Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

এডিবির সঙ্গে ১৬৬০ কোটি টাকার ঋণ চুক্তি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

পাঁচ বিভাগের ১৮০ উপজেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (১ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা) ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ১০০ মিলিয়ন সহজ শর্তে ও ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নিয়মিত হারে বাংলাদেশকে ঋণ দেবে এডিবি।
গতকাল রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে স্বাক্ষর করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মনোয়ার আহমদ এবং এডিবির পক্ষে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন পারকাশ। এ সময় দুই পক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
‘রুরাল কানেকটিভিটি ইম্প্রোভমেন্ট প্রজেক্ট’ প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩৬৮ কোটি ৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা (২৮৫ দশমিক ৩১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)। এর মধ্যে এডিবি ঋণ হিসেবে দেবে ১ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা (২০০ মার্কিন ডলার)। ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে মধ্যে ১০০ মিলিয়ন ডলার সহজ শর্তে (অর্ডিনারি অপারেশন্স লোন-সিওএল), যার সুদের হার ২ শতাংশ। বাকি ১০০ মিলিয়ন ডলার সহজ শর্তে নয়, নিয়মিত (রেগুলার ওসিআর ভিত্তিতে সুদের হার) হিসেবে প্রদান করা হবে।
এ ছাড়া শূন্য দশমিক ১০ হারে ম্যাচুরিটি প্রিমিয়াম ও অব্যয়িত অর্থের ওপর শূন্য দশমিক ১৫ হারে কমিটমেন্ট চার্জ ওসিআর ঋণের জন্য প্রযোজ্য হবে। এই ঋণ ৫ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ২৫ বছরে পরিশোধ করতে হবে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর। ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। গত বছরের ৯ অক্টোবর একনেক সভায় অনুমোদিত হবে।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো- উৎপাদনশীল কৃষি এলাকায় উচ্চ আয় সৃষ্টি ও আর্থ-সামাজিক কেন্দ্রে যাতায়ত সুগম করতে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামীণ সংযোগ উন্নয়ন করা এবং কার্যকর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অংশীজনদের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ। প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে ২২১০ কিলোমিটার উপজেলা সড়ক এবং ৪৯৫ কিলোমটিার ইউনিয়ন সড়ক অবকাঠামোকে জলবায়ু সহিষ্ণু এবং নিরাপত্তার বৈশিষ্ট্য সম্বলিত সব আবহাওয়া উপযোগী মানে উন্নীত করা হবে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিভাগের আট জেলা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, কক্সবাজার, ফেনী, লক্ষীপুর ও নোয়াখালী), ঢাকা বিভাগের পাঁচ জেলা (ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারিপুর, রাজবাড়ী ও শরীয়তপুর), খুলনা বিভাগের ছয় জেলা (চুয়াডাঙ্গা, যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, মাগুরা, মেহেরপুর ও নড়াইল), রাজশাহী বিভাগের ছয় জেলা (বগুড়া, চাপাঁইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, নওগাঁ, নাটোর ও রাজশাহী) এবং রংপুর বিভাগের আট জেলার (রংপুর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও) মোট ১৮০টি উপজেলার গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হবে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মনোয়ার আহমদ বলেন, একটু যদি লক্ষ্য করেন এটা একটা কম্প্যাক্ট প্রজেক্ট। আমরা একটা প্রজেক্ট নিয়ে রাস্তা নির্মাণ করি; পরে আরেকটা প্রজেক্ট নেই, সেটা মেরামত করার জন্য। কিন্ত এখানে সবগুলো বিষয়ই একত্রে থাকছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে এ টাকা হয়তো তেমন কিছু না। কিন্তু আমরা যদি সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি, এটা দেশের উন্নয়নের সহযোগী হবে। আমরা আশা করছি, এটা একটা সফল গল্প হবে অন্যদের জন্য, যদি আমরা সফল হই। ১৯৭৩ সালে এডিবির সদস্যপদ লাভের পর থেকে সংস্থাটি বাংলাদেশকে এখন পর্যন্ত ২১ দশমিক ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ-সহায়তা এবং ৪২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অনুদান সহয়তা দিয়েছে। উন্নয়ন সহায়তার ক্ষেত্রে এডিবি প্রধানত বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পরিবহন, শিক্ষা, স্থানীয় সরকার, কৃষি, পানি সম্পদ ও সুশাসন সেক্টরকে প্রাধান্য দেয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ