পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ধীরে ধীরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনার কথা দিয়েছেন ব্যাংক মালিকরা। তিনি বলেন, ‘আজ থেকে আর এক টাকারও খেলাপি ঋণ বাড়বে না। এ বিষয়ে ব্যাংকের মালিকরা আমাকে কথা দিয়েছেন। একই সঙ্গে এখন পর্যন্ত যে পরিমান খেলাপী ঋণ রয়েছে তাও ধীরে ধীরে কমিয়ে আনা হবে।’ অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসার আগেই আমার শর্ত ছিল একটা। কোন কিছু আলাপ করার আগে আমার এক দফা। আজকের পর থেকে খেলাপি ঋণ এক টাকাও বাড়তে পারবে না। আপনারা কিভাবে বন্ধ করবেন, কিভাবে টেককেয়ার করবেন, কিভাবে ম্যানেজ করবেন তা আপনাদের ব্যাপার। তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। তাই বলেছি আজকের( বৃহষ্পতিবার) পর থেকে খেলাপি ঋণ বাড়বে না ইনশাল্লাহ। আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ব্যাংকিং খাত নিয়ে আলোচনা করেছি। অধিকাংশ ব্যাংকের মালিকরা এসেছেন। তাদের সঙ্গে যেসব আলোচনা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ‘আপনাদের কাছ থেকে ব্যাংকিং খাতের যেসব তথ্য পাওয়া গেছে সেগুলো ভেরিভফাই করবো, এভালুয়েট করবো, মূল্যায়ন করবো। এ জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে। এই মূল্যায়ন শেষ হলে আমরা একটি ব্যবস্থায় যাব’।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অর্থমন্ত্রীর দপ্তরে ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বৈঠকে এসোসিয়েশনের সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদার, আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যান এইচ বি এম ইকবালসহ ব্যাংক মালিকরা উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী আরো বলেন, আমরা একটি জায়গায় ঐক্যমতে পৌছেছি, মূল যে এলাকা, মূল যে চিন্তা সেটি হচ্ছে ননপারফরমিং লোন। এটি আপনাদের উৎকন্ঠা, জাতির উৎকণ্ঠা, আমাদের উৎকন্ঠা এবং আমার উৎকন্ঠা। তবে আমার উৎকন্ঠা কিছুটা কম। কেননা এরই মাঝে আমি দেখেছি যেভাবে যে পরিমান পত্রপত্রিকায় লেখা হয়, সে পরিমান ননপারফরমিং লোন না। দেশে ননপারফরমিং লোনের হার ১১ থেকে ১২ শতাংশ। এর চেয়ে অন্যান্য দেশে আরো বেশী। আমাদের পাশের দেশ ভারতেও আরো বেশী। ননপারফরমিং লোন কমলে বাংক সুদের হার কমে যাবে, সুতরাং এটা কোনভাবেই বাড়তে দেওয়া হবেনা। ননপারফরমিং লোন এখনো ম্যানেজেবল। আর এই ম্যানেজেবল লোন আর বাড়তে পারবে না।
এখানে যারা এসেছেন তারা নিশ্চিত করেছেন খেলাপি ঋণ আর বাড়বে না বরং যা আছে সেটিও ধীরে ধীরে কমাবেন। কিভাবে কমাবেন সেটি পরবর্তী মিটিং এ বসে সিদ্ধান্ত নেব। এটিই আলোচনার মূল বিষয় ছিল। যেহেতু খেলাপি ঋণ হয়েই গেছে। সে বিষয়ে তারা আমাকেও তথ্য দেবেন কি পরিমান, কোন ব্যাংকের কতটা খেলাপি ঋণ আছে। কার কাছে কতটা পাওয়া যাবে, এর মধ্যে কতটা আসল, কতটা সুদ কোন অবস্থায় আছে। ঋণের বিপরীতে তাদের সমপাশির্^ক অবস্থাও পরীক্ষা করে দেখা হবে। তাদের তথ্য আমাদের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে মিলিয়ে দেখে সঠিক কাজটি শুরু করতে পরবো, যথাযথভাবে করতে পারবো।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আ হ ম মুস্তফা কামাল, যারা ব্যবসা করে বাংলাদেশে তারা সবাই প্রভাবশালী। পৃথিবীতে যারা ব্যবসা বাণিজ্য করেন সবাই প্রভাবশালী। প্রভাবশালী দু’রকম যারা রাজীতি করেন তারাও প্রভাবশালী, যারা ক্রিকেট ভাল খেলে তারাও প্রভাবশালী, ব্যবসা বাণিজ্য যারা করে তারাও প্রভাবশালী। ব্যবসায়ীরা যদি প্রভাবশালী না হয় তাহলে বিনিযোগ কিভাবে আসবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, কোথা থেকে কর্মসংস্থান হবে, কিভাবে হবে, দারিদ্র্য কিভাবে কমবে। প্রভাবশালী যারা যারা ব্যবসাবাণিজ্য করে তারা অর্থনীতির ৮২ শতাংশ। এদেরকে বাদ দিয়ে ১৮ শতাংশ নিয়ে অর্থনীতি সাজানো সম্ভব নয়। এটা করতে চাওয়াটাও একটা অবাস্তব চিন্তা। তাদেরকে ব্যবসা করতে সকল সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হবে ঋণখেলাপি না হয়ে।
বিএবি’র সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদার ইনকিলাবকে বলেন, ব্যাংক খাত অর্থনীতির মেরুদন্ড। ব্যাংক খাত ঠিক হলে অর্থনীতি ঠিক হয়ে যাবে। তিনি বলেন, কিছু ঋণ প্রাকৃতিকভাবে খেলাপি হয়। যেমন- ব্যবসা খারাপ, মানুষ মরে গেছে বা আগুন লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এটা হতে পারে। কিন্তু কিছু আছে নামে-বেনামে ও ইচ্ছাকৃতভাবে গ্রাহককে না চিনেই নিজ স্বার্থ হাসিলে ঋণ দিয়ে খেলাপি করা হয়। দেখা যায় ওই সব গ্রাহক টাকা নিয়ে বিদেশে চলে যান। এ ধরনের ঋণকে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। আমরাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন উল্লেখ করে নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, খেলাপি ঋণ নিয়ে ইতোমধ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি জানুয়ারির মধ্যে এমডিদের নিয়ে সভা করে আগের ভুল ভ্রান্তি বাদ দিয়ে নতুন করে যাতে খেলাপি ঋণ না হয় সে বিষয়ে করণীয় ঠিক করা হবে। একই সঙ্গে খেলাপি ঋণ কমাতে দুটি গ্রুপ তৈরির কথা বলেন নজরুল ইসলাম। একটি হলো যারা ঋণ নিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে টাকা দিচ্ছে না তাদেরকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া। অন্যটি হলো- যারা ঋণ নিয়ে ৫ বছর ভালো ব্যবসা করেছে। হঠাৎ করে প্রাকৃতি দুর্যোগ, পণ্যের দাম কমে যাওয়ায় খেলাপি হয়েছে তাদেরকে সহায়তা করা। এছাড়া অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে খেলাপি ঋণ আর না বাড়তে দেওয়ার আশ্বাস রাখতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিএবি’র সভাপতি।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।