Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যুদ্ধাপরাধীরা আবার ক্ষমতায় আসুক জনগণ চায় না

গণভবনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সঙ্গে সংলাপে শেখ হাসিনা : আ.লীগকে ক্ষমতায় আনতে ১৬টি ইসলামিক দল সহযোগিতা করবে : ওবায়দুল কাদের

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৮ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীরা আবার ক্ষমতায় আসুক- এটা বাংলাদেশের জনগণ চায় না। তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধাপরাধীদের সাজা দিয়েছি এবং সাজা কার্যকর করেছি। তারা আবার ক্ষমতায় আসুক, সেটা বাংলাদেশের জনগণ চায় না এবং আমরাও চাই না। যারা স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করে, তারাও চাইবেন না যে যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমতায় আসুক। এখন সামনে নির্বাচন। আমরা চাই, দেশের যে উন্নয়ন আমরা করেছি, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখে সেই উন্নয়নটাও যেন অব্যাহত থাকুক।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গণভবনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর আগে তিনি সংলাপে অংশ নিতে স্বাগত জানান বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতাদের।
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা এবং সেই অবস্থা থেকে বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরিয়ে আনাটাই ছিল আমাদের লক্ষ্য। বড় কথা ছিল, দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি করা।
তিনি বলেন, একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে ঠিক একই কায়দায় ২০০১ সালে নির্বাচনের পর অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর। যে ক্ষমতায় আসে, সেই বসে যেতে চায়। খালেদা জিয়া ১২টা মামলা দিয়েছিল সরকারে এসে। আবার দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসেও আরও ৫/৬ টি মামলা দেয় আমার বিরুদ্ধে। এক/এগারো সরকার আমাকে ইলেকশন না করার প্রস্তাব দিয়েছিল। বিনিময়ে একটি মর্যাদা দেওয়ার প্রস্তাব দেয় তারা। কিন্তু আমি একটি কথা জোর দিয়ে বলেছি, নির্বাচন হবে। জনগণ যাকে চাইবে, সেই ক্ষমতায় আসবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে আমরা যেখানে বাংলাদেশ রেখে এসেছিলাম, সেখান থেকে বাংলাদেশ আবার পিছিয়ে যায়। ২০০৮ সালে যখন সরকার গঠন করি, তখন বিশ্বমন্দা চলছিল। এর মধ্য দিয়ে আমরা এগিয়ে যাই। ২০১৩ সাল থেকেই নির্বাচন ঠেকানোর নামে অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন নাশকতা শুরু হয়। কিন্তু ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আপনারা যদি বাংলাদেশের উন্নয়নের চিত্রটা দেখেন, তাহলে নিশ্চয়ই এটা স্বীকার করতে বাধ্য হবেন যে আমরা উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরিয়ে আনা এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার মতো কঠিন কাজটা এই সময়ের মধ্যে আমরা করতে পেরেছি। কারণ জনগণের সমর্থন ছিল। যে কারণেই যুদ্ধাপরাধের বিচার করার পাশাপাশি রায়ও কার্যকর করতে সক্ষম হয়েছে সরকার।
এর আগে, সংলাপে অংশ নিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ১৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল গণভবনে পৌঁছায়। সংলাপে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংলাপে অংশ নেওয়া আট দলের সমন্বয়ে গঠিত বাম গণতান্ত্রিক জোটের ১৬ নেতা হলেন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ও পলিটব্যুরো সদস্য আকবর খান, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটির সদস্য শুভ্রাংশু চক্রবর্তী ও আলমগীর হোসেন দুলাল।
এছাড়া গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি ও রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য ফিরোজ আহমেদ, বাংলাদেশ ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন নান্নু ও সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার।
গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মমিনুর রহমান বিশাল, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রণজিৎ কুমার।
আ.লীগকে ক্ষমতায় আনতে ১৬টি ইসলামিক দল সহযোগিতা করবে : ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মন্তব্য করেছেন, আগামী দিনেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও ক্ষমতায় ফিরে আসবেন এবং এ ব্যাপারে ১৬টি ইসলামিক দলের নেতারা সার্বিক সহযোগিতায় পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন। গতকাল দুপুরে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ১৬টি ইসলামিক দলের সংলাপ শেষে তিনি এ কথা বলেন। প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী বৈঠক হয়। প্রত্যেক দলের নেতারা প্রত্যকে নিজ নিজ কথা এবং কিছু দাবি উপস্থাপন করেছে। সংলাপে ইসলামী ১২টি দলের ৫২ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।
সংলাপের বিষয় তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, একটা বিষয়ে সকলে একমত হয়েছে, সেটা হচ্ছে, তারা মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ স্বাধীনতার আদর্শের ব্যাপারে প্রত্যেকে অভিন্ন অভিমত উচ্চারণ করেছেন এবং প্রত্যেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১০ বছর ধরে দেশ যেভাবে পরিচালিত করেছেন এতে প্রত্যেকেই তার ভূয়সী প্রশংসা করছেন। আগামী দিনেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও ক্ষমতায় ফিরে আসবে -এ ব্যাপারে তারা তাদের সার্বিক সহযোগিতা থাকবে বলে ইসলামী দলগুলো একথা অকপটে বলে গেছেন। বৈঠকে দ্বিমত বলতে কিছু ছিল না বলেও উল্লেখ করেন কাদের।
দলের মনোনয়ন ফরম বিক্রির বিষয়ে কাদের বলেন, আগামী ৯ নভেম্বর থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ফরম বিতরণ ও জমা নেওয়ার কাজ শুরু হবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমাগ্রহণ চলবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ