Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

একনেকে বিরল রেকর্ড ৩৯ প্রকল্প অনুমোদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:২৯ এএম

৯ অক্টোবর দেশের ইতিহাসে একদিনে সর্বোচ্চ ২০ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। এ রেকর্ড ভেঙে ২৩ অক্টোবরই অনুমোদন দেয়া হয় ২১ টি প্রকল্প। রেকর্ড ভেঙে গত মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ২৪ প্রকল্প অনুমোদন করে। এরই ধারবাহিকতায় গতকাল রোববার এক দিনে ৩৯ প্রকল্প অনুমোদনের অভাবনীয় রেকর্ড গড়ে পরিকল্পনা কমিশন। রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক বৈঠকের পর পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরেন।

এ সময় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান উপস্থিত ছিলেন। ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান, অনুমোদন পাওয়া ৩৯ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৮৬ হাজার ৬৮৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এতে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে ৬৬ হাজার ৪৬৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হবে ৩১৩ কোটি ২১ লাখ টাকা। অবশিষ্ট ১৯ হাজার ৯০৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে বিদেশি উৎস থেকে সংগ্রহ করা হবে।
ব্রিফিংয়ে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে ঘন ঘন একনেক বৈঠক করে বাড়তি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হচ্ছে। আগামী কয়েক মাস একনেক সভা না হলে নতুন প্রকল্প নেয়া যাবে না। বিষয়টি বিবেচনায় কাজ এগিয়ে রাখার জন্য প্রকল্প অনুমোদন দিয়ে রাখা হয়েছে। নির্বাচনের তফসিলের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হলে সরকারের চলতি মেয়াদেই একনেকের আরও সভা হবে বলে তিনি জানান।
সভায় ১৪ হাজার ২৫০ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয় ধরে জয়দেবপুর থেকে ঈশ^রদী পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় বিদ্যমান রেললাইনের পাশে ডুয়েলগেজ লাইন নির্মাণ হবে। পৃথক প্রকল্পের আওতায় প্রক্রিয়াধীন যমুনা রেল সেতু ব্যবহার করে এ লাইনে ট্রেন চলাচল করবে। চীনের ঋণে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
১০ হাজার ৩২৯ কোটি টাকা ব্যয় ধরে পূর্বাচল লিংক রোডের উভয় পাশের্^ ১০০ ফুট প্রশস্ত খাল খনন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ৩ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে অনুমোদন করা হয়েছে পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প। কক্সবাজার বিমান বন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৭০৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ঢাকা খুলনা মহাসড়কের যাত্রাবাড়ি ইন্টারসেকশন থেকে মাওয়া পর্যন্ত এবং পাচ্চর-ভাংগা অংশ ধীর গতির যানবাহনের জন্য পৃথকলেনসহ ৪ লেনে উন্নয়ন প্রকল্পের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে নতুন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১১২ কোটি টাকা।
৯৭৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয় ধরে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় পুলিশের জন্য ৯টি আবাসিক টাওয়ার নির্মান প্রকল্প অনুমোদন করেছে একনেক। ঢাকার গুলশানে পুলিশের ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের আবাসন প্রকল্পে ব্যয় হবে ১১৮ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। পুলিশের সন্ত্রাস দমন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ প্রতিরোধ কেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হবে ৩৫৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা। ৬৪৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয় ধরে পুলিশের যানবাহন ও যন্ত্রপাতি ক্রয় প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ফায়ার সর্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ডুবুরী ইউনিট সম্প্রসারণ প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৬৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা। র‌্যাবের কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে অনুমোদন দেয়া হয়েছে পৃথক প্রকল্প।
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের, টাঙ্গাইল পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন, ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা লেক উন্নয়ন, কুমিল্লা জেলার ৫ পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন, বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা গ্রামীণ অবকাঠামো, দুর্যোাগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, গ্রাম সড়ক পুনর্বাসন, গোপালগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, ফরিদপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো, বৃহত্তর ঢাকা গ্রামীন অবকাঠামো, তিন পার্বত্য জেলায় দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক উন্নয়ন ও পশ্চাদপদ কুড়িগ্রাম ও জামালপুর জেলার দারিদ্র্য হ্রাসকরণ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক।
এর বাইরে টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ জেলা মহাসড়ক (জেড-১০৯৯) হাড়িয়াখালী হতে শাহপরীর দ্বীপ অংশ পুনঃনির্মাণ, প্রশস্তকরণ এবং শক্তিশালীকরণ, গ্রামীণ রাস্তায় ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ, গ্রামীণ মাটির রাস্তা টেকসই করণের লক্ষ্যে হেরিং বোড বন্ড (এইচবি), বঙ্গমাতা ন্যাশনাল সেলুলার অ্যান্ড মলিকুলার রিসার্স সেন্টার স্থাপন, মুগদা মেডিক্যাল কলেজের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ এবং আনুষাঙ্গিক সুবিধাদি সম্প্রসারণ, সুনামগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও একাডেমিক কার্যক্রম সম্প্রসারণ, ন্যাশনাল পাওয়ার ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (১ম সংশোধন), বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন লাইন নির্মান, ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লি. এর উৎপাদন পদ্ধতি ওয়েট প্রসেস থেকে ড্রাই প্রসেস এ রুপান্তরকরণ (১ম সংশোধিত), বিএআর অব কেরু এন্ড কোং (বিডি) লিমিটেড (১ম সংশোধিত) প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। #



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রকল্প


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ