পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মা-বাবাকে বিশেষ করে মায়েদের সন্তানকে বেগম রোকেয়ার আদর্শে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে যত্মবান হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই আমাদের নারীরা সুশিক্ষিত হবে এবং নিজের সন্তানকে উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস এবং মাদক থেকে ছেলে-মেয়েরা যেন দূরে থাকে সে জন্য মায়েদের বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।’
গতকাল সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বেগম রোকেয়া দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত ‘রোকেয়া পদক-২০১৮’ বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমসন্ত্রী। শেখ হাসিনা ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে কোনো দূরত্ব না রেখে বরং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য মায়েদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, যাতে করে কোনো সমস্যা হলেই ছেলে-মেয়েরা তাদের নিজেদের মনের কথা মা’কে বলতে পারে। কারণ মা-বাবাই হচ্ছে সন্তানের সব থেকে বড় বন্ধু। কাজেই সেই ধরনের একটা পরিবেশ সৃষ্টির উদ্যোগ মাকেই নিতে হবে।’ মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম স্বাগত বক্তৃতা করেন। এ বছর নারীর ক্ষমতায়নে আসামান্য অবদানের স্বীকৃাত স্বরূপ দেশের বিশিষ্ট ৫ জন মহিলাকে বেগম রোকেয়া পদক -২০১৮ তে ভূষিত করা হয়।
তারা হচ্ছেন- সাবেক প্রতিমন্ত্রী জেবুন্নেসা তালুকদার, কুমিল্লা মহিলা কলেজের সাবেক শিক্ষয়িত্রী অধ্যাপক জোহরা আনিস, সুনামগঞ্জের বিশিষ্ট সমাজ ও সাংস্কৃতিক কর্মী শিলা চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখিকা এবং সমাজকর্মী রমা চৌধুরী এবং ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার লেখিকা ও সমাজকর্মী রোকেয়া বেগম। এরমধ্যে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জেবুন্নেসা তালুকদার অনুষ্ঠানে পদক বিজয়ীদের পক্ষে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রী বেগম রোকেয়াকে নারী জাগরণের অগ্রদূত এবং সত্যিকারের প্রগতিশীল ব্যক্তিত্ব আখ্যায়িত করে বলেন, বেগম রোকেয়া আমাদের যে শিক্ষা দিয়ে গেছেন এবং তারর যে স্বপ্ন ছিল আজকে কিন্তু পৃথিবী সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশকে এইদিকে আমরা অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছি। তিনি এ সময় নারী জাগরণে বেগম রোকেয়ার একটি বাণী প্রণিধানযোগ্য উল্লেখ করে বলেন, ‘পুরুষের সক্ষমতা লাভের জন্য আমাদের যাহা করিতে হয় তাহাই করিব। যদি এখন স্বাধীনভাবে জীবিকা অর্জন করিলে স্বাধীনতা লাভ হয় তবে তাহাই করিব।’
নারীদের কল্যাণে নানা উদ্যোগ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সরকার মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ ৬ মাসে বর্ধিত করেছে, জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্যের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করে ৫০ করা, ৩ দফা বাড়িয়ে পোশাক শ্রমিকদের বেতন ৮ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। এছাড়া দেশের ২ কোটি ৪০ লাখ ছেলে-মেয়েকে বৃত্তি এবং উপবৃত্তি প্রদান করা হয় যার শতকরা ৭৫ শতাংশই নারীরা পাচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও শতকরা ৬০ ভাগ নিয়োগ নারীদের মধ্য থেকেই করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এভারেস্ট বিজয় থেকে শুরু করে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের কর্মকান্ডে নারীরা সাফল্যের সঙ্গে ভূমিকা রাখছেন। অর্জন করছেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সম্মাননা। প্রধানমন্ত্রী এ সময় দেশে নারীর ক্ষমতায়নের চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, এদেশের প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, বিরোধী দলের নেতা এবং সংসদ উপনেতা এই চারটি পদেই নারীরা আসীন, যার নজীর বিশ্বে বিরল।
তিনি বলেন, আজকে স্বাধীনতা অর্জনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমার মায়ের অবদান রয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা স্মৃতি রামন্থনে বলেন, আব্বাতো বেশির ভাগ সময় জেলেই কাটাতেন কাজেই আমার মা একদিকে যেমন আমাদের মানুষ করেছেন, আত্বীয়-স্বজন থেকে শুরু করে দলের লোকজন কেউ যদি অসুস্থ হতো বা নেতা-কর্মীরা যারা জেলে থাকতো সেরকম প্রত্যেকটি পরিবারকে তিনি সহযোগিতা করতেন পাশাপাশি দলকে সংগঠিত করা এবং দলকে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা এবং আমার বাবার মামলা-মোকাদ্দমাগুলোর তদারকি করা- তিনি একাধারে সব কাজ করে যেতেন।
তিনি বলেন, ‘আমার বাবার রািজনৈতিক জীবনে আমার মা’ ছিলেন একজন উপযুক্ত সাথী। যিনি সব সময় বাবার পাশে থেকে তারকে প্রেরণা যুগিয়ে গেছেন।’
জাতিসংঘের ইউনেস্কোর প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃত বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের প্রাক্কালে তারর মায়ের বলিষ্ঠ ভূমিকার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে কতজন কত রকম কথা বলেছে (পরামর্শ দিয়েছে)। আমার মা’ শুধু বলেছেন তোমার মনে যেটা আছে তুমি সেটাই বলবা, কারো কথা শোনার দরকার নাই।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউনেস্কোর ৭ মার্চের ভাষণকে সারাবিশ্বের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সংবাদটি যখন পেলাম তখন কেবলই আমার মা’য়ের কথাই বার বার মনে পড়েছে।
নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা জানান, নওগাঁর রাণীনগরে বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন করা হয়েছে। মানববন্ধন ও র্যালি শেষে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা খন্দকার মাকাম্বা মাহমুদার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম আল ফারুক জেমসের স্ত্রী জাকিয়া পারভীন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুনের স্ত্রী ফারহানা মুনমুন রহমান, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হারনুর রশিদসহ প্রমূখ। এছাড়া সাপাহারে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুল আলম শাহ চৌধুরী।
বামনা(বরগুনা)উপজেলা সংবাদদাতা জানান, বরগুনার বামনায় ৫ নারীকে জয়িতা সম্মাননা প্রদান করা হয়। উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উদ্দ্যোগে র্যালি শেষে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জাফরিন জাহান এর সভাপতিত্বে সম্মননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান সাইতুল ইসলাম লিটু মৃধা।
বোদা (পঞ্চগড়) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, বোদায় আলোচনা সভা ও শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কার্যালয়ের আয়োজনে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মরিয়ম খানম এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ মাহমুদ হাসান।
ইসলামপুর(জামালপুর)উপজেলা সংবাদদাতা জানান, জামালপুরের ইসলামপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নবী নেওয়াজ খান লোহানী বিপুল। পরে উপজেলা হল অডিটরিয়ামে উপজেলার ৫ জয়িতা নারী কে সম্মাননা দেওয়া হয়।
মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, মঠবাড়িয়ায় উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভ‚মি) রিপন বিশ্বাস এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মনিকা আক্তার, নারী কাউন্সিলর তাহেরুন্নেছাসহ প্রমুখ। শেষে পাঁচ জয়িতাকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
রামগড় (খাগড়াছড়ি) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, রামগড়ে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম সভাপতিত্বে র্যালি শেষে উপজেলা সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি থেকে বক্তব্য রাখেন, কৃষিবিদ ও কৃষি কর্মকর্তা নাছির উদ্দিন চৌধুরী।
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জে পাচঁ জয়িতাকে সংবর্ধনা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রূপগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি) মোঃ আসাদুজ্জামান মিয়া। প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান ভূঁইয়া।
উলিপুর (কুড়িগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কুড়িগ্রামের উলিপুরে উপজেলা পরিষদ হল রুমে উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা সমবায় অফিসার মোঃ শাহাদৎ হোসেনসহ প্রমূখ। শেষে ৩জন জয়িতাকে ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও একটি করে গায়ের চাদর প্রদান করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।