Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সচিব বদলি ও ডিএমপি কমিশনার প্রত্যাহার দাবি

অভিযুক্ত ইসি সচিবের কাছে ৯ দফা অভিযোগ দিলো বিএনপি

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৮ এএম


নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরী না হওয়া এবং বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষগুলোর নেতা-কর্মীদের উপর হামলা, মামলা, গ্রেফতার ও হয়রানি করে নির্বাচনী পরিবেশ বিনষ্ট করা, নির্বাচনকালীন সময়ে নানা অনিয়মের জন্য সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনই দায়ী। দলীয় সরকারের অধীনে মাঠ পর্যায়ে ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা), এসপি (পুলিশ সুপার), ইউএনও (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা), এবং ডিসি (জেলা প্রসাশক) হিসেবে কর্মরতরা সরকারি দলের পক্ষ নেয়ায় নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হচ্ছে না। এছাড়া নির্বাচনকালীন সময়ে এসব কর্মকর্তা নির্বাচন দেখভালের দায়িত্বে থাকায় পক্ষপাতমূলক আচরণ করার আশঙ্কাও থেকে যায়। যে কারণে নির্বাচন কমিশন (ইসি) চাইলেও একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা কোনোক্রমেই সম্ভবপর হয়ে উঠবে না।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) গতকাল মঙ্গলবার দেয়া বিএনপি মহাসচিব ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত চিঠিতে পৃথক আরেকটি চিঠিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ক’দিন আগে সংঘটিত সংঘর্ষের ঘটণার জন্য নির্বাচন কমিশন ও পুলিশের চারজন কর্মকর্তাকে দায়ী করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, ইসির যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহম্মদ খান এবং ডিএমপি’র সংশ্লিষ্ট জোনের উপ পুলিশ কমিশনারের বিচার দাবি করেছে দলটি। একইসঙ্গে পুলিশ ও প্রশাসনে মাঠপর্যায়ে কর্মরতদের অতিদ্রæত অন্যত্র বদলী ও প্রত্যাহারেরও দাবি জানানো হয়েছে। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের চিঠিগুলো তুলে দেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, নির্বাচন কমিশন তড়িঘড়ি করে ৮ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। সরকারি দল ৯ নভেম্বর থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত দলীয় কার্যালয়ের সামনে রাস্তা বন্ধ করে যানজট সৃষ্টির মাধ্যমে জন দুর্ভোগ সৃষ্টি করে দলীয় মনোনয়ন বিতরণ করে। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ঢাকা-ঢোল পিটিয়ে মটরসাইকেল, গাড়ি, পিকআপসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ধানমন্ডির মতো জনাকীর্ণ এলাকায় রাস্তা বন্ধ করে মনোনয়ন সংগ্রহ করে। এছাড়া নিজেদের প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়। এ সময় পুলিশি তৎপরতা দৃশ্যমান ছিল না। এমনকি হতাহতের ঘটনায় মামলা কিংবা তাদের কোনো নেতা-কর্মী গ্রেফতার হয়েছে এমন সংবাদও গণমাধ্যমে আসেনি।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়,১৩ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি প্রতিপালনের নির্দেশনা নেতা-কর্মী-সমর্থকসহ জনগণের অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করেছে। নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের দেয়া বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য এবং ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামানের বক্তব্যে ঘটনা সংঘটনের ইন্ধনের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়। চিঠিতে প্রশ্ন রাখা হয়, গত ১২-১৩ নভেম্বর নজিরবিহীন জনসমাগম সত্তে¡ও এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি, তাহলে কেন ১৪ নভেম্বর এ ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনা সংঘটিত হলো? চিঠিতে দাবি করা হয়, এই সন্ত্রাসী হামলায় বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী আহত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ে করা হয়েছে। পুলিশ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলায় ৪৭২ জনকে অভিযুক্ত করেছে। ৭০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ৩৮ জন নেতাকর্মীকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর যেখানে বিএনপি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল, সেখানে নির্বাচন কমিশন তার চিঠির মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে চরম বিঘœ সৃষ্টি, নিরপরাধ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরে সরাসরি ইন্ধন জুগিয়েছে।
এই অবস্থায়, নির্বাচন কমিশনের সচিব, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, সংশ্লিষ্ট জোনের উপ পুলিশ কমিশনার এবং উদ্দেশ্যমূলক জারিকৃত পত্রে স্বাক্ষরকারী নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের যুগ্ম সচিবের (নির্বাচন পরিচালনা-২) বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। তাছাড়া তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনের আশ্রয় নেয়া হবে।এদিকে প্রশাসনে ৯ দফা রদবদলের সুপারিশ করে দেয়া পৃথক আরেকটি চিঠিতে নির্বাচন কমিশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশ সদর দফতরের মাঠ পর্যায়ের বদলির দাবি জানিয়েছে বিএনপি। চিঠিতে বলা হয়, ৮ নভেম্বর আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণায় সিইসি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কথা বলেন। অথচ আজ পর্যন্ত তা দৃশ্যমান হচ্ছে না। এ অবস্থায় মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনে রদবদলের অনুরোধ জানিয়ে এই চিঠি দেয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনেও সকল বিভাগীয় কমিশনার, উপমহাপুলিশ পরিদর্শক, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে প্রত্যাহার করতে হবে।একই সঙ্গে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, মেট্রোপলিটন এলাকার উপ-পুলিশ কমিশনার পদে যারা একই জায়গায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে আছেন তাদের বদলির কথা বলা হয়েছে।

 



 

Show all comments
  • Ahmed Saleh ২১ নভেম্বর, ২০১৮, ২:১৭ এএম says : 1
    বিএনপি পাগল হয়ে গেছে। উনি একজন অফিস্যার, উনার অনেক দায়িত্য আছে। পক্ষে গেল ভাল আর বিপক্ষে গেলে খারাপ- এই কমন কথা পাগলামি ছাড়া আর কি।
    Total Reply(0) Reply
  • মোকাম্মল হোসেন ২১ নভেম্বর, ২০১৮, ২:১৮ এএম says : 0
    শতভাগ যৌক্তিক দাবি। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চাইলে অবশ্যই এদের বদলি করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • মিরাজ ২১ নভেম্বর, ২০১৮, ২:১৯ এএম says : 0
    সহমত। বদলি করলে কিছুটা হলেও পরিবেশ ফিরবে।
    Total Reply(0) Reply
  • গালিব রহমান ২১ নভেম্বর, ২০১৮, ২:২১ এএম says : 0
    েএরা তো আওয়ামীলীগের চেয়ে বড় আওয়ামী লীগার। এসব দলকানা কর্মকর্তাদের স স পদে আসীন রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন কল্পনা করাও বোকামি।
    Total Reply(0) Reply
  • তমিজ উদ্দিন ২১ নভেম্বর, ২০১৮, ২:২২ এএম says : 0
    অবশ্যই বদলি ও প্রত্যাহার করতে হবে। সম্ভব হলে তাদের অব্যাহতি দেয়া হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • মো ; সোহেল হোসেন ২১ নভেম্বর, ২০১৮, ২:২৩ এএম says : 0
    সবাই তাদের বদলি চাই।
    Total Reply(0) Reply
  • Borhan Uddin Borhan ২১ নভেম্বর, ২০১৮, ১০:১৫ এএম says : 0
    আমরা সাধারন জনগন বিএনপির যৌক্তিক এই দাবির সাথে একমত প্রকাশ করছি।
    Total Reply(0) Reply
  • matin ২১ নভেম্বর, ২০১৮, ৬:২৪ পিএম says : 0
    ekmot
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ