পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা আন্দোলনে ব্যর্থ হন, তারা নির্বাচনেও ব্যর্থ হন। বিএনপি বার বার নির্বাচন ঠেকাতে চেয়ে ব্যর্থ হয়ে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু এদেশের জনগণ যেভাবে তাদের নির্বাচন ঠেকানোর অভিন্ধি ব্যর্থ করে দিয়েছিল, তেমনই আন্দোলনেও সাড়া দেয়নি।
গতকাল রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আয়োজনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নিজেদের কারণেই বিএনপি নির্বাচনে হেরেছে মতামত ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তাদের মনোনয়ন বাণিজ্য, অগ্নিসন্ত্রাস, এতিমের টাকা লুটপাট এবং দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করায় জনগণ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনে বিএনপি নমিনেশন অকশনে করেছে। নমিশেন ট্রেড এবং অকশন করে তারা জয়ী হবে কিভাবে? জনগণ তাদের ভোট দেয়নি। তিনি বলেন, বিএনপির যেসব প্রার্থী উইনেবল ছিল তারা কেউই মনোনয়ন পাননি। টাকা বেশি না দিতে পারায় তারা মনোনয়ন পাননি। সকালে যাকে মনোনয়ন দেয়া হয়, তার চেয়ে বেশি টাকা দেয়ার পর দুপুরে আরেকজন মনোনয়ন পান। বিকেলে তার চেয়ে বেশি টাকায় পাওয়ায় সকাল ও দুপুরের প্রার্থী মনোনয়ন থেকে আউট হয়ে যান। এভাবে যে দল মনোনয়ন দেয় তাদের জনগণ কেন ভোট দেবে?
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি কেন নির্বোচনে হেরেছে সেটা তাদের নিজেদেরও ভাবা উচিৎ। কেননা, তারা ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে তান্ডব চালিয়েছে। অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। যানবাহন পুড়িয়েছে। ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়ে ঘরে ফেরবেন না বলে ঘরে ফিরে গেলেন। সেই ধর্মঘট এখনও আছে! আবারও নির্বাচন প্রতিরোধের নামে নৃশংসতা চালালেন। জনগণ তাদের সেই সহিংস আন্দোলন ব্যর্থ করে দিয়েছে। দলটির প্রধান এতিমের টাকা চুরি করে জেলে। আবার তিনি জেলে যাওয়ার পর এমন একজনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হলো, যিনি নিজেই দুর্নীতি ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি। বিএনপির এসব তৎপরতার কারণে নির্বাচনে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আগামী ৫ বছর আমাদের জন্য কঠিন পরীক্ষা। যে উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা শুরু করেছি এটা আমাদের অব্যাহত রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। জনগণ আমাদের ওপরে আস্থা-বিশ্বাস রেখেছে। এই বিশ্বাসকে মর্যাদা দিয়ে বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবো। শেখ হাসিনা বলেন, আজকে জাতির পিতা আমাদের মাঝে নেই। তার আদর্শ বুকে নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা চাই, এদেশের যে উন্নতি আমরা করেছি এবং সেটা যেন আরও অব্যাহত থাকে। বাংলাদেশকে আমরা গড়ে তুলতে চাই জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ হিসেবে। আজ জাতির পিতা স্বশরীরে আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তিনি আছেন। এই ৫৪ হাজার বর্গ মাইলের সব জায়গায় তিনি আছেন।
এ সময় বঙ্গবন্ধু কন্যা আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, আমি জানি না, কিন্তু সেটা আমি উপলব্ধি করতে পারি, তিনি আছেন। নইলে আমার পক্ষে এত দ্রুত দেশের উন্নতি করা বা দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে এতটা অর্জন করা কখনও সম্ভব হতো না। আমি সবসময় মনে করি, আমার বাবা-মা, আমাকে সবসময় ছাঁয়া দিয়ে রেখেছেন বলেই আজকে এটা সম্ভব হচ্ছে এবং নিশ্চয়ই তিনি বেহেশত থেকে দেখেন।
নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, এদেশের মানুষ পেট ভরে ভাত খাবে, তাদের বাসস্থান হবে চিকিৎসা, শিক্ষার সুযোগ হবে, উন্নত জীবন পাবে— এটাইতো ছিল জাতির পিতার একমাত্র লক্ষ্য, একমাত্র উদ্দেশ্য। বঙ্গবন্ধু এদেশের মানুষকে খুব ভালোবাসতেন। এদেশের বঞ্চিত জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য তিনি মহৎ আত্মত্যাগ করে গেছেন। সেই আত্মত্যাগ আমাদের ভুললে চলবে না। আমাদেরকে সেটাই অনুসরণ করে চলতে হবে এবং দেশের মানুষ যদি ভালো থাকে, দেশের মানুষ যদি সুন্দর জীবন পায়, এর থেকে বড় স্বার্থকতা একজন রাজনীতিবিদের জীবনে আর কিছু হতে পারে না।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সূচনা বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। সভায় বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মতিয়া চৌধুরী, আব্দুল মতিন খসরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ। আলোচনা মঞ্চে দলটির কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী সংসদের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বরাবরের মতো এবারও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করে আওয়ামী লীগ। সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর ভবনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এছাড়া, সকাল সাড়ে ছয়টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন ও সারাদেশে সংগঠনের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করার হয়।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীতে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন কর্মসূচি গ্রহণ করে। সকালে ১০টায় রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে দলীয় কার্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে দিবসটি উপলক্ষে দলীয় কার্যালয়ে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
রামেবি : সকালে রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ভিসি অধ্যাপক ডা. মাসুম হাবিব। পরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করা হয়।
রাবি সংবাদদাতা : সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. এম এ বারীর সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এম আবদুস সোবহান, প্রো-ভিসি অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু, প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান প্রমুখ।
পাবনা থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, জেলা আওয়াম লীগ অফিসে পাবনা সদর আসন এম.পি ও জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স, পাবনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউর রহিম লাল, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ মোশাররফ হোসেন এবং জেলা আ’লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ থেকে জানান, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। পরে তারা ফাতেহা পাঠ ও বঙ্গবন্ধুর রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া মোনাজাত করেন। এরপর বাংলাদেশ নির্মাণ শ্রমিক লীগ টুঙ্গিপাড়া উপজেলা শাখা, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা মহিলা লীগ, যুব মহিলা লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গন হতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয় হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের এমপি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আশরাফউজ্জামান স্মৃতিসহ অন্যন্য নেতা-কর্মীরা শোভাযাত্রায় অংশ নেন
ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন এডভোকেট এমপি।
কালিয়াকৈর (গাজীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গাজীপুরের কালিযাকৈরে মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল ওহাব মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী মো. মুরাদ কবীর, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিকদার মোশারফ হোসেনসহ প্রমূখ।
কালকিনি(মাদারীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যাপিকা তাহমিনা সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে সকালে র্যালী ও দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কোটালীপাড়া উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাড সুভাষ চন্দ্র জয়ধরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন উপদেষ্টা মন্ডলীর অন্যতম সদস্য আলহাজ কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ ।
নাচোলে (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, নাচোল উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে উপজেলা আ.লীগের আয়োজনে (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি সামসুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, নাচোল উপজেলা চেয়ারম্যান ও আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আব্দুল কাদের।
সোনারগাঁ(নারায়ণগঞ্জ)সংবাদদাতা জানান, বাংলাদেশ লোক কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম ভূইয়াসহ প্রমূখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।