Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আলোচনার উল্টো পিঠে আন্দোলন বোধগম্য নয়

জেলহত্যা দিবসের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আলোচনা আর আন্দোলন একসঙ্গে কীভাবে সম্ভব। যখন এই সংলাপ-আলোচনা চলছে, আবার তখনই দেখলাম আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়। একদিকে আলোচনা করবে, আবার অন্যদিকে আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া- তাহলে এটা কী ধরনের সংলাপ; আমাদের কাছে এটা বোধগম্য নয়। জানি না জাতি এটা কীভাবে নেবে। তবে আমরা চাই গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নতি হয়। তারপর জনগণ যদি ভোট না দেয় তাহলে কিছু করার নেই। ভোটের মালিক জনগণ। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করিনি, তাদের আপন জনেরাই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
গতকাল রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত জেলহত্যা দিবসের আলোচনায় এসব কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই সকলের অংশগ্রহণে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সংলাপে বসেছি। দেশের মানুষ শান্তিতে থাকুক, দেশের মানুষ তার পছন্দ মতো ভোট দিতে পারুক, তারা তাদের পছন্দের সরকার বেছে নিক। সে কারণেই আমি ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আমি কিন্তু একটা কথাও বলিনি প্রথমে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে তাদের কথা শুনেছি। শেষে গিয়ে আমি কথা বলেছি। সেখানেও বলেছি কোনটা কোনটা আমরা করতে পারি, কোনটা প্রেসিডেন্টের, কোনটা নির্বাচন কমিশনের, কোনটা কীভাবে করা যায় এসব নিয়ে বলেছি।
সংলাপের প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সংলাপের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছিল। চিঠি পাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে স্বাগত জানালাম। যারাই দেখা করতে চাচ্ছেন, ইতোমধ্যেই ঐক্যফ্রন্ট, যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে কথা রয়েছে। তারা সংলাপ করতে চেয়েছে, আমরা করেছি। তারা যেসব দাবি দাওয়া দিয়েছে, আমাদের পক্ষে যা মানা সম্ভব তা মানবো। তারা রাজবন্দিদের মুক্তি চেয়েছেন। আমরা বলেছি তালিকা দেন। তাদের বিরুদ্ধে যদি খুনের মামলা না থাকে, কোনও ক্রিমিনাল অফেন্স তারা করে না থাকে, তাহলে অবশ্যই.. আর আমরা তো কাউকে রাজবন্দি করি নাই। আমরা তো রাজনৈতিক কারণে কারও বিরুদ্ধে মামলা করিনি। খালেদা জিয়া, তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছে তাদেরই আপনজন। তাদেরই বানানো প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিন, সেনাপ্রধান মঈনুদ্দিন, সবাইতে বিএনপির নিয়োগ দেওয়া লোক। ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন তাদের তো একজন উপদেষ্টা মনে হয়। সেই মামলাটা তৈরি করে দিয়েছে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে। তাদের দেওয়া মামলা দশটা বছর ধরে চলেছে। সরকারের পক্ষ থেকে কিছু থাকলে দশ বছর ধরে মামলা চলার কথা না। বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করছে।
দেশে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত পাঁচ বছরে প্রায় ছয় হাজারের মতো নির্বাচন হয়েছে। ইউপি নির্বাচন, পৌর নির্বাচন, উপ নির্বাচন হয়েছে; কেউ কোনও কথা বলতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নতি হবে। মানুষ ভালো থাকুক, মানুষের ভালো হোক, দেশ ভালো থাকুক, বাংলাদেমের একেবারে তৃণমূলের মানুষটার জীবনও যেনো উন্নত হয়, আওয়ামী লীগ সেটাই চায়। এতো কাজ করেছি, তারপরও যদি জনগণ ভোট না দেয় তাহলে তো কিছু করার নাই। এটা জনগণের ওপর। ভোটের মালিক জনগণ।
নির্বাচন কমিশন নিয়ে প্রশ্ন তোলার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। গঠন করার আগে সার্চ কমিটি হয়েছে। সার্চ কমিটিতে প্রত্যেকটা দলের পক্ষ থেকে নাম গেছে। আমরা যেমন নাম দিয়েছি, বিএনপিও দিয়েছে। সবার মতামতের ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছে। এই কমিশন নিয়ে তো প্রশ্ন থাকতে পারে না।
জেলহত্যার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জেলহত্যার বিচার যেদিন করতে পারলাম, সেদিন মনে হলো বাংলাদেশ যেনো অভিশাপমুক্ত হলো। যেদিন এই মামলার রায় হলো, সেদিন বিএনপি হরতাল ডেকেছিল। ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর এই ঘটনা ঘটে। কিছু মানুষ দেশের ভালো চায় না জানিয়ে এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখনও কিছু মানুষ আছে, বাংলাদেশের মানুষকে খুশি দেখছে তাদের ভালো লাগে না।
সভায় আরও বক্তব্য দেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সিমিন হোসেন রিমি ও এ কে এম রহমতউল্লাহ। অনুষ্ঠান উপস্থাপন করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ