পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
চলতি অর্থ বছর প্রতি ১০ শলাকার এক প্যাকেট সিগারেটের দাম সরকার সর্বনিম্ন ৩৫ টাকা নির্ধারণ করে। আর দেশের বাজার ঘুরে দেখা গেছে অন্য চিত্র। দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতি প্যাকেট সিগারেট বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৫ থেকে ২০ টাকায়। নকল ব্যান্ডরোল সংযুক্ত করে কম দামে সিগারেট বিক্রি করায় বিপুল পরিমান রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে নিম্ন স্তরের প্রতি প্যাকেট (১০ শলাকা প্যাকেট) সিগারেটের দাম ২৭ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩৫ টাকা করা হয়। ৩৫ টাকা প্যাকেটের সিগারেট থেকে বিভিন্ন কর বাবদ সরকারকে পরিশোধ করতে হয় প্রায় ২৫ টাকা। রাজস্বের টাকা সিগারেট বাজারজাতকরণ করার আগেই পরিশোধ করতে হয়। বৈধভাবে কেউ সিগারেট বাজারজাত করতে চাইলে অবশ্যই ৩৫ টাকায় বিক্রি করতে হবে।
কিন্তু চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কিছু অসাধু উৎপাদনকারী মাত্র ১৫-২০ টাকা দামে সিগারেট বিক্রি করছে। নকল ব্যান্ডরোল দিয়ে এসব সিগারেট বাজারজাত করায় সরকার প্রতিবছর বিপুল পরিমান রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর বাজারের ৮০ শতাংশই দখল করে রেখেছে কমদামী বা নিম্নস্তরের সিগারেট।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সেনরগোল্ড ব্র্যান্ডের সিগারেট উৎপাদন করছে এসভি ট্যোবাকো, হেরিটেজ ট্যোবাকো, ন্যাশনাল ট্যোবাকো, ভারগো ট্যোবাকোসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানি। বিধি মোতাবেক একটি ব্রান্ডের সিগারেট উৎপাদনের জন্য রাজস্ব বোর্ডেও মুসক-১ অনুমোদন নিতে হয়। অবৈধভাবে একই নামে একাধিক কোম্পানি সিগারেট উৎপাদন করলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
দেশের বাজারে সাধারণত তিন ধরণের অবৈধ সিগারেট বিক্রি হচ্ছে। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নকল ব্যান্ডরোল দিয়ে স্থানীয় ভাবে উৎপাদন করে। বিদেশ থেকে চোরাচালানেরর মাধ্যমে সিগারেট এনে এবং নামী দামি ব্রান্ডের সিগারেট নকল করে বিক্রি করছে অসাধু চক্র।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নকল ব্যান্ড রোল দিয়ে বাজারজাত করা সিগারেটে মুনাফা বেশি হয়। যে কারণে খুচরা ব্যবসায়ীদের কমদামী সিগারেট বিক্রিতে আগ্রহ বেশি।
২০১৭-১৮ অর্থবছরে সরকার সিগারেট কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছিল। চলতি অর্থবছরের এখাতের রাজস্বের পরিমান বৃদ্ধিও পরিবর্তে কমার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এখাত থেকে সরকার প্রতিবছর ১৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যে কারণে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে নকল ব্যান্ডরোলের সিগারেট পরিহার করতে জনসচেতনামূলক প্রচারভিযান শুরু করেছে।
বন্দরনগরী চট্টগ্রাম শহরের বাইরের প্রতিটি পাড়া মহল্লায় ‘অবৈধ সিগারেট পরিবহন, পরিবেশন, বিক্রয় এবং ক্রয় করা দন্ডনীয় অপরাধ’ লেখা পোস্টার শাটানো হয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস এক্সাসাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত কয়েক মাসে র্যাব, পুলিশ ও বিজিবির সহায়তায় লাখ লাখ টাকার অবৈধ সিগারেট জব্দ করে কাস্টমস। মামলাও হয়েছে ১০টির মতো। এ ছাড়া সিলেটে এনবিআরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে।
রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস এক্সাসাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া বলেন, সরকারের রাজস্ব আয় বাড়াতে আমরা নকল ব্যান্ডরোলে সিগারেট বাজারজাত বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছি। প্রতি বছর এই কর্মর্সূচি পালন করা হলেও এবছর অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণে সারা বাংলাদেশেই সাঁড়াশি অভিযান চালানো হচ্ছে। তিনি জানান, এসকল অবৈধ সিগারেট দেশের অন্যান্য জেলায় উৎপাদন করে ভ্যাট না দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিতরণ করছে। এগুলো সারা দেশব্যাপি ছড়িয়ে আছে সঠিক পরিমাপ বোঝা মুশকিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।