Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সংসদ ভেঙে নির্বাচনের ব্যবস্থা সংবিধানে আছে

ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে ড.শাহদীন মালিক ও আসিফ নজরুলসহ আইন বিশেষজ্ঞরা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

সংবিধান বিশেষজ্ঞ বিশিষ্ট আইনজীবি ড. শাহদীন মালিক বলেছেন, সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন করার ব্যবস্থা সংবিধানে আছে। সংবিধানের ১২৩(৩) অনুচ্ছেদের খ উপদফায় সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্বাচন করার বিষয়টি স্পষ্ট করে লেখা আছে। এ ছাড়া সংবিধানের ৫৬(৪) অনুচ্ছেদে সংসদ ভেঙ্গে যাওয়া এবং পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্যবর্তী সময়ে মন্ত্রীসভা পুন:র্গঠনের বিধান রয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় মতিঝিলে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এর চেম্বারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে যোগদানের আগে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে কার দাওয়াতে এসেছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না। আমি কোন দলের সদস্য না। আইনের ব্যাপারে বর্তমান সরকার অতীতের সরকার, মন্ত্রীরা বিভিন্ন সময় আইনের পরামর্শ নিয়ে থাকেন। এখানেও আমাকে আইনের পরামর্শের জন্য ডাকা হয়েছে। আইনজীবি হিসেবে আমার দায়িত্ব আইনী সমাধান বলে দেওয়া, তারপর তারা কিভাবে বাস্তবায়ন করবেন সেটা রাজনীতিবিদদের বিষয়।
সংসদ তো এখন মুলতবী বা বিলুপ্ত করে রাখা হয়েছে এ বিষয়টা কিভাবে দেখছেন। এর জবাবে তিনি বলেন, মুলতবী বা বিলুপ্ত সংবিধানে লেখা নেই। সংবিধানে আছে সংসদ থাকবে অথবা সংসদ ভেঙে যাবে।
আগামী সংলাপে আপনি থাকবেন কি না জবাবে বলেন, এ ব্যাপারে কেউ আমাকে বলেনি। সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করার কোনো প্রস্তাবনা দেবেন কি না? শাহদীন মালিক বলেন, গত সংসদ নির্বাচনতো বহাল রেখেই হয়েছিল। সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করলে অসুবিধা অনেক বেশি হয়। তাতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডতো হয় না। এটাতো কাউকে বলে বোঝাতে হবে না। একজন সংসদে থাকবে আর একজন সংসদের বাইরে তাহলেতো সমান সুযোগ পেয়ে নির্বাচন হবে না। এজন্য বিশ্বের সব জায়গায় সাংবিধানিক প্রথা হল সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন করা। দু একটা ব্যতিক্রম আছে সেটাও বেআইনি না। তবে সংসদ ভেঙে দেওয়ার কথা সংবিধানের অন্তত দশ জায়গায় লেখা আছে। কাজেই এটা অস্বাভাবিক কিছু না। আমাদের দেশের ২/১ টা বাদ দিয়ে বেশিরভাগ নির্বাচনই সংসদ ভেঙে দিয়ে হয়েছে। দুনিয়ার সব জায়গায় সাংবিধানিক প্রথা হল সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন করা।
ড. শাহদীন মালিক বলেন, সংবিধান সম্মত উপায়ে কিভাবে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করা যায় সে বিষয়ে বিভিন্ন সমাধান বের করার চেষ্টা করবো। এছাড়া আরো কি কি দাবির প্রেক্ষিতে উভয় পক্ষ একমত হয়ে নাগরিকদের ভোটের অধিকার এবং ভোটের ফলাফলের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সম্ভাব্য সমাধানগুলি বের করার চেষ্টা করা হবে ।
আজকের বৈঠকের সিদ্ধান্ত সংলাপে উপস্থাপন করা হবে কি না জবাবে বলেন, আমি আইনজীবী হিসেবে এসেছি, সংবিধানে কি ব্যবস্থা আছে সে ব্যাপারে আলোকপাত করে সিদ্ধান্ত দেব। তারপর রাজনীতিবিদরা কী করবে সেটা তাদের ব্যাপার।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, স্বল্প পরিসরে সংলাপে বসতে সরকার সম্মত। বর্তমানে যে সব রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপ চলছে তা শেষ হলে পুনরায় বসার তারিখ জানানো হবে এমনটাই সূত্র জানিয়েছে। গতকাল ড. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত পুনরায় সংলাপ চেয়ে লেখা চিঠি পাওয়ার পর সরকারের পক্ষ থেকে এমন আভাস দেয়া হয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক ইংগিত পেয়ে গতকাল আইন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বৈঠকে বসেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।
স্বল্প পরিসরে সংলাপে সংবিধানের আলোকে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা কি হতে পারে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় আইন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বৈঠকে বসেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের চেম্বারে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আইন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ছিলেন ড. শাহদীন মালিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ড. বোরহান উদ্দিন, ড. আসিফ নজরুল, সাংবাদিক সালেহ উদ্দিন প্রমুখ। ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের মধ্যে ছিলেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মাহমুদুর রহমান মান্না, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ, মোকাব্বির খান, ডা. জাহেদ উর রহমান প্রমুখ। #



 

Show all comments
  • মানিক ৫ নভেম্বর, ২০১৮, ৩:৪৮ এএম says : 0
    বিষয়টি ক্লিয়ার করায় আইন বিশেষজ্ঞদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি
    Total Reply(0) Reply
  • শুভ্র ৫ নভেম্বর, ২০১৮, ৩:৫০ এএম says : 0
    আশা করি এবার সরকার সংবিধান মেনেই সুষ্ঠ নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঐক্যফ্রন্ট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ