জন্য সরকার কাজ করছে। তবে নেপথ্যে থেকে শ্রমিকদের উসকে দিয়ে ওই খাতকে অস্থিতিশীল করে তুলতে একাধিক চক্র কাজ করছে বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, তৈরী পোশাক শিল্পকে অস্থিতিশীল করতে যে সব চক্র কাজ করছে, তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। তবে সাধারণ শ্রমিকরা যাতে হয়রানির শিকার বা অন্যায়ভাবে চাকরি না হারায় সে বিষয়টি মাথায় রেখেই আমরা কাজ করছি।
সম্প্রতি সময়ে আন্দোলনকে ঘিরে অন্যায়ভাবে অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে এবং অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই মামলা করা হয়েছে। নিরীহ কাউকে হয়রানি করার সুযোগ নেই। অন্যায্যভাবে কারো চাকরি চলে যাওয়ারও সুযোগ নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।
গত ২৫ নভেম্বর পোশাক শিল্পের জন্য নতুন মজুরি কাঠামোর প্রজ্ঞাপন জারি করে শ্রম মন্ত্রণালয়। গত ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নতুন মজুরি কাঠামোতে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামেন নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের বেশ কিছু কারখানার শ্রমিক। বিজিএমইএ ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের চেষ্টায় নির্বাচনের আগে আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হয়। তবে গত ৬ জানুয়ারি রোববার ঢাকার উত্তরার কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা আন্দোলনে নামেন। পরের দিনগুলোতে তা রাজধানীর মিরপুর, শেওড়াপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। গত ৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার সংঘর্ষের সময় নিহত হন সাভারের উলাইলের আনলিমা টেক্সটাইলের শ্রমিক সুমন মিয়া। শ্রমিক অসন্তোষের পরিপ্রেক্ষিতে আশুলিয়া ও সাভার এলাকায় বিজিবি মোতায়েনও করা হয়। এরপর সরকার কমিটি গঠন করে এবং শ্রমিকদের মজুরিও বাড়ানো হয়। যা নিয়ে এখনো শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে।
সম্প্রতি রাজধানীর মিরপুরে এক অনুষ্ঠানে পোশাক শ্রমিকদের এ বিক্ষোভের ব্যাপারে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভে কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে বা গোষ্ঠীগতভাবে ইন্ধন দিয়ে থাকে, তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরই মধ্যে আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং গোয়েন্দা (ডিবি) সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছি, এটা খতিয়ে দেখার জন্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।