Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মনোনয়ন ম্যাজিকে সিলেট বিএনপি

ভোট ও রাজনীতিতে যেতে চায় বহুদূর

মিসবাহ উদ্দিন আহমদ | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০১৮, ৯:১৬ পিএম | আপডেট : ১০:২৬ পিএম, ২৩ নভেম্বর, ২০১৮

কোন দল থেকে কে প্রার্থী হচ্ছেন এ নিয়ে সর্বস্তরে রয়েছে আগ্রহ গুঞ্জন। বিশেষ করে রাষ্ট্র ক্ষমতায় কে বসবে তা নিয়েও রয়েছে আগ্রহ। পূণ্য ভূমি সিলেট-১ আসন নিয়েও আলাদা আগ্রহ অশেষ।
মর্যাদাপূর্ণ এই আসনটিতে কে হচ্ছেন দল বা জোটের প্রার্থী, তা জানতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষায়। প্রার্থীর জন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্তের দিকেই তাকিয়ে আছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। তবে দলের নেতাকর্মীরা মনে করছেন প্রার্থী মনোনয়নে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট রাজনীতিক বিষয়টিকে বিবেচনায় নিবে। ব্যবসায়িক ব্যক্তিদের শুধু মাত্র রাজনীতিক পরিচয়ে যেন মনোনয়ন না দেওয়া হয়। সেকারণে মনোনয়নে ম্যাজিক দেখা পারলে সিলেট বিএনপি ভোট ও রাজনীতে বহুদুর যেতে চায়।
এদিকে, স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে দেশে যতো জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, সবগুলোতে সিলেট-১ আসনে যে দলের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন, সে দলই সরকার গঠন করেছে। এমন সমীকরণের ফলে এ আসনটি সবসময় সব দলের কাছে বাড়তি গুরুত্ব পায়। গ্রহণযোগ্য, বিতর্কহীন ও সেরা প্রার্থীই এ আসনে দেয়ার চেষ্টা করে রাজনৈতিক দলগুলো। একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও এর ব্যত্যয় ঘটবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিলেট-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী কে হচ্ছেন, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে ধোঁয়াশা। দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির মাঠে কাজ করলেও সম্প্রতি এ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় যোগ হয়েছে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরীর নামও। গুঞ্জন আছে তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে ঘিরেও। এছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরীও এ আসনে লড়তে চেয়ে দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনে জমা দিয়েছেন।
স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা মনে করছেন, ভিআইপি এ আসনে কে প্রার্থী হচ্ছেন, তা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিশ দলীয় জোটের মধ্যে সমন্বয়ের ওপর নির্ভর করছে। পৃথক এই দুই জোটের মধ্যে বিএনপি সমন্বয় করেই আসনটিতে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারে। তবে বিএনপি নিজ দলের বাইরে জোটের কোন দলের নেতাকে এ আসনটি ছেড়ে দেবে না বলেই মনে করছেন নেতাকর্মীরা। স্থানীয় নেতাকর্মীদের এমন গুঞ্জনও রয়েছে, দলীয় প্রধান খালেদা জিয়া যদি নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করার সুযোগ পান, তবে তিনিও হয়তো এ আসনটিতে প্রার্থী হতে পারেন।
দলের বা জোটের প্রার্থীতার ব্যাপারে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির ত্যাগী ও নিবেদিত প্রাণ নেতাদেরকেই চান দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি যারা দলের দুর্দিনে মাঠে কাজ করেছে, মামলা-হামলার ভয় তোয়াক্কা করে যারা ‘গণতন্ত্র মুক্তির’ আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে তাদের মাঝ থেকেই যেনো দল বা জোটে প্রার্থীর মনোনয়ন দেয়া হয়। তারা এমন প্রার্থী চান যিনি রাজনীতিক হিসেব পরিচিত। ব্যবসায়ী প্রার্থীতে তাদের চাহিদা বা সমর্থন নেই। বিগত সময়ে অনেক ব্যবসায়ী এমপি হয়েছেন কিন্তু রাজপথে নেতাকর্মীদের জন্য কিছ্ ুকরেননি। এবারও প্রার্থী হওয়ার মতলবে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন তাদের অনেকে। নেতাকর্মী প্রত্যাশা করছেন আগামী দিনের পথ মেপে মনোনয়ন যেন চূড়ান্ত করে দলটি। প্রার্থী দলের জন্য যেন সংসদে রাজপথে দাড়াতে পারে। উদ্যেমী, কর্মী বান্ধব, তারুন্যে ভরপুর হয়। সিলেটের ১৯টি আসনে এমন বিচারে মনোনয়ন প্রত্যাশিরাও রয়েছেন। প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ বা মহাজোটকে বর্তমান ও ভবিষ্যত মুকাবেলায় বলবান সাহসী প্রার্থীর বিকল্প নেই। অনেকে মনে করছে ভোট রাজনীতিতে বিএনপির পাল্লা খুবই ভারী। কলা গাছও যদি ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করে তাহলে নির্বাচনে জয় লাভ করবে। কিন্তু পরিস্থিতি এখানেই শেষ নয়। ভবিষ্যত বিবেচনায় আগামী দিনের উপযোগী প্রার্থী দিতেই হবে বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে। সেই মানের নেতৃত্বশীল ব্যক্তি রয়েছেন সিলেটের প্রতিটি আসনে। প্রচলিত একটি ধারনা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে। টাকা বিনিয়মেয় বিএনপির টিকিট বিক্রি হয়। সেই ধারনার বাস্তবতা দেখতে চায় না নেতাকর্মীরা। তারা দলের নীতি নির্ধারক মহলের নিকট জোর দাবি করছে তারুণ্য নির্ভর রাজনীতিক ব্যক্তি যেন মনোনয়নে প্রাধান্য পায়।
সিলেট-১ আসনে বিএনপির জনপ্রিয়তা এখন অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি। এক কথায় বলা যায় জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। এ আসনে যে কাউকেই প্রার্থী দিলেও বিজয় সুনিশ্চিত। এমন আত্মবিশ্বাসে বসে থাকলে চলবে না। এটা মাথায় রাখা প্রয়োজন ভোটাররা এখন অনেক সচেতন। তারা যোগ্যদেরকেই বেছে নেবেন। তাই এখানে অবশ্যই সেরা প্রার্থী দিতে হবে। যিনি সবার তৃণমূল থেকে হাইকমান্ড সকলের কাছেই গ্রহণযোগ্য। এমনটিই ভাবনা সিলেটের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের। আর দলের প্রার্থী বাছাই যদি সঠিক হয় তবে বিএনপি আগামীতে অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, সিলেট সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলার একাংশ নিয়ে গঠিত সিলেট-১ আসন। স্বাধীনতার পর থেকে অনুষ্ঠিত ১০টি সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ চারবার এবং বিএনপি ও জাতীয় পার্টি দুইবার করে বিজয়ী হয়েছে। এ আসন থেকে বিজয়ী হয়ে প্রয়াত সাইফুর রহমান অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে এ আসনের সাংসদ আবুল মাল আব্দুল মুহিতও আছেন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ