Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চায়ের ভোট ভোটের চা

রুমু, চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

ভোটারদের মন এখন ভোটের দিকে। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণাও শেষ পর্যায়ে। প্রার্থীরা আছেন খুব ব্যস্ত। নিজের গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরতে পারলে ভোটাররা নিশ্চয় কাছে টেনে নেবে, বুকে মেলাবে বুক। তার ভোট পাওয়ার পথ সুগম হবে। জনগণই নির্বাচিত করবে কে হবেন তার প্রতিনিধি।
কিন্তু ভোটের রাজনীতি অনেক সময় পারস্পরিক সম্প্রীতি, সহমর্মিতার পথ বন্ধ হয়ে যায়। হানাহানির পথ করে প্রশস্ত। ডেকে আনে ধ্বংস। এমন অনেক প্রশ্ন এখনও মানুষের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে, এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে। চায়ের দোকান, পথে-ঘাটে এবং বিভিন্ন আড্ডায় চলছে এসব নিয়ে নানা আলোচনা।
বন্দরনগরীর চকবাজার মোড়ের অদূরে চায়ের দোকানের এক আড্ডায় ভোটের চাঁদ উঁকি দিচ্ছে এমন কথাবার্তা। আড্ডায় উপস্থিতি সংখ্যা ৭ যুবক। এবার তারা নতুন ভোটার। তাদের মধ্যে থেকে একজন বললেন ভোটের যে বাতাস কাকে দেব ভোট। তখন অপরজন বললেন অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে। পৌষের শীতের সকালে তাদের এ আলোচনা তখন বেশ জমে উঠে। একজন বলে উঠেন এখানে আমরা সবাই সম্মানিত ভোটার। আড্ডা শেষে বের হওয়ার পূর্বে আলমগীর বলেন দেখে শুনে ভোট দিতে ঝুঁকি নেওয়া যাবে না। ভোটের পর যেন আমাদের আবার দেখা হয়। এমএ আজিজ স্টেডিয়াম এলাকায় একটি কাবাব হাউসে বসে কয়েকজন ক্রীড়াবিদ নির্বাচন নিয়ে করছেন নানা আলোচনা। এতে স্থান পেয়েছে সহিংসতা, পবিত্র আমানত ভোট ও সম্প্রীতি। ক্রীড়াবিদরা বলেছেন দেখতে দেখতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একেবারেই সন্নিকটে। কোথাও না কোথাও সহিংসতা হয়েছে। এক পক্ষ অপর পক্ষকে করছে দোষারোপ। এতে নির্বাচনের পরিবেশ বজায় থাকছে না।
ভোট পবিত্র আমানত হলেও পরিবেশ প্রতিকূলে থাকলে ভোটদান খুব সহজ কাজ হবে না। কেন্দ্রে গিয়ে বিফলে মনোরথে ফিরে আসতে হবে আমাদের। ব্যালট পেপার হাতে পাওয়ার আগেই হয়তো শুনতে হবে ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে অবশেষে যদি শুনতে হয় ভোট দেয়া হয়ে গেছে তখন মুষড়ে পড়তে হবে।
মনসুরাবাদ এলাকার মুদি দোকানদার মো. ইব্রাহিম বলেন, আমাদের এলাকায় প্রার্থীরা পুরানো। অতীতে দেয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পারার অজুহাত হিসেবে নানা যুক্তি খাড়া করেছিলেন। নতুন করে দিচ্ছেন প্রতিশ্রুতি। নানা আশ্বাস-প্রশ্বাস জনগণের মন নরমের চেষ্টা চলছে।
আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় ক্লিয়ারিং ফরওয়াডিং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার হিসাবে কর্মরত আছেন জয়নাল আবেদীন। চায়ের কাপে চুমুক দেওয়ার ফাঁকে ফাঁকে কথা হচ্ছিল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে। তিনি বলেন, সাধারণ ভোটারদের কাছে ইশতেহারের খুব বেশী মূল্য আছে বলে মনে হয় না। ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে ইশতেহার নয়, দৃশ্যমান রাজনৈতিক কর্মকান্ডই বেশী প্রাধান্য পায়। তারপরও নির্বাচনী ইশতেহারের একটা মূল্য হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার সম্পর্কে জানা।
ভোটের কথা প্রসঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলাপের পর কৌশলে জানতে চেয়েছিলাম কোন প্রার্থীকে ভোট দিবেন এর উত্তরে তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত সচেতন ভোটার। তাই কারও পক্ষে আমার মন বোঝা সহজ নয়। এমনকি অফিসের অন্যান্য লোকজনও বুঝতে পারেনা। এটা অত্যন্ত সাধনার কাজ। ব্যালটে সীল মারার আগেও সিদ্ধান্ত বদলে যেতে পারে আমার একান্তই নিজের ইচ্ছাতে। প্রার্থীরা যতই চেষ্টা করুক দলীয় আনুগত্যের বাইরে থাকা আমার মন সহজে গলবে না ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ