পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপিকে সংসদে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গণতন্ত্রের স্বার্থে বিএনপিকে সংসদে এসে কথা বলা উচিত। তিনি বলেন, বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব দুর্নীতিগ্রস্ত, সাজাপ্রাপ্ত এবং পলাতক আসামি বলেই জনগণ নির্বাচনে তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। এরপরও ২০১৮ এর নির্বাচনে বিএনপি যদি মনোনয়ন বাণিজ্য না করত, তাহলে হয়তো তাদের ফলাফল আরও একটু ভালো হতে পারত।
২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের কথা জানিয়ে তার কন্যা বলেন, ২০২০সালকে মুজিব বর্ষ হিসেবে উদযাপন করা হবে। এজন্য এখন থেকেই কর্মপরিকল্পনা হাতে নেওয়া হবে। বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে তা নিজ গতিতেই চলবে বলেও জানান শেখ হাসিনা। গতকাল বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের যৌথ সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় যৌথসভা শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে ২০১৮ সালের ৬ জলাই গণভভনে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের এটাই প্রথম যৌথ সভা।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, মনোনয়ন বাণিজ্য নিয়ে নিজেদের মধ্যে কোন্দল-মারামারির করেছে। বিজয়ী হওয়ার মতো প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়নি। সকালে একজন, বিকালে আরেকজনকে মনোনয়ন দিয়েছে। মানুষ জানতেই পেরেছে যে এদের চরিত্রটা কী। এদের চরিত্র শোধরায়নি। বাংলাদেশের জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করে দিছে। তারপরও একটি দলের প্রধান দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত, যাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান করা হয়েছে, সেও খুন, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা ও দুর্নীতির মামলায় বিদেশে পালাতক তখন তাদের এমন ফল বিপর্যয় স্বাভাবিক। ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে এরমধ্যেও যে কয়েকটি আসনে তারা বিজয়ী হয়েছে, আমি মনে করি গণতন্ত্রের স্বার্থে তাদের সংসদে আসা উচিত।
আমার কাছে সমস্ত ঘটনাগুলি লিপিবদ্ধ করা আছে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা মাঠে ঘাটে দেখেছেন, টেলিভিশনে দেখেছেন কিভাবে তারা প্রচেষ্টা চালিয়েছিল কোনমতে নির্বাচনটা যেন বানচাল করা যায় কিন্তু তা তারা পারে নাই। এখন বিএনপি নির্বাচনে হেরেছে, এই দোষটা তারা কাকে দেবে? দোষ দিলে তাদের নিজেদেরকে দিতে হয়। কারণ একটি রাজনৈতিক দলের যদি নেতৃত্ব না থাকে, মাথাই না থাকে তাহলে সেই রাজনৈতিক দল কিভাবে নির্বাচনে জয়ের কথা চিন্তা করতে পারে। বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে তা নিজ গতিতেই চলবে বলেও জানান শেখ হাসিনা।
টানা তৃতীয় মেয়াদে জয়ী হয়ে সরকার গঠনের সুযোগ দেওয়ায় জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে সব থেকে লক্ষণীয় বিষয় ছিল, মানুষের মধ্যে একটা স্বতঃস্ফূর্ততা এবং ভোট দেওয়ার জন্য আগ্রহ। বিশেষ করে এদেশের তরুণ সমাজ, যারা প্রথম ভোটার এবং নারী। এবারের নির্বাচনটা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে হলেও কিছু কিছু জায়গায় বিএনপি-জামায়াত জোট মিলে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করতে গেছে। কোথাও তারা নির্বাচনকে বানচাল করার চেষ্টা করেছে। তাদের এই অপকর্মের কারণে বেশ কিছু প্রাণহানি ঘটেছে, যার মধ্যে আমাদের দলীয় নেতা-কর্মীরা অনেক আছেন।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয় বলেই মানুষ ভোট দিয়েছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ গত দশ বছরে জনগণের সেবক হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে বলেই মানুষ ভোট দিয়ে আবারও বিজয়ী করেছে। জনগণ বুঝতে পেরেছে শুধু আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলেই তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়, দেশের উন্নয়ন হয়; দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এটা মনে করে বলেই সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে তারা নির্বিশেষে সমর্থন দিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ যখন ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে, আমি অন্তত এটুকু দাবি করতে পারি, তখনই কিন্তু এদেশের মানুষ প্রথম উপলব্ধি করে সরকার জনগণের সেবক হতে পারে।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটা স্বর্ণযুগ ছিল মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ষড়যন্ত্র কখনো থেমে যায় না। ২০০১ সালে চক্রান্ত করে আমাদের ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি। আমরা ভোট বেশি পেলাম কিন্তু সরকার গঠন করতে পারলাম না। ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষের জীবনে যে দুর্বিষহ অবস্থা ছিল, সেটা সবাই জানি। সেটা নিয়ে আর আমার বেশি বলার প্রয়োজন নেই।
এরপর ২০১৩ থেকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকানোর নামে বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলনের সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা বলেন, এটা দেশের মানুষ কখনো মেনে নিতে পারেনি। আমাদের সৌভাগ্য যে, আমরা একটানা দশ বছর হাতে সময় পেয়েছিলাম, যার ফলে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে একটা উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
বক্তব্যের শুরুতে প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোক প্রকাশ করেন। বক্তব্য শেষে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দলের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। আওয়ামী লীগ সভাপতির আসনের দুই পাশে দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, এইচ টি ইমাম, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফরউল্লাহ, মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন।
রাস্তায় পতাকা উড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানালো যুবলীগ
রাস্তার দু পাশে লাইনে দাড়িয়ে লাল-সবুজের পতাকায় আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানালো ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীরা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্ঠা পরিষদের যৌথসভায় যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী আগমন উপলক্ষে তাকে স্বাগত জানাতে দুইটার আগ থেকেই দক্ষিণ যুবলীগের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতাকমীরা মিছিল নিয়ে হাজির হন। গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট থেকে মৎস্য ভবনের রাস্তার দুপাশে সারিবদ্ধভাবে দাড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে লাল সবুজের জাতীয় পতাকা, যুবলীগর দলীয় পতাকা নেড়ে অভিনন্দন জানান সংগঠনের নেতারা। জিরো পয়েন্টে নিজে উপস্থিত থেকে এতে নেতৃত্ব দেন যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। এসময় নেতাকর্মীরা ‘বার বার দরকার শেখ হাসিনার সরকার, শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই, রাষ্ট্র নায়ক শেখ হাসিনার দুই নয়ন-বাংলাদেশের উন্নয়ন, জনগণের ক্ষমতায়ন-শেখ হাসিনার উন্নয়নসহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। স্লোগান ও পতাকা নেড়ে অভিনন্দনের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও গাড়ীর ভেতর থেকে হাত নেড়ে অভিনন্দনের জবাব দেন। যুবলীগ দক্ষিণের নেতাকর্মী ছাড়াও ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কিছু নেতাকে দেখা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।