Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুর্নীতি করে নিজের ভাগ্য গড়তে আসিনি : শেখ হাসিনা

প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০৩০, ১২:০০ এএম | আপডেট : ৩:২১ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০১৬

গোপালগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুতে তার সরকারকে জড়িয়ে দুর্নাম করতে চেয়েছিল উল্লেখ করে বলেছেন, ‘আমি জাতির পিতার কন্যা। দুর্নীতি করে নিজের ভাগ্য গড়তে আসিনি। দেশের মানুষের ভাগ্য ফেরানোর জন্য আমরা কাজ করি। তাই পদ্মা সেতু ছিলো আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। নিজস্ব অর্থায়নে আমরা পদ্মা সেতুর কাজ করছি। পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হলে দক্ষিণ অঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন হবে।’
তিনি আজ শনিবার গোপালগঞ্জ জেলা শহরের ঘোড়াপাড়ায় দেশের সর্ববৃহৎ ও অত্যাধুনিক চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার একটি মাত্র চাওয়া হলো বাংলাদেশের মানুষকে উন্নত ও নিরাপদ জীবন দেওয়া। তাদের শিক্ষা, খাদ্য ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করা। আমরা সে লক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। তাই সারা দেশের সুষম উন্নয়নে বিশ্বাস করি। জামায়াত-বিএনপি’র মতো বিশেষ কোন এলাকার উন্নয়নে বিশ্বাস করি না। তাই আমরা শুধু গোপালগঞ্জ নয়, সারা দেশে সমভাবে উন্নয়নমূলক কাজ করছি।’
বিএনপি-জামায়াত শুধু ধ্বংস করতে পারে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা প্রকাশ্যে মানুষ হত্যা, মসজিদ, মন্দির, গির্জা ধ্বংস করে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিলো। ব্যর্থ হয়ে এখন তারা আবার গুপ্ত হত্যা শুরু করেছে। আমরা ওদের সহিংসতায় বিশ্বাস করি না। আমরা ত্যাগের মনোভাব নিয়ে কাজ করি। যারা জনগণের অর্থ আত্মসাৎ করে তারা দেশের জন্য কিছু করতে পারে না।’
নার্সদের দ্বিতীয় শ্রেণীর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৫ হাজার নতুর নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নার্সদের জন্য আরো ১০ হাজার নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এছাড়া এইচএসসি পর্যন্ত ১ কোটি ৭০ লক্ষ শিক্ষার্থীকে মেধা বৃত্তির আওতায় আনা হয়েছে।’
দেশের স্বাস্থ্য-সেবার উন্নয়ণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিণিকের মাধ্যমে মানুষের দোর গোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী, চট্রোগ্রাম ও সিলেটে আরো ৩টি নতুন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে।’
পর্যায়ক্রমে সকল বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে বলেও তিনি ঘোষণা দেন।
এছাড়া প্রতিটি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।
তার সরকারের আমলে গ্রাম উন্নয়নের বিভিন্ন কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা গ্রাম ভিত্তিক উন্নয়নে বিশ্বাস করি। যাদের জায়গা নেই তাদের আশ্রয় প্রকল্পের মাধ্যমের আমরা পুনর্বাসন করছি। এ ছাড়া একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামের দরিদ্র মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করছি।’
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি, প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা: সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এসময় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ মো. আব্দুল্লাহ।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন।
এর আগে সকাল সোয়া ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার যোগে টুঙ্গীপাড়া এসে পৌঁছান। পরে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে তিনি ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।
বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী সড়ক পথে টুঙ্গিপাড়া থেকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ঘোনাপাড়ায় পৌঁছান। সেখানে ১৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। একই স্থানে বসে প্রধানমন্ত্রী মধুমতি নদীর উপর প্রায় ৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৫শ ৮৮ মিটার দীর্ঘ চাপাইল ব্রিজ, গোপালগঞ্জ জেলা শিশু একাডেমি কমপ্লেক্স ও জাতীয় মহিলা সংস্থার ভবন উদ্বোধন করেন। এসময় তিনি গোপালগঞ্জে শেখ লুৎফর রহমান ডেন্টাল কলেজ, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ১০ কিলো-ওয়াট এফ-এম রেডিও স্টেশন, টুঙ্গিপাড়া ও মুকসুদপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ও কাশিয়ানী থেকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা পর্যন্ত প্রায় ৩৩ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে প্রধানমন্ত্রী সড়ক পথে তার নির্বাচনী এলাকা কোটালীপাড়ায় রওনা হন।
সেখানে পৌনে ৩টায় কোটালীপাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স এর উদ্বোধন, ওই উপজেলার ১০০টি প্রাথমিক ও ১৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ ও মাল্টিমিডিয়া বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে কোটালীপাড়ার শেখ লুৎফর রহমান ডিগ্রি কলেজ মাঠে এক সুধি সমাবেশে যোগদান করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ায় এখন উৎসবের আমেজ বইছে। সড়কে একাধিক তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ