পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশংকা প্রকাশ করে বলেছেন, আগামীতে আওয়ামী লীগ পুনর্র্নিবাচিত না হলে দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হবে। দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে, আর নির্বাচনও ঘনিয়ে এসেছে। আমি জানি না অন্যকোন দল ক্ষমতায় আসলে কি হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা পার্লামেন্টারি ফর্ম অব ডেমোক্রাসিতে আছি। আগামীতে বাংলাদেশের মানুষ যদি ভোট দেয় তাহলে আমরা আমাদের লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে সক্ষম হব। আর যদি না দেয় তাহলেও আমাদের সবসময় একটা প্রচেষ্টা থাকবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। তারপরে কি হবে আমি বলতে পারছি না।
গতকাল ঢাকা চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-এর ৬০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ‘ডেস্টিনেশন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সরকার প্রধান বলেন, ’৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আমরা ক্ষমতায় ছিলাম। তখনও বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছিলাম, স্বাক্ষরতার হার বাড়িয়েছিলাম, দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য যখন আবার ৭/৮ বছর পর সরকার গঠন করলাম তখন দেখলাম সবকিছু পিছিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ, ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, গ্রেনেড হামলা, তখন দু’টো সরকার ছিল একটা হলো হাওয়া ভবন আর একটা প্রধানমন্ত্রীর দফতর। এসব জায়গায় খুশী না করলে ব্যবসা পাওয়া যায় না। সব জায়গাতেই এরকম একটা অবস্থা ছিল।
সবকিছুকে একটা শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আজকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি এবং আন্তর্জাতিক অনেক সংস্থা বাংলাদেশের প্রশংসা করে যাচ্ছেন, আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। শেখ হাসিনা বলেন, প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপারস বলছে- বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ২৮তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০৫০ সালের মধ্যে নেদারল্যান্ডস, অষ্ট্রেলিয়া, স্পেন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াকে অতিক্রম করে বিশ্বের ২৩ তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে। প্রধানমন্ত্রী এ সময় ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি চাই আপনারা এটা মাথায় রেখেই ব্যবসা-বাণিজ্য করবেন।
বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু কৃষির ওপর নির্ভর না করে দেশে শিল্পায়ন যাতে হয়, সেদিকে আমরা দৃষ্টি দিয়েছি। খাদ্যের যোগানে কৃষির প্রয়োজন রয়েছে। ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ারও কাজ করতে হবে। এ লক্ষ্যে আমরা বেসরকারি খাতকে গুরুত্ব দিয়েছি। কারণ, বেসরকারি খাতই পারে বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে, উন্নত করতে।
শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকার অনেক জায়গায় ডিজিটাল টেলিফোন ছিল না। আমরা এসে সব এলাকায় ডিজিটাল টেলিফোনের ব্যবস্থা করি। হেলিকপ্টার, টেলিভিশন, রেডিও এগুলো এখন বেসরকারি খাতে। একটাই উদ্দেশ্য যাতে বেসরকারি খাতে মানুষের কর্মসংস্থান হয়।
শিল্পকে বহুমুখী করায় তার সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে দেশব্যাপী একশ’ অর্থনৈতিক অঞ্চল করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। তিনি বলেন, তবে দেখতে হবে কোন অঞ্চলে কোন জিনিসের উৎপাদন বেশি হয় এবং দেশে বিদেশে তার কেমন চাহিদা রয়েছে। সেটাকে বিবেচনায় নিয়েই আমাদের শিল্পায়ন করতে হবে, উৎপাদন করতে হবে এবং উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে হবে। তাহলেই আমাদের শিল্পের বিকাশ হবে।
রফতানি বহুমুখীকরণের তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বাঙালিদের অভ্যাস কেউ কোন একটা জায়গায় সফলতা পেলেই, সবাই তাকে অনুসরণ করে সেই কাজে নেমে পড়ে। একটা সময় দেখা যায়, ওই কাজের আর মূল্য থাকছে না। সেটা না করে বহুমুখীকরণে মনোযোগ দিতে হবে। আমাদের রফতানি পণ্য বহুমুখীকরণ করতে হবে। বিশ্ব চাহিদার চিন্তা মাথায় রেখে নতুনভাবে পরিকল্পনা করে উৎপাদন করতে হবে।
অর্থনৈতিকভাবে দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য যা যা করার দরকার তার সরকার তা করে যাচ্ছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, বিনিয়োগের জন্য বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়েছি। ব্যবসায়ীদের নানা সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নয়ন করার চেষ্টা চলছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে।
দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যকে সম্প্রসারিত হবে। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সহযোগিতা দরকার। শেখ হাসিনা বলেন, আমি ব্যবসা বুঝি না। আমার কাজ ব্যবসার সুযোগ করে দেয়া, সম্ভাবনাগুলোকে জাগিয়ে দেয়া।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এবং এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন অনুষ্ঠানে বিশেষ অথিথির বক্তৃতা করেন। ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাশেম খান স্বাগত বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে ডিসিসিআই-এর পক্ষ থেকে ‘ভিশনারী লিডারশিপ’ এওয়ার্ডে ভূষিত করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।