Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

জনগণের জন্য জীবন উৎসর্গ

গণভবনের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৫ এএম

‘আমার আর চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই, হারাবারও কিছু নেই; মানুষের সেবা করাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা’ এই অভিমত ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছি। কারণ আমার জীবনে আর চাওয়া-পাওয়ারও কিছু নেই, হারাবারও কিছু নেই। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গণভবনে লায়ন্স ক্লাবস্ ইন্টারন্যাশনালের এক সংবর্ধনা সভায় বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে লায়ন্স ক্লাবস্ ইন্টারন্যাশনালের নবনির্বাচিত ‘আন্তর্জাতিক পরিচালক’ কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের সেবা করাটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। মানুষের জন্য সেবা করা, মানুষের পাশে দাঁড়ানো, এর চেয়ে বড় কাজ আর কী হতে পারে। তাই আমি আমার জীবনটাকে উৎসর্গ করেছি বাংলার জনগণের জন্য। এখানে আমরা নিজের কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। আর বাবা-মা, ভাই- সবই হারিয়েছি, হারাবারও কিছু নেই।
শেখ হাসিনা বলেন, শুধু একটা জিনিসই চাই, যে দেশকে আমার বাবা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন, যে স্বপ্নটা তাঁর ছিল, সে স্বপ্নটা যেন পূরণ হয়। বাংলাদেশ যেন হয় ক্ষুধামুক্ত ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশকে সেভাবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আমরা গড়ে তুলতে চাই। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি। আমরা চাই সবাই একসঙ্গে কাজ করে এই বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবো।
১০ বছরে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশ সম্মান পাচ্ছে, স্বীকৃতি পাচ্ছে। আগে আমরা বাঙালিরা বিদেশে গেলে সবাই বলতো- ও বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড়, দুর্ভিক্ষ, ইত্যাদি ইত্যাদি। এখন আর সে কথা বিদেশীদের কেউ বলে না। বিদেশে গেলে নিশ্চয়ই উপলব্ধি করতে পারেন। এখন বলে বাংলাদেশ তো উন্নয়নের রোল মডেল। এই সম্মানটা আমরা অর্জন করতে পেরেছি। এই সম্মানটা আমরা যেন ধরে রাখতে পারি।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাজেট সাতগুণ বাড়িয়েছি। এই বাজেট আগে করতে গেলে বিদেশিদের কাছে হাত পাততে হতো। আল্লাহর রহমতে এখন আর হাত পাততে হয় না। বাজেটের ৯০ ভাগ নিজস্ব অর্থায়নে আমরা করে থাকি। আগে আমাদের উন্নয়ন বাজেট যা হয়তো ২৫-৩০ হাজার কোটি টাকা ছিল। এখন ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। আমরা স্বল্পন্নোত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি। এটাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে। দেশের অগ্রযাত্রা, এই উন্নয়নের ধারাটা অব্যহত রাখতে হবে। দেশের উন্নয়নে নেওয়া পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশকে আমরা সর্বক্ষেত্রে উন্নত করতে চাই, স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে চাই। দেশের মানুষ যেন আরও উন্নত জীবন পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
দেশের অগ্রগতি ধরে রাখতে লায়ন্স ক্লাবস্ ইন্টারন্যাশন্যালের সদস্যদের দায়িত্বের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের লায়ন ও লিও সবার একটা দায়িত্ব রয়েছে। আপনারা যেমন সমাজসেবামূলক কাজ করেন, এই কাজের মধ্যে দিয়ে আমরা আমাদের দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পারি। আমরা একসঙ্গে কাধেঁ কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবো, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। দেশকে আমাদের উন্নত করতেই হবে। লায়ন্স ক্লাবস ইন্টারন্যাশনাল জাতিসংঘের কনসালটেটিভ স্ট্যাটাস প্রাপ্ত, বিশ্বের সর্ববৃহৎ মানবসেবামূলক সংগঠন। সমাজের দুঃস্থ ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কল্যাণে নিবেদিত এই সংগঠন বিগত একশ বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্বের ২০০ টিরও অধিক দেশে মানবসেবায় কাজ করে যাচ্ছে।
‘রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশের বোঝা এবং তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আজকে আমাদের ওপর একটা বোঝা হয়ে গেছে। এরা মিয়ানমারের নাগরিক। প্রায় ১১ লাখ শরণার্থী আজকে আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছে। ১৯৭১ সালে ভারতে আশ্রয় নেওয়া আমাদের শরণার্থীদের কথা যখন স্মরণ করেছি তখন তাদের আশ্রয় না দিয়ে পারিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার ছোট বোন শেখ রেহানা এখানে ছিল; সে আমাকে বললো ১৬ কোটি মানুষকে ভাত খাওয়াও তুমি। আর এই যে নির্যাতিত মানুষগুলো, একাত্তরে আমাদের বাঙালিরা যেভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দ্বারা নির্যাতিত হয়েছিলাম, এরাও ঠিক একই রকম নির্যাতনের শিকার। আজকে তাদের তুমি খাওয়াতে পারবে না? আমি বললাম নিশ্চয়ই পারবো, প্রয়োজনে নিজেদের খাবার ভাগ করে খাবো। রোহিঙ্গা সংকটে কূটনৈতিক সফলতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আজকে তাদের আমরা আশ্রয় দিয়েছি। পাশাপাশি আমাদের কূটনৈতিক সাফল্য এইটুকুই, আমরা প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ঝগড়া করিনি, তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সই করেছি। তারা রাজি হয়েছে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে নিয়ে যাবে, যদিও এখনো নিয়ে যাওয়া শুরু করেনি। তারপরও আমরা আলোচনা করে যাচ্ছি এদের ফিরিয়ে দিতে। আস্তর্জাতিকভাবে আজকে যে সমর্থন বাংলাদেশ পেয়েছে এবং সেই সঙ্গে সঙ্গে (মিয়ানমারকে) চাপ প্রয়োগ করছেন। আমরা আশা করি তাদের (রোহিঙ্গা) ফিরিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু করতে পারবো। #



 

Show all comments
  • Jusna ৭ অক্টোবর, ২০১৮, ১:১৩ এএম says : 3
    Mohan allahr jonno jibon utsorger potigga korle sara jahaner luk onugoto hoe jabe.এখানে আপনি আপনার মন্তব্য করতে পারেন
    Total Reply(0) Reply
  • Amit ৭ অক্টোবর, ২০১৮, ২:১১ এএম says : 2
    আপনার নেতৃত্বেই দেশ এগিয়ে যাবে
    Total Reply(0) Reply
  • Abdul abdul ৭ অক্টোবর, ২০১৮, ১১:১১ এএম says : 0
    Jibon utsorgo korte hobena. Niropekkho nirbacon utsorgo koren
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammad Anisur Rahman ৭ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৯ পিএম says : 0
    এত ত্যাগের দরকার নাই, শুধু একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ