Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আপত্তি সংশয়ের মাঝেও প্রস্তুতি

চট্টগ্রাম-৯ আসন

রফিকুল ইসলাম সেলিম | প্রকাশের সময় : ৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

অনেক ভোটার স্মার্ট কার্ড পাননি। ন্যাশনাল আইডি কার্ডও অনেকের কাছে নেই। এ অবস্থায় ইভিএমে কিভাবে ভোট দেবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোটাররা। আবার ইভিএমের মাধ্যমে ‘কারচুপির চক্রান্তের’ অভিযোগ এনে মেশিনে ভোটগ্রহণ বন্ধের দাবি জানিয়ে রেখেছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। এমন অবস্থায় চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনে চলছে ইভিএমে ভোটের প্রস্তুতি। ভোটারদের অনেকেই জানেন না কিভাবে ভোট দিতে হয়। ভোট দেয়ার পর ফলাফল কি হবে তা নিয়েও রয়েছে সন্দেহ-সংশয়। তবে নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নগরীর কোতোয়ালী আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। আর এ লক্ষ্যে তারা সকল প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছেন।
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএম যন্ত্রটির সাথে এ সংসদীয় আসনের জামাল খান ওয়ার্ডের ভোটাররা কিছুটা পরিচিত। কারণ ২০১০ সালের চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এ ওয়ার্ডে প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিরোধী দল, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও সুশীল সমাজের আপত্তি অগ্রাহ্য করে সারা দেশে ছয়টি সংসদীয় আসনে ইভিএমে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। তার মধ্যে একটি আসন চট্টগ্রাম-৯। ইভিএম নিয়ে চট্টগ্রামে একদিনের একটি মেলা ছাড়া আর কোন কর্মসূচি ছিলনা। ফলে ভোটাররা ইভিএম নিয়ে সন্দেহ-সংশয়ের মধ্যে রয়েছেন। যারা ভোট গ্রহণ করবেন তারাও জানেন না কিভাবে কি করতে হবে।
শুরু থেকেই বিএনপি এর বিরোধিতা করে আসছে। আওয়ামী লীগ প্রকাশ্যে কিছু না বললেও ইভিএম নিয়ে তাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে উদ্বেগের কমতি নেই। তবে তরুণ ভোটারদের মধ্যে এ নিয়ে কিছুটা উৎসাহ এবং আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। তারা বলছেন, প্রথম ভোট ডিজিটাল পদ্ধতিতে দেবেন। এটি অত্যন্ত আনন্দের। তবে কেউ কেউ ভোটগ্রহণের পদ্ধতি এবং ফলাফল প্রকাশ নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেন। কোতোয়ালী এবং বাকলিয়ায় ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অনেক বস্তি রয়েছে। বস্তির বাসিন্দা নিরক্ষর ভোটাররা আদৌ ইভিএমে ভোট দিতে পারবেন কিনা তা নিয়েও সংশয় রয়েছে বড় দুই দলের নেতাদের মধ্যে।
তবে নির্বাচন কর্মকর্তারা বলছেন, সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। ভোটারদের মাঝেও ইভিএম নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালানো হবে। কোতোয়ালী আসনে ৭২৫টি মেশিনে ভোটগ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে জেলা নির্বাচন অফিস সব প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছে। এ আসনের ১৪৪টি কেন্দ্রে বুথ রয়েছে ৭২৫টি। প্রত্যেক বুথে একটি করে ইভিএম মেশিন বসানো হবে। ভোট গ্রহণের জন্য তালিকাভুক্ত কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ শুরু হবে ১৪ ডিসেম্বর থেকে। পর্যায়ক্রমে সবাইকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
এ আসনে মহাজোটের প্রার্থী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। আর বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। বড় দুই দলের দুই প্রার্থী বয়সে তরুণ এবং স্মার্ট। স্মার্ট প্রার্থীদের আসনে স্মার্ট কার্ডে ভোট দেবেন ভোটাররা। তবে স্মার্ট কার্ড বিলি-বণ্টনের সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ আসনে ৬০ থেকে ৭০ ভাগ স্মার্ট কার্ড বিলি হয়েছে। যেসব ভোটার স্মার্ট কার্ড পাননি তারা ন্যাশনাল আইডি কার্ড দিয়ে ভোট দেবেন। তবে সাধারণভাবে ভোট দিতে কোন কার্ডেরই প্রয়োজন হয় না। ভোটার নাম্বার দিয়েই ভোট দেয়া যায়।
ইভিএমে ভোট যেভাবে
ভোটার বুথে যাওয়ার পর পোলিং কর্মকর্তা প্রথমে আঙুলের ছাপ, ভোটার নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর বা স্মার্ট পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ভোটারকে শনাক্ত করবেন। এরপর ডাটাবেজে ভোটার বৈধ হিসেবে শনাক্ত হলেই প্রজেক্টরের ডিসপ্লেতে সেটি দেখা যাবে। পরবর্তীতে একটি টোকেন ভোটারকে দেওয়া হবে। ভোটার টোকেন নিয়ে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছে যাবেন। টোকেন দেখে স্ক্যানারের মাধ্যমে শনাক্ত করে ব্যালট ইস্যু করে দিবেন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা। এরপর ভোটার গোপনকক্ষে গিয়ে পছন্দের প্রার্থী ও প্রতীক দেখে বাম দিকে বোতামে চাপ দিয়ে সিলেক্ট করে ব্যালট ইউনিটের সবুজ রঙের কনফার্ম বোতাম চেপে তার ভোট শেষ করবেন। ভুল প্রতীক সিলেক্ট হয়ে গেলে ব্যালট ইউনিটের লাল রঙের ক্যান্সেল বোতাম চেপে পরবর্তীতে সঠিক প্রতীক সিলেক্ট করতে পারবেন ভোটার। তবে এ সুযোগ দুবারের বেশি পাওয়া যাবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ