Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ‘আগুন সন্ত্রাস আবার শুরু হয়েছে’ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি তাদেরকে বলব, নির্বাচনে যেহেতু আসবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্বাচনটা যেন সুষ্ঠুভাবে হয় সেটাই চেষ্টা করা। অন্তত নির্বাচন বানচালের চেষ্টা যেন তারা না করে। নির্বাচন বানচালে বিএনপি ষড়যন্ত্র করার অপচেষ্টা করলে তা জনগণকে নিয়ে প্রতিহত করা হবে।
গতকাল ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কাযালয়ে দলের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভার সূচনা বক্তব্যে ‘সাজাপ্রাপ্ত ও খুনিদের’ সঙ্গে ঐক্য করা নেতাদেরও সমালোচনা করেছেন তিনি। বৈঠক সূত্র জানায়, মনোনয়ন বোর্ডের সকল সদস্যকে বিভিন্ন সময়ের জরিপের কপি দেয়া হয়। এ জরিপগুলো তারা স্টাডি করবেন এবং পরবর্তী কয়েকটি সভায় প্রার্থীদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করবেন। যাতে করে সঠিক, যোগ্য ও উইনেবল ক্যান্ডিডেট মনোনয়ন দেয়া যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই চেষ্টা তারা ২০১৪ তে করেছে, সফল হতে পারেনি। আগামীতেও পারবে না। কারণ জনগণ আমাদের সাথে আছে। জনগণ চায়, একটা উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হোক। যে নির্বাচনে তারা ভোট দিয়ে তাদের মন মত সরকার গঠন করবে। সরকারপ্রধান বলেন, নির্বাচনে সব দল আসার ঘোষণায় দেশে যখন একটি উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তখনই নয়াপল্টনের ওই ঘটনা ঘটল। জনগণ যখন উৎসবমুখর হয় তখনতো বিএনপির খুব খারাপ লাগে। তারা সেই উৎসবে পানি ঢালে। সেটাই কালকে আমরা দেখলাম। কোনো কথা নেই বার্তা নেই। সেখানে বিএনপির এক নেতা তার মিছিল নিয়ে এলো। যেটা মিছিল নিয়ে আসার কথা না। তারপরও নিয়ে এসে সেখানে মারপিট, অনেকগুলো পুলিশ আহত। তিনটা গাড়িও পোড়ালো।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৪ সালে তারা যে অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল, ২০১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, আবার ঠিক সেই অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করল। মানে অগ্নিসন্ত্রাস ছাড়া, মানুষকে আগুন দিয়ে পোড়ানো ছাড়া বিএনপি কোনো কাজ করতে পারে না- এটাই প্রমাণ।
শেখ হাসিনা বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। যখন বাংলাদেশের সমস্ত মানুষ একটা আনন্দমুখর পরিবেশে, সবাই খুশি, নির্বাচন করবে, নির্বাচনে জনগণ ভোট দেবে, তাদের মনমত প্রার্থীকে জয়যুক্ত করবে। ঠিক সেসময়ই বিএনপি তাদের স্বরূপে আবার ফিরে এসেছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এ ধরনের কাজ করার পর একজনের দোষ আরেক জনের ঘাড়ে দেওয়া- উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে দেওয়া এ বিষয়ে তারা পারদর্শী। তারা হুট করে বলে দিল ছাত্রলীগ যুবলীগের ছেলেরা এ কাজ করেছে। ছাত্রলীগ গেল কখন এবং যাবে কেন। ভিডিও ফুটেজেও তো সবার চেহারা দেখা যাচ্ছে একটাও কি ছাত্রলীগ-যুবলীগের কারো চেহারা আছে; সবই তো বিএনপি’র গুন্ডাদের চেহারা। সবাই তো বিএনপির।
৪ হাজার ২৩ জন প্রার্থীর বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, তাদের সঙ্গে কিছু কথা বলেছি, এতো প্রার্থীর মাঝে প্রার্থী বেছে নেওয়া কঠিন কাজ। ৪ হাজারের মাঝে ৩০০ বেছে নেওয়া কঠিন কাজ। তারপরও আমরা মনোনয়ন বোর্ডে বসেছি যাচাই বাছাই করে ঠিক করবো। এসময় তিনি বলেন, আমি আশা করি, জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে তাদের জীবন মানের উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।
দলের সংসদীয় বোর্ডের এ বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সাজেদা চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফরুল্লাহ, ওবায়দুল কাদের, ড. আব্দুর রাজ্জাক, কর্নেল (অব.) ফারুক খান, রাশিদুল আলম প্রমুখ।
তোষাখানার উদ্বোধন
প্রধানমন্ত্রী গতকাল সকালে রাজধানীর বিজয় স্মরণীতে বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরের পাশে নবনির্মিত তোষাখানা’র উদ্বোধন করেন। রাষ্ট্রীয় তোষাখানার ৫ তলার অত্যাধুনিক ভবনটির আয়তন ৫০ হাজার স্কয়ার ফুট। ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই তোষাখানায় দেশের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রি পরিষদের সদস্যবৃন্দ এবং কর্মকর্তাগণ যে সব রাষ্ট্রীয় উপহার পাবেন তা সংরক্ষণ করা হবে।
রাষ্ট্রীয় পদাধিকারীগণের দেশ-বিদেশ থেকে প্রাপ্ত উপহার সামগ্রি সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ উপহার সামগ্রি দেশের সম্পত্তি এবং দেশের সন্মান ও মর্যাদার প্রতীক। কাজেই এসবকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, অতীতে তার নামে এবং নৌকার প্রতীক সম্বলিত অনেক উপহার, বিভিন্ন দুর্লভ আলোকচিত্র বিএনপি-জামাত সরকারের সময়ে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। তিনি বলেন, জাতির পিতার নির্দেশেই ‘তোষাখানা আইন ১৯৭৪’ (রক্ষণাবেক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনা) প্রণীত এবং বঙ্গভবনে এই তোষাখানা স্থাপন করা হয়।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো.নজিবুর রহমান, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, সেনাবাহিনী প্রকৌশল বিভাগের প্রধান মেজর জেনারেল সিদ্দিকুর রহমান সরকার অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, মন্ত্রি পরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, কূটনৈতিক মিশনের সদস্যবৃন্দ, নৌ বাহিনী ও বিমানবাহিনী প্রধানগণ এবং উর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রি পরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।#



 

Show all comments
  • Mohammad Alam ১৬ নভেম্বর, ২০১৮, ১:৫৫ এএম says : 3
    Ke je nirbachon banchaler sorojontro korse sheta bojha dai
    Total Reply(0) Reply
  • Kazi Manik ১৬ নভেম্বর, ২০১৮, ১:৫৬ এএম says : 3
    এভাবে ক্ষমতায় থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন কি আদৌ সম্ভব? মনে হয় না
    Total Reply(0) Reply
  • কবির ১৬ নভেম্বর, ২০১৮, ১:৫৬ এএম says : 1
    ঠিক
    Total Reply(0) Reply
  • Faruque Hasan ১৬ নভেম্বর, ২০১৮, ১:৫৭ এএম says : 3
    কথায় বলে, ও নিজের বেলায় ষোল আনা আর অন্নোর বেলায় ডং,ডংগা,ডং,ডং। মানুষ সব বোঝে মনে রাখবেন সময় সবসময় এক রকম চলেনা।
    Total Reply(0) Reply
  • Alam ১৬ নভেম্বর, ২০১৮, ২:০০ এএম says : 3
    পাতানো নির্বাচনের আবার বানচাল!
    Total Reply(0) Reply
  • আবুল কালাম পাটোয়ারী ১৬ নভেম্বর, ২০১৮, ২:৩৮ এএম says : 3
    খোকন আমার জীবনে দেখলাম না আওয়ামী লীগ চক্রান্ত ছাড়া ভালো কোন কাজ করতে।ওরা আসলেই প্রতারক ও ধোঁকাবাজ।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ১৬ নভেম্বর, ২০১৮, ৮:২৬ পিএম says : 0
    প্রধানমন্ত্রী কওমি জননী শেখ হাসিনা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির প্রহসন ধরে ফেলে বলেছেন, নির্বাচনে অংশ গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর তারা যেন নির্বাচন বানচালের চেষ্টা না করে। আর যদি আগুন সন্ত্রাসের সৃষ্টি করে তাহলে জনগণকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রতিহত করবেন। আমারা কওমি জননীর এই কথার সাথে একমত পোষন করছি, আমাদের (মুক্তিযোদ্ধাদের) এই শেষ বয়সেও নেত্রীর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে তার পাশে দাঁড়িয়ে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে অপশক্তিকে নির্মূল করতেই হবে। এটাই এখন আমাদের ’৭১ এর মত করে প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হয়ে এদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে। অপশক্তিকে যে কোন মূল্যে বাংলার মাটি থেকে চির বিদায় করতে হবে, এটাই হউক আমাদের শফত। আল্লাহ্‌ ’৭১ মতো আমাদের সহায় হউন। আমীন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ