পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পুলিশের দাবি সবাই শিবির কর্মী
একজনের ৪ অন্যরা ২ দিনের রিমান্ডে
পরিবার কী দাবি করল তা জানার বিষয় না : ডিসি মিডিয়া
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে থাকা ১২ শিক্ষার্থীকে ৫দিন পর গতকাল সোমবার অবশেষে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় দায়ের করা দুটি মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়। গতকাল বিকেলে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, গত রোববার ১২ জন শিবির কর্মীকে (সবাই শিক্ষার্থী) গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে তারেক আজিজকে আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারায় এবং বাকি ১১জনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাজে বাধা, নিরাপদ সড়কের আন্দোলন চলাকালে গুজব সৃষ্টি ও হামলার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের গতকাল আদালতে হাজির করে পুলিশের পক্ষ থেকে রিমান্ডের আবেদন করা হলে তারেক আজিজকে ৪দিন ও বাকি ১১জন শিক্ষার্থীদের ২দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। অন্যদিকে ১২ শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ থেকে গত রোববার ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করা হয়, ডিবি পরিচয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর তাদের তুলে নেয়া হয়। এর পর থেকে তারা নিখোঁজ ছিলেন। শিক্ষার্থীরা কোনো অপরাধ করে থাকলে তাদের দ্রুত আদালতে পাঠানোও দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। তারা সবাই টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটি, তিতুমীর কলেজ, সরকারি সাদাত কলেজ, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী।
উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান আরো জানান, গ্রেফতারকৃতরা হলেন- তারেক আজিজ (১৯), মো. তারেক (১৮), জাহাঙ্গীর আলম (২২), মো. মোজাহিদুল ইসলাম (২১), মো. আল আমীন (১৯), মো. জহিরুল ইসলাম (১৯), মো. বোরহান উদ্দিন (১৮), ইফতেখার আলম (২১), মো. মেহেদী হাসান রাজিব (১৯), মো. মাহফুজ (১৯), মো. সাইফুল্লাহ (২৪) ও মো. রায়হানুল আবেদিন (২২)। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন স্কুল কলেজের মনোগ্রামসহ ১২ সেট ইউনিফর্ম, ১৩টি ফিতাসহ আইডি কার্ড (গ্রেফতার ছাত্ররা কেউই ওইসব স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী নয়)), হ্যান্ডমাইক, ম্যাগনিফাইয়িং গ্লাস, হাতুড়ি, স্ক্রু ড্রাইভার, তিনটি ল্যাপটপ, ইসলামি ছাত্র শিবিরের কর্ম পদ্ধতির বিভিন্ন ফর্ম, শিবিরের কিশোর কণ্ঠ ম্যাগাজিনসহ বিভিন্ন ইসলামী বই, বিভিন্ন কার্যক্রমের বিষয়ে লেখা ডায়েরি ও ফেসবুকে পোস্ট করা বিভিন্ন ভিডিওসহ ছবি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে মাসুদুর রহমান বলেন, তারা গত ২৯ আগস্ট শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ও নিরাপদ সড়কের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত বিভিন্ন উসকানিমূলক লেখা/ পোস্ট/ফটো/ভিডিও’র মাধ্যমে গুজব ছড়ায়। তিনি বলেন, গত ৬ আগস্ট বেলা পৌনে ১২টার দিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যলয়ের বহিরাগত ছাত্ররা ৪০০ থেকে ৫০০জন একত্রিত হয়ে আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সরকারবিরোধী বিভিন্ন উত্তেজনাকর স্লোগান দিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা রাস্তা বন্ধ করে ও সরকারবিরোধী বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকে। উশৃঙ্খল ছাত্ররা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে।
তিনি আরো বলেন, ছাত্রদের ইট পাটকেলের আঘাতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার পিআই আবু হাজ্জাজ, এস আই ইমাম হোসেন, এএসআই আজাদ, এএসআই ইব্রাহিমসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। ছাত্র আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করা ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম মূল হোতা তারেক আজিজ ফেসবুক টাইম লাইনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালিত করতো।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি আরো বলেন, গ্রেফতার হওয়া সবাই শিবিরের রাজনীতির সাথে যুক্ত। তাদের কেউ সদস্য আবার কেউ ওয়ার্ড সভাপতি রয়েছে।
তবে পরিবার দাবি করেছে তাদের ৫ দিন আগে তুলে আনা হয়েছে। সে ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিসি মাসুদুর রহমান বলেন, পরিবার কী দাবি করল তা জানার বিষয় না। পুলিশ তাদের গত রোববার রাতে গ্রেফতার করেছে। তারা পালিয়েও থাকতে পারে। আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই এসব শিক্ষার্থী অনুপ্রবেশ করে ভিন্ন স্বার্থ হাসিল করতে চেয়েছিল।
তিনি বলেন, ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে ১২ জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ড পেলে জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত তথ্য বেরিয়ে আসবে। আমরা অনেককেই ধরেছিলাম। জিজ্ঞাসাবাদ করে ১২ জনকে রেখে বাকিদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
হেলমেট পড়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারী কারো খোঁজ মিলেছে কি-না জানতে চাইলে ডিসি বলেন, তাদেরও চিহ্নিত করার কাজ চলছে। এদের কাছ থেকেও হ্যান্ড মাইক, হাতুড়ি ও ছুরি পাওয়া গেছে। হেলমেট বাহিনীকেও পাওয়া যাবে
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।