পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আওয়ামী লীগের সকল প্রার্থীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশ দিয়ে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি যাকেই মনোনয়ন দেবো, তাকেই আপনাদের মেনে নিয়ে কাজ করতে হবে। তার পক্ষেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। আগামী নির্বাচন খুব কঠিন নির্বাচন হবে। খুব প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ হবে। এই সময় সবার ঐক্যবদ্ধ থাকা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। তা ছাড়া এ নির্বাচনে বিজয় আসবে না।
এ সময় জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভা মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যানদের নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হবে না বলে জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। গতকাল দুপুরে গণভবনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। বৈঠকে উপস্থিত মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। বেলা ১১টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎকার নেয়ার কথা থাকলেও স্থান সঙ্কুুলান না হওয়ায় গণভবনে অনুষ্ঠানটি হয়। সাক্ষাৎকার হলে নির্দিষ্ট করে কোনো প্রার্থী বা আসনের প্রার্থীদের নিয়ে আলাদাভাবে কথা বলেননি শেখ হাসিনা। সবার উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী প্রায় এক ঘণ্টা ১০ মিনিট বক্তব্য রাখেন।
এ সময় তিনি বলেন, মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেক কিন্তু প্রার্থী দেয়া হবে একজন। তাই কারো পছন্দ হবে কারো পছন্দ হবে না, সে জন্য প্রার্থী দেখে নয়; নৌকা দেখে কাজ করবেন। এখন হয়তো অনেকেই মনে করছেন, মনোনয়ন না পেলে নিজ দলের প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করবেন। তাকে নির্বাচনে হারিয়ে দেবেন। আপনারা এখন বুক ফুলিয়েই নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নিতে পারবেন। কিন্তু মনে রাখবেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই বুক ফুলিয়ে চলতে পারছেন। নিজ দলের বিপক্ষে কাজ করেন বুক ফুলিয়ে। যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না আসে, আমি যদি প্রধানমন্ত্রী না থাকি, তা হলে আপনারা কি এলাকায় বুক ফুলিয়ে চলতে পারবেন? বিএনপি-জামায়াত কি আপনাদের ছেড়ে দেবে? এখন হয়তো এমপি না হলেও এলাকায় সুন্দরভাবে দাপটের সাথে থাকতে পারবেন। তাই প্রার্থী না দেখে নৌকার পক্ষে কাজ করুন। নাকে রুমাল দিয়ে হলেও কাজ করুন।
এ সময় তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, এক রাজা একটি পুকুর খনন করলেন। এরপর তার প্রজাদের বললেন, পুকুরে সবাই যেন এক বালতি করে দুধ ঢালে। কিন্তু প্রজারা প্রত্যেকে মনে করল আমার এক বালতি দুধ না দিলে কিছু হবে না। অন্যরা দিলে পুকুর তো এমনি ভরে যাবে। কিন্তু পরদিন সকালে দেখা গেল পুরো পুকুর শূন্য। এক বালতি দুধও নেই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদেরও বলতে চাই; এ রকম করে নৌকাকে পরাজিত করবেন না। অন্যদের ক্ষমতায় নিয়ে আসবেন না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমাদের বিজয় হবে। এ জন্য আপনাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। কী আপনারা এক হয়ে কাজ করবেন? যাকেই নৌকা দেবো তার পক্ষে কাজ করবেন? মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ‘হ্যাঁ’ সূচক কথা বলে হাত তোলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা কথা দিলেন?’ এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কথায় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সবাই সম্মতি দেন।
নিজের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদি দেশে প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচন হতো, তা হলে আমি একটুও চিন্তা করতাম না। কারণ আমি বিশ্বাস করি, দেশের মানুষ আমাকে নির্বাচিত করবে। কিন্তু যেহেতু দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা সংসদীয়, তাই প্রত্যেক এমপিকে নিয়ে আমার চিন্তা করতে হয়। তাই আপনারা সবাই নৌকার পক্ষে কাজ করবেন।
প্রার্থীদের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি সবার সম্পর্কে জানি। আপনাদের সব তথ্য আমাদের কাছে আছে। কারা কি করেছেন, কারা কোন দল থেকে এসেছেন আমি সব জানি। বেশি লাফালাফি করার দরকার নেই। কোনো গ্রুপিং করারও দরকার নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা সবাই যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ না করেন, তা হলে আগের মতো বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনের সবার দায়িত্ব নিতে পারব না। এবার নেত্রীকে বেঁটে খাওয়ালেও কাজ হবে না। আমরা আগামী নির্বাচন নিয়ে কাজ করছি না। আমরা কাজ করছি আগামী প্রজন্ম নিয়ে।
সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সতর্ক করে দিয়ে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে। আর যারা প্রার্থীর বিরুদ্ধে পর্দার আড়ালে থেকে কাজ করবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ দিকে চার দিনের মনোনয়ন ফরম বিক্রিতে একটি আসন বরগুনা-১ এ ৫২ জন প্রার্থীসহ প্রত্যেক আসনে গড়ে ১৫ জন প্রার্থী রয়েছে। ২৫ জন করে প্রার্থী রয়েছে এমন আসনের সংখ্যাও অনেক। এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব আসনে যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে উঠছে না। এমপিরা সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিতে পারছেন না। তা না হলে এত মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকত না। আপনারা যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করুন। তিনি বলেন, এত মনোনয়ন ফরম বিক্রি হওয়ায় দলের ফান্ড ভারি হয়েছে। কিন্তু এও ফুটে উঠেছে, দলে নেতৃত্বশূন্যতা আছে। এক-দু’জনের নেতৃত্বে সবাইকে একীভ‚ত করতে পারলে এত মনোনয়ন ফরম বিক্রি হতো না।
তিনি আরো বলেন, সারা দেশেই উন্নয়ন হয়েছে। তবে উন্নয়নের বার্তা অনেক জায়গায় পৌঁছায়নি। তাই এত প্রার্থী। আপনারা কাদা ছোড়াছুড়ি না করে সরকারের উন্নয়নের বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেবেন। মনোনয়ন দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার জরিপের ভিত্তিতে মনোনয়ন দেয়া হবে। ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় ব্যক্তিকে আমরা দেবো। বড়-ছোট নেতা বা পদ দেখে মনোনয়ন দেয়া হবে না।
তরুণ মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বিষয়ে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা অনেকটা পজিটিভ এবং অনেককেই মনোনয়ন দেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, যে সব আসনে প্রার্থী পরিবর্তন হবে সেসব আসনে তরুণদের প্রাধান্য দেবেন। তরুণদের ভবিষ্যত তিনি নিজের হাতে গড়বেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।