Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতকে চট্টগ্রাম-মংলা বন্দর ব্যবহারের অনুমোদন মন্ত্রিসভায়

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:৪২ এএম

চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্য সে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে পরিবহনের জন্য একটি চুক্তির খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে চুক্তির খসড়াটি অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকের পরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভূখন্ডের মধ্য দিয়ে এই পণ্য পরিবহনের জন্য ভারতের কাছ থেকে গ্যাট নীতিমালা অনুসারে শুল্ক বা কর ব্যতিত মাশুল ও পরিবহন খরচ আদায় করা হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যই স্থলাবদ্ধ (ল্যান্ড লকড)। ভারতের অন্য অংশ থেকে ওই সব রাজ্যে যেতেও হয় অনেক ঘুরপথে। ফলে বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহার করে ওই রাজ্যে পণ্য নিতে বরাবরই আগ্রহী ভারত। এর আগে ২০১১ সালে ট্রান্সশিপমেন্টের আওতায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ত্রিপুরা রাজ্যের পালটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্র‹ নির্মাণের মালামালের চালান বাংলাদেশের উপর দিয়ে গিয়েছিল।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এখন বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চলমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক সুদীর্ঘ করার উদ্দেশ্যে এগ্রিমেন্ট অন দা ইউজ অব চট্রগ্রাম অ্যান্ড মোংলা পোর্ট ফর মুভমেন্ট অব গুডস টু এন্ড ফর্ম ইন্ডিয়া বিটুইন বাংলাদেশ এন্ড ইন্ডিয়া খসড়ায় অনুমোদন দেওয়া হল । তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরের জন্য চট্টগাম ও মোংলা পোর্টে যোগাযোগের জন্য যে কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক তৈরি করা হচ্ছে, তার চুক্তির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখানে প্রভিশন রাখা হয়েছে নেপাল ও ভুটান ইচ্ছা প্রকাশ করলে যুক্ত হতে পারবে। পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশের যান ব্যবহার হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটি ট্রানজিট ঠিক না, কারণ আমাদের পরিবহন ব্যবহার করতে হচ্ছে। আমাদের আইন অনুযায়ী শুল্ক ও ট্যাক্স তাদের দিতে হবে। প্রস্তাবিত চুক্তি অনুযায়ী মালবাহী কার্গো শনাক্ত করতে ট্র্যাকিং সিস্টেম ব্যবহার করা হবে।
চুক্তির বিভিন্ন শর্তাবলির বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পণ্য সামগ্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে শুধু বাংলাদেশের ভেইকল ব্যবহার করা হবে। বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নিয়মাবলি (গ্যাট) এবং দেশের নিয়ম মেনে চলতে হবে, শুল্ক বিভাগ ডিউটিজ অ্যান্ড ট্যাক্সেস সমপরিমান বন্ড গ্রহণ করবে। বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে মালামাল পরিবহনের জন্য গ্যাট প্রিন্সিপাল অনুসারে শুল্ক/কর ব্যতিত চার্জ-ফি ও পরিবহন খরচ আদায় করা হবে। এছাড়া বাংলাদেশের স্থল বন্দর ব্যবহার করায় স্থল বন্দরের দক্ষতা বাড়াতে মাশুল আদায় করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের সক্ষমতার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। প্রস্তবিত চুক্তিতে কয়েকটি রুটের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে আগরতলা ভায়া আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে ডাউকি ভায়া তামাবিল (সিলেট), চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে সুতারকান্দি ভায়া শেওলা (সিলেট) চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে বিবিরবাজার ভায়া শ্রীমন্তপুর (কুমিল্ল)। চুক্তি হলেচট্টগ্রাম বন্দর থেকে এই পথে যাবে ভারতের পণ্য চুক্তি হলেচট্টগ্রাম বন্দর থেকে এই পথে যাবে ভারতের পণ্য চুক্তিটি পাঁচ বছরের জন্য হবে এবং যে কোনো পক্ষ প্রয়োজনে যে কোনো সময় চুক্তি স্থগিত রাখতে পারবেন। চুক্তিটি ৫ বছরের জন্য সম্পাদিত হবে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে আরও ৫ বছর বলবৎ থাকবে। তবে ৬ মাসের নোটিসে যে কোনো পক্ষ চুক্তিটি বাতিল করতে পারবে। জরুরি প্রয়োজনে বা রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে যে কোনো পক্ষ চুক্তির বাস্তবায়ন সাময়িকভাবে স্থগিত করতে পারবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, চুক্তি মোতাবেক নৌ সচিবদের নেতৃত্বে গঠিত ইন্টার গভর্নমেন্ট কমিটির মাধ্যমে উদ্ভূত সমস্যার নিরসন করা হবে এবং উভয় দেশের কর্মকর্তা সমন্বয়ে কাস্টমস অ্যান্ড পোর্ট সাব গ্রুপ গঠন করা হবে।



 

Show all comments
  • Adel ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১:৫৫ এএম says : 0
    Too much hospitality to a giant neighbor by a tiny host that has hardly enough space to serve herself satisfactorily. Allowing her to use roads and highways, ports, etc is beyond one's rational thinking.
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৯:৫৩ এএম says : 0
    চট্রগ্রাম ও মঙ্গলা বন্দর দিয়ে পণ্য ভারতে যাবে, কিন্তু শুল্ক বা কর ব্যতিত মাশুল ও পরিবহন খরচ আদায় করা হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এটা কি বাংলাদেশের জন্যে মঙ্গলকর কিনা সেটা ভাববার বিষয় নয় কি?? ভারত বার বার আমাদের কাছে থেকে তাদের সুযোগ সুবিধা নিচ্ছে কিন্তু বিনিময়ে আমাদেরকে কি দিচ্ছে সেটা দেখার বিষয় নয় কি?? শুল্ক ব্যতিত কিভাবে বন্দর থেকে মাল খালাস করা হবে এটা একটা বিরাট প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বন্দরের যতযাবতীয় খরচ আসে এই শুল্ক আদায়ের আয় থেকে, এখন আমাদেরকে বিনা মুজুরীতে বন্দর সেবা দিতে হবে এটা কোন ধরনের চুক্তি বুঝাগেল না। তারপর আবার ভারত বাংলাদেশকে ভূটান, নেপাল, মালদ্বীপে তাদের (ভারতের) ভূমি ব্যবহার করে আমদেরকে মালামাল পরিবহন করতে দিচ্ছেনা। আবার পানির ন্যায্য হিস্যা দিচ্ছেনা তারপর আমরা কিভাবে আমাদের শ্রমের কোন মূল্য না নিয়েই ভারতকে শ্রম দিব? আবার বন্দর ব্যাবহার করতে দিব এটা কোন ধরনের চুক্তি এটাও একটা বিরাট প্রশ্ন?? আল্লাহ্‌ আমাদেরকে নিজের ভালমন্দ বুঝার ক্ষমতা দান করুন। আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ