পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পরিবহন ধর্মঘটের ফলে গতকাল টানা দ্বিতীয় দিনের মতো অচল ছিল দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম। বন্ধ ছিল চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি-রফতানি পণ্য পরিবহন। বন্দর জেটিতে পণ্যের স্তুপ পড়েছে। জমছে কন্টেইনারের পাহাড়। বন্দর এলাকার বেসরকারি কন্টেইনার টার্মিনালগুলোতেও অচলাবস্থা বিরাজ করছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়েছে। দেশের অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ-আসাদগঞ্জের ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির। শ্রমিকের উপস্থিতি কম হওয়ায় বিঘ্নিত হচ্ছে কল-কারখানার উৎপাদন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে অসুস্থ রোগী ও দূরপাল্লার যাত্রীরা সীমাহীন দুর্ভোগের মুখোমুখি হয়েছেন।
গতকাল নগরীর বিভিন্ন সড়কে রিক্সা, অটোরিকশা ও কিছু টেম্পো চলাচল করলেও বাস-মিনিবাস বন্ধ ছিল। এতে করে কর্মজীবী মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়েও মিলেনি গণপরিবহন। দিনভর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে নাকাল হতে হয় নগরবাসীকে। গণপরিবহন সঙ্কটকে পুঁজি করে রিক্সা, অটোরিকশা গলাকাটা হারে ভাড়া আদায় করছে। নগরীর ইপিজেড, বারিক বিল্ডিং, আগ্রাবাদ, লালখান বাজার ইস্পাহানী মোড়, জিইসি মোড়, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, অক্সিজেন, ষোলশহর ২নং গেইট, এ কে খান গেইট, অলঙ্কার মোড়, বড়পোল, নিউমার্কেট, কদমতলীসহ প্রায় প্রতিটি মোড়ে অসংখ্য যাত্রীর ভিড় দেখা গেছে।
স্কুলগামী শিক্ষার্থী এবং কর্মজীবী নারীদের দুর্ভোগ ছিল অবর্ণনীয়। গণপরিবহন না পেয়ে অনেকে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছেছেন। লোকজনকে রিক্সা ভ্যান, মিনি ট্রাক এমনকি ট্রাক্টরে চড়েও গন্তব্যে পৌঁছতে দেখা যায়। মহানগরী থেকে জেলার ১৫টি উপজেলার বিভিন্ন রুটেও গণপরিবহনের সঙ্কট ছিল। লোকজনকে দুর্ভোগ পোহাতে হয় পথে পথে। গতকালও চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোন বাস ছাড়েনি। টার্মিনাল ও কাউন্টারগুলোতে অসহায় যাত্রীদের ভিড় করতে দেখা যায়। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে ট্রেনে যাত্রীর চাপ ছিল ভয়াবহ। প্রতিটি ট্রেনে অতিরিক্ত টিকিট দেয়ার পরও যাত্রী চাপ সামাল দেয়া যায়নি। ট্রেনের ছাদে দরজা, জানালায় ঝুলে যাত্রীদের ভ্রমণ করতে দেখা যায়।
পরিবহন ধর্মঘটে পণ্য পরিবহন স্থবির হয়ে পড়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রায় ফাঁকা। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে গত দুইদিন আমদানি-রফতানি কোন পণ্য পরিবহন করা হয়নি। এর ফলে বন্দরে পণ্য ও কন্টেইনার জটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে রফতানিমুখী গার্মেন্টসসহ অন্যান্য রফতানি পণ্য যথাসময়ে বন্দরে না পৌঁছায় এসব পণ্যের জাহাজিকরণ অনিশ্চিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন রফতানিকারকরা। পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকায় দেশে ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম ইপিজেড, কর্ণফুলী ইপিজেডসহ শিল্পাঞ্চলগুলোতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। পরিবহন বন্ধ থাকায় কাঁচামাল আমদানি এবং রফতানি পণ্য আনা-নেওয়া বন্ধ রয়েছে। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে প্রতিদিন শত শত কোটি টাকার পণ্য বেচাকেনা হয়। গত দুইদিন সেখানে সুনশান নিরবতা বিরাজ করছে। ব্যবসা-বাণিজ্য একেবারেই স্থবির।
এদিকে ধর্মঘটের নামে জনগণকে জিম্মি করার ঘটনায় সাধারণ মানুষকে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। নগরীর টাইগার পাস মোড়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আবুল হাসেম এক ঘণ্টা দাঁড়িয়েও কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য গাড়ি না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, সরকারের একজন মন্ত্রীর ইশারায় দেশবাসীকে জিম্মি করা হয়েছে। অথচ সরকার নির্বিকার। তার সাথে সুর মেলান মোঃ হোসেন নামে আরও একজন। তিনি বলেন, সবকিছুর শেষ আছে। আমরাও শেষ দেখার অপেক্ষায় আছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।