Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সংলাপে প্রধানমন্ত্রীকে যেসব প্রস্তাব দিয়েছে ঐক্যফ্রন্ট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ নভেম্বর, ২০১৮, ৫:০৫ পিএম

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপে চারটি মূল প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। আজ বুধবার সকাল ১০টা ১০ মিনিটে শুরু হওয়া এই সংলাপ চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত।

সংলাপে ঐক্যফ্রন্টের দেওয়া মূল প্রস্তাবগুলো হলো-নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নির্বাচনের সমতল ভূমি তৈরি ও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন। সংলাপে নিজ নিজ জোটের নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ড. কামাল হোসেন।

 

১. নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়া :

বিদ্যমান সাংবিধানিক বিধান ও প্রথার আলোকে এবং বিশেষত ১২৩ (৩) (খ) এর আলোকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নভেম্বরের শেষে অথবা ডিসেম্বর মাসে মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে বর্তমান সংসদ ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ প্রদান করতে পারেন এবং সেই অনুযায়ী সংসদ ভেঙে দেওয়া সম্পূর্ণ সংবিধান সম্মত হবে।

অনুচ্ছেদ ১২৩ (৩) (খ) অনুযায়ী উপরে উল্লেখিত পন্থায় সংসদ ভেঙে দেওয়ার তারিখ থেকে পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন ১১তম সংসদ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করবে। সেক্ষেত্রে সংসদ ভেঙে দেওয়ার তারিখ অনুযায়ী ১১তম সংসদ নির্বাচন ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারির শেষে অথবা মার্চে অনুষ্ঠিত হতে পারে। বিভিন্ন দেশের সাংবিধানিক রীতি অনুসারে সংসদ ভেঙে দেওয়া ও নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্যে প্রায় ৪৫ দিন ব্যবধান থাকা বাঞ্ছনীয়।

২. নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন :

নির্বাচন কমিশনের প্রধান হিসেবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮ (৬) অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের নিকট পদত্যাগ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করতে পারেন। সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনে নতুন সচিবও নিয়োগ করা প্রয়োজন।

৩. নির্বাচনের সমতল ভূমি :

খালেদা জিয়া ও অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের অন্তত জামিনে মুক্তি, নির্বাচনকালীন সময়ে মামলা দায়ের না করা, জামিনের বিরোধীতা না করা, সভা-সমিতি, আলোচনা ও সংগঠনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, বাক স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, চিঠিপত্র, টেলিফোন ও মোবাইলের কথাবার্তা ফাঁস রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।

৪. নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার :

ক. মহামান্য প্রেসিডেন্ট রাজনৈতিক দলসমূহের সঙ্গে আলোচনা করে ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সহায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ করবেন। তবে শর্ত থাকে যে, প্রেসিডেন্ট সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য এবং কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা এর অঙ্গ-সংগঠনের সদস্য কিংবা দল/অঙ্গ-সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না এমন একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ করবেন।

 

খ. প্রেসিডেন্ট প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শক্রমে ঐক্যৈমতের ভিত্তিতে ১০ জন উপদেষ্টা নিয়োগ করবেন। তবে শর্ত থাকে যে, প্রেসিডেন্ট সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য এবং কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা এর অঙ্গ-সংগঠনের সদস্য কিংবা দল/অঙ্গ-সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না এমন ব্যক্তিকে উপদেষ্টা নিয়োগ করবেন।

 

গ. প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে এবং অপর ১০ জন উপদেষ্টা সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠিত হবে।

 

ঘ. এভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টা সংবিধান প্রদত্ত প্রধানমন্ত্রীর পদমর্যাদা এবং পারিশ্রমিক ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন। উপদেষ্টাগণ মন্ত্রীর পদমর্যাদা এবং সংবিধান প্রদত্ত মন্ত্রীর পদমর্যাদা এবং পারিশ্রমিক ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন।

 

ঙ. প্রেসিডেন্ট উদ্দেশে নিজ হাতে লিখিত ও নিজের স্বাক্ষরযুক্ত পত্রের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বা যেকোনো উপদেষ্টা পদত্যাগ করতে পারবেন।

 

চ. নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার সংবিধানের ১২৩ (৩) (খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জাতীয় সংস ভেঙে দেওয়ার অনধিক ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঐক্যফ্রন্ট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ